ইংরেজী ভার্সন পাঠ্যবইয়ে ভুলের কথা সর্বজনবিদিত। নিম্নমানের অনুবাদক, কম বাজেট ও তাড়াহুড়ো করার কারণে প্রতিবছরই পাঠ্যবইয়ের ইংরেজী ভার্সনে ভুল থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় জেএসসি পরীক্ষার ইংরেজী ভার্সনের প্রশ্নপত্রে অসংখ্য বানান ভুল এবং বাক্যগঠনে অসঙ্গতির প্রমাণ সামনে মিলেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা। শিক্ষাবিদরা বলছেন, ভুলে ভরা প্রশ্নপত্রের কোনও বৈধতা থাকে না।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সারাদেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে জেএসসি পরীক্ষার গার্হস্থ্য বিজ্ঞান বিষয়ের পরীক্ষা। সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হওয়া এ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে কমপক্ষে ১০টি বানান ভুল রয়েছে। তাছাড়া বেশ কয়েকটি বাক্যেও রয়েছে গঠনগত অসঙ্গতি।
বাক্য গঠনের এমন অসঙ্গতি আরও রয়েছে এই প্রশ্নপত্রেসৃজনশীল এ প্রশ্নপত্রের বহু নির্বচনী (মাল্টিপল চয়েজ) অংশের ১২ নম্বর প্রশ্নে ‘Overies’ বানানটি ভুল লেখা হয়েছে। এর শুদ্ধ বানান হবে ‘Ovaries’। আবার ঠিক এর পরের প্রশ্নেই নির্বচনী ‘deficit’ বানানটি ভুল করে লেখা হয়েছে ‘dificit’। ১৯ নম্বর প্রশ্নের ‘b’তে ‘Baking’-কে ভুল বানানে লেখা হয়েছে ‘Backing’। আবার ২৩ নম্বর প্রশ্নের ‘a’ অংশে ‘Salt’-এর ভুল বানান লেখা হয়েছে ‘Salf’। ২৭ নম্বর প্রশ্নে দু’টি ওষুধের নাম লেখা হয়েছে ভুল বানানে। প্রশ্নপত্রের বাকি অংশেও বাক্য গঠনসহ বিভিন্ন ধরনের ব্যকরণঘটিত ভুল রয়েছে।
এসব ভুল নজরে আসার পর শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষকরা বলছেন, প্রশ্নপত্রে এমন ভুল কোনোভাবেই কাম্য নয়। একের পর এক প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। এর ওপর প্রশ্নপত্রে এত ভুল থাকলে এই পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের কী লাভ হবে? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক বলেন, ‘এ বছরের জেএসসি পরীক্ষা নিয়ে খামখেয়ালি মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যারা ‘Baking’ আর ‘Backing’-এর পার্থক্য বোঝেন না, যারা প্রশ্নে ‘Salt’-এর মতো বহুল ব্যবহৃত একটি বানান ভুল রেখে দিয়েই ছাপিয়ে দেন; তারা শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাই করবে কিভাবে? এই প্রশ্ন প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে শনাক্ত করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এ বিষয়ে কোনও ধরনের ছাড় দেওয়ার অর্থই হলো শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যত নিয়ে খেলা।
‘Salt’-এর মতো সাধারণ ও বহৃল ব্যবহৃত বানানও ভুল এই প্রশ্নেভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার সমালোচনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নীলিমা আকতার। তিনি বলেন, ‘একটি ভালো প্রশ্নপত্রের সবচেয়ে বড় গুণ হলো ভ্যালিডিটি বা বৈধতা। অর্থাৎ প্রশ্নপত্রটি যেটি পরীক্ষা করার কথা, তা করতে পারছে কিনা। প্রশ্নপত্রেই এত ভুল থাকলে সেটার ভ্যালিডিটি থাকে না। এ প্রশ্নপত্রটিতে বানান, বাক্য গঠন ও ব্যাকরণগত অনেক ভুল আছে, যেটি বাক্যের অর্থ বোঝার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করেছে। শিক্ষার্থীরা নিশ্চিতভাবেই এই প্রশ্নে বিভ্রান্ত হয়েছে।’
ঢাবির এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত একটি পরীক্ষায় এ ধরনের ভুল একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। এর দায় প্রশ্ন মডারেটরদের ওপরই বর্তায়। এত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মডারেশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আরও অনেক যত্নশীল হওয়া উচিত ছিল।’
এদিকে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষার অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে কথা বলতে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে মোবাইল-ফোন” target=”_blank”>মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি।
আরো পড়ুন:
0 responses on "জেএসসির ইংরেজি ভার্সন প্রশ্নপত্রে অসংখ্য ভুল"