
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (রুয়েট) ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে সভাপতি পক্ষের ১১ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৩শে জানুয়ারি) রাত ১০টা থেকে বুধবার (২৪জানুয়ারি) বেলা ১টা পর্যন্ত দুই দফায় রুয়েটের হামিদ হলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। আধিপত্য বিস্তার ও র্যাগ দেয়াকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম রহমান নিবিড়ের অনুসারী আহত ১১ জনের মধ্যে ৮ জনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনজন মাথায় আঘাত পাওয়ায় অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুরুতর আহত আটজন হলেন, রুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রুপম ও বাপ্পী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদি মোহাম্মদ তানজীম, দপ্তর সম্পাদক সাব্বির, তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক রাহাত, সহ-সম্পাদক যাওয়াদ, সদস্য পিয়াল ও কর্মী জোহান। তাদের সবাইকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা সবাই হামিদ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
রুয়েট ছাত্রলীগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, রুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগ দিয়েছিলেন বিভাগের ১৪ সিরিজের শিক্ষার্থী ও রুয়েট ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক সাদি মোহাম্মদ তানজীম ও তার বন্ধুরা।
নবীন শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন ছিলেন রুয়েট ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও সিএসই বিভাগের ১৪ সিরিজের আরেক শিক্ষার্থী আবিদ হাসান মিতুলের ছোটভাই। এটি নিয়ে মঙ্গলবার রাতে সাদির সাথে কথা বলতে যায় আবিদ হাসানসহ ছাত্রলীগ নেতারা। এসময় হামিদ হলের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। পরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে মারধর শুরু হলে রুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি নিবিড় ও সাধারণ সম্পাদক তপু ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তবে নেতাকর্মীরা তাদের সামনেই রড, চাপাতি, রামদা, বাঁশ নিয়ে মারামারি করেন।
এসময় নেতাকর্মীদের মধ্যে তারা প্রাথমিক মীমাংসা করে দিলেও তারা হল থেকে বের হবার পর পুণরায় দ্বিতীয় দফা মারধর করেন তারা। এসময় গুরুতর আহত হন সভাপতির অনুসারীরা। রাত ১টা পর্যন্ত এ উত্তেজনা চলার পরে রুয়েট ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনেই র্যাগ দেয়াকে কেন্দ্র করে মারধরের ঘটনা ঘটেছে, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রুয়েট ছাত্রলীগ সভাপতি নাঈম রহমান নিবিড় বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদকের নেতাকর্মীরা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেছে। সম্পাদকের উপস্থিতিতে ও তার মদদেই এ ঘটনা ঘটেছে। আমরা ঠিক জানি না কি কারণে তারা হামলা করেছে। আহতরা সবাই চিকিৎসাধীন।’
সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মাহফুজুর রহমান তপু বলেন, ‘আসলে মারধর করা ও আহতদের অধিকাংশই ১৪ সিরিজের শিক্ষার্থী। তাদের নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি নিয়ে মারামারি করেছে। আমি ও সভাপতি ঘটনা শুনেই হলে গিয়েছিলাম। প্রাথমিক মীমাংসা করার পরও তারা আবার মারামারি করেছে।
নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মাহবুব আলম জানান, রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেছে। যে কোন ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে।
আরো পড়ুন: