
নগরীর ‘ক’ ক্লাস্টারভুক্ত তিন সরকারি স্কুলের ভর্তি পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন ও ফল প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম নগরীর সরকারি ৯ স্কুলের তিনটিতে (কলেজিয়েট, বাকলিয়া ও খাস্তগীর) অনুষ্ঠিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে এ অনিয়ম হয়েছে।
অভিযোগ আছে, ‘ক’ ক্লাস্টারভুক্ত নগরীর ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে তুলনামূলক কম মেধাবীরা উত্তীর্ণ হয়েছে। অনেক মেধাবী উত্তীর্ণ তালিকায় আসেনি। অভিভাবকদের কেউ কেউ ফল চ্যালেঞ্জ করে আবেদন করার জন্য জেলা প্রশাসনে যোগাযোগ করলেও সীমাবদ্ধতার ‘অজুহাতে’ সেই সুযোগ দেয়া হয়নি। তা ছাড়া শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজিয়েট স্কুলের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল সরকারিভাবে ঘোষণার আগেই (জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরের আগেই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে খাতা মূল্যায়ন ও ফল প্রকাশে অনিয়মের অভিযোগটি আরও বদ্ধমূল হয়।
এএম মহিউদ্দিন নামে এক অভিভাবক অভিযোগ করেন, তার মেয়ে খাস্তগীর স্কুলে ভর্তির জন্য পরীক্ষা দিয়েছিল। ৮৫ নম্বর পেয়েছে এমন শিক্ষার্থী মেধা তালিকায় ২-৩ নম্বরে চলে এসেছে। তার মেয়ে কোনোভাবে ৯৫ নম্বর এর কম পাওয়ার কথা নয়। অথচ তার মেয়ের নাম আসেনি। তিনি অভিযোগ করেছেন, নানাভাবে তারা জানতে পেরেছেন, দ্রুত ফল প্রকাশ করতে গিয়ে খাতা মূল্যায়ন কিংবা ফলাফলের যোগ-বিয়োগের ক্ষেত্রে ভুল হয়েছে তেমনি কোনো কোনো উত্তরপত্র হারিয়ে গেছে।
এদের ক্ষেত্রে মনগড়া নম্বর দেয়া হয়েছে। মূলত এ কারণেই হযবরল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। জেলা প্রশাসক স্বাক্ষর করার আগে কীভাবে ভর্তি পরীক্ষার ফল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ল সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। যারা চ্যালেঞ্জ করতে চায় তাদের উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হলে আসল সত্য বের হয়ে আসবে বলেও দাবি করেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষার ফল কারা কীভাবে ছড়াল সে বিষয়ে তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. হাবিবুর রহমান। তিনি আরও বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফল প্রকাশ হয়েছে বলে যে অভিযোগটি উঠেছে আমরা তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। এর সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন; কোনো ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই। এর সঙ্গে হয়তো স্কুলের শিক্ষক নয়তো কর্মচারীদের কেউ জড়িত থাকতে পারে।’
হাবিবুর রহমান আরও বলেন, প্রায় প্রতি বছরই ভর্তি পরীক্ষার পর অভিভাবকদের কেউ না কেউ পরীক্ষার ফল নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেন। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়নের কোনো সুযোগ নেই। এ কারণে তাদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা সম্ভব হয় না।