একজন ই-শিখন এর স্টুডেন্ট হিসেবে ই-শিখনের সুনাম করবো এটা স্বাভাবিক! হয়তো আমার কথা গুলো সবাই গতানুগতিক হিসেবে নিবে! তবে সত্য কথা বলতে ই-শিখন এর মতো আরেকটি প্রতিষ্টান বাংলা ভাষাভাষীদের জন্য আছে বলে আমার মনে হয় না!

আমি ই-শিখনের আগে অন্য আরেকটা প্রতিষ্ঠানে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে একটা কোর্স করেছিলাম, তাই অন্যদের সাথে ই-শিখনের পার্থক্যটা খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি! আমি এখানে এসে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের নামে বদনাম করবো না! তবে দুই শ্রেণীর মানুষদেরকে আমি দুইটি উপদেশ দিতে পারি!

১)যারা অনলাইন থেকে ইনকাম করতে না পেরে অনলাইন ছেড়ে অফলাইনে চলে যাওয়ার চিন্তা করছেন, তারা শেষ চেষ্টাটি ইশিকনের মাধ্যমে করে দেখুন!

২)আর যারা অনলাইনে একদমই নতুন তাদেরকে আমি ই-শিখনে ভর্তি হওয়ার উপদেশ দিবো না, আপনারাও অন্য দুই একটি প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়ে আমার মত ধোকা খেয়ে শেষ পর্যায়ে ই-শিখনে আসুন! অন্যতায় ই-শিখনের গুরুত্ব কখনোই বুঝতে পারবেন না!

পৃথিবীতে কোন প্রতিষ্ঠানই ১০০% পারফেক্ট নয়! তবে ই-শিখনে যেই জিনিসটি সবার চেয়ে আলাদা সেটা হলো তাদের সাপোর্ট সিস্টেম!
-কেউ না পারলে Any Desk দিয়ে সফটওয়্যারটা পর্যন্ত ডাউনলোড করে দেওয়া হয়, না পারলে Zoom এর ইউজার নেইমটা পর্যন্ত চেইঞ্জ করে দেয়!
-নিয়মিত অ্যাসাইনমেন্ট দেখা হয়!
-অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের কল করে তদারকি করা হয়!
-নিয়মিত শিক্ষার্থীদের কল দিয়ে কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা তা দেখবাল করা হয়!

আমাদের ভিডিও এডিটিং কোর্সের মেন্টর “মুস্তাফিজুর রহমান স্যার” ওনার মত শিক্ষক আমি অতীতে আর কোথাও পেয়েছি বলে আমার মনে হয় না! স্যারের বুঝানোর ক্ষমতা এতটাই দারুণ, যে আমি প্রশংসা করলে হয়তো সেটাও কম হয়ে যাবে! মুস্তাফিজুর রহমান স্যার সবকিছু এতটাই বেসিক লেভেল থেকে বুঝায় যে, আজ পর্যন্ত কোন কিছু না বুঝে আমার দ্বিতীয়বার প্রশ্ন করার প্রয়োজন পড়ে নি!

আরেকটা কথা, স্যারের ধৈর্যের জন্য যদি কোন একটি বৃহৎ পুরস্কার দেওয়া হয়, হয়তো সেটিও কম হয়ে যাবে!
মাঝে মাঝে কিছু স্টুডেন্ট ক্লাসে এমন সব উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে, যা শুনে একজন স্টুডেন্ট হিসেবে আমার মাথা খারাপ হয়ে যায়, অথচ স্যার সামান্যতমও বিরক্ত বোধ না করে, উল্টো তাদের সকল প্রশ্নের এমন চমৎকার ভাবে উত্তরগুলো দিয়ে থাকেন এবং সমস্যাগুলোর সমাধান করে দেন যা আমার কাছে যাস্ট অ্যামাজিং লাগে!

আমাদের মেন্টর মুস্তাফিজুর রহমান স্যার এতটাই হেল্পফুল যে, সামান্য একটা জিনিস দেখিয়ে দেওয়ার পরেও না পারলেও তিনি সেটা Any Desk এর মাধ্যমে তাদের কম্পিউটারে দেখিয়ে দেন! আমাকেও দিয়েছেন!

ই-শিখনের একটি মারাত্মক খারাপ দিকও আছে! খারাপ কিনা জানি না, তবে আমার কাছে খুবই খারাপ লাগে সেটি হলো তাদের “ওয়েবসাইট।”
একটা এতোবড় প্রতিষ্টানের ওয়েবসাইটের ডিজাইন এতোটাই অসুন্দর যা কখনোই কাম্য নয়! সত্যি কথা বলতে RJ Kebria ভাইয়ার একটা পডকাস্ট থেকে ইশিখনের নাম প্রথম শুনে এখানে ভর্তি হতে এসে ছিলাম! কিন্তু ওয়েবসাইট দেখে ভর্তি হয়নি ভেবেছিলাম “”যাদের ওয়েবসাইটটাই এতো অগুছালো, তারা আর কিই বা এমন শিখাবে?”
কিন্তু রাসুল(সঃ) বলেছেনঃ “ধারণা অধিকতর মিথ্যা” হাদিসটার প্রমাণ পেয়েছি ই-শিখনে ভর্তি হওয়ার পর!

এটি ছাড়াও ই-শিখন বাংলাদেশে অবস্থানরতদের Bank payment গ্রহন করে না, আমার কাছে মনে হয় এটিও একটি খারাপ দিক। এছাড়াও ই-শিখনে bkash payment করলে কোর্স মূল্যের বাইরে এক্সট্রা ক্যাশ আউট চার্জ দিতে হয়, ক্যাশ আউট চার্জ দিতে হলে আমি ক্যাশ আউট করবো, কিন্তু পেমেন্ট করে ক্যাশ আউট চার্জ দেওয়াটা আমার কাছে অযৌক্তিক মনে হয়। তবে ই-শিখন অনলাইন কোর্স গুলোতে সারা বছর অনেক বেশি ছাড় দিয়ে থাকে, যা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে।

-এতো লম্বা সময় নিয়ে আমার রিভিউ পড়ার জন্য ধন্যবাদ!