উচ্চ মাধ্যমিক এইচএসসি বাংলা ১ম গদ্য সাহিত্যে খেলা
প্রমথ চৌধুরী
প্রথম প্রকাশ- সবুজপত্র, শ্রাবণ সংখ্যা, ১৩২২ বঙ্গাব্দ (১৯১৫ খ্রিস্টাব্দ)
পরে প্রবন্ধসংগ্রহ (১৯৫২)-এ সংকলিত
‘লেখক এবং পাঠকদের মধ্যে এখন স্কুলমাস্টার দণ্ডায়মান।
‘সাহিত্যে মানবাত্মা খেলা করে এবং সেই খেলার আনন্দ উপভোগ করে।
‘বৈশ্য লেখকের পক্ষেই শূদ্র পাঠকের মনোরঞ্জন করা সঙ্গত।
‘মন উঁচুতেও উঠতে চায়, নীচুতেও নামতে চায়।
‘তবে বস্তু যে কি, তার জ্ঞান অনুভূতিসাপেক্ষ, তর্কসাপেক্ষ নয়।
‘হীরক ও কাচ যমজ হলেও সহোদর নয়।
‘বেদীতে না বসলে আমাদের উপদেশ কেউ মানে না।
‘যে খেলার ভিতর আনন্দ নেই কিন্তু উপরি পাওনার আশা আছে, তার নাম খেলা নয়, জুয়াখেলা।
‘কেননা তারাই হচ্ছেন যথার্থ সামাজিক জীব, বাদবাকি সকলে কেবলমাত্র পারিবারিক
যিনি গড়তে জানেন, তিনি শিবও গড়তে পারেন, বাঁদরও গড়তে পারেন।
কাব্যের ঝুমঝুমি, বিজ্ঞানের চুষিকাঠি, দর্শনের বেলুন, রাজনীতির রাঙালাঠি, ইতিহাসের ন্যাকড়ার পুতুল,নীতির টিনের ভেঁপু এবং ধর্মের জয়ঢাক- এইসব জিনিসে সাহিত্যের বাজার ছেয়ে গেছে।
এ পৃথিবীতে একমাত্র খেলার ময়দানেই ব্রাহ্মণ-শূদ্রের ভেদ নেই।
স্বর্গ হতে দেবতার ভূতলে অবতীর্ণ হওয়াতে কেকউ আপত্তি করেন না, কিন্তু মর্ত্যবাসীর পক্ষে রসাতলে গমন করাটা বিশেষ নিন্দনীয়।
সাহিত্যের উদ্দেশ্য সকলকে আনন্দ দেওয়া- কারও মনোরঞ্জন করা নয়।
কাব্যজগতে যার নাম আনন্দ, তারই নাম বেদনা।
শব্দার্থ ও
টীকা :
রোদ্যাঁ- ফরাসি ভাস্কর। পুরো নাম- ফ্র্যাঁসোয়া অগুস্ত রোদ্যাঁ। জীবনকাল- ১৮৪০-১৯১৭। শ্রেষ্ঠ কীর্তি- ‘নরকের দুয়ার’ ও ‘বাঘার্স অব ক্যালে’; এছাড়া- ‘চিন্তাবিদ’, ‘আদম’, ‘ইভ’
শিব- মহাদেব, মঙ্গলকারী দেবতা
কলারাজ্য- শিল্পকলার পরিমণ্ডল
মর্তবাসী- মাটির পৃথিবীর অধিবাসী
রসাতল- পুরাণে বর্ণিত ষষ্ঠ পাতাল, অধঃপাত, ধ্বংস
গতায়াত- যাতায়াত
প্রবৃত্তি- অভিরুচি, ইচ্ছা, ঝোঁক, আসক্তি
অগত্যা- অন্য উপায় না থাকায়
গীতিকবিতা- আত্মভাবপ্রধান কবিতা, লিরিক, Lyric
নিষ্কাম কর্ম- ফললাভের কামনা করা হয়নি এমন কাজ
মোক্ষলাভ- ভববন্ধন থেকে মুক্তি লাভ, আত্মার মুক্তি অর্জন
জীবাত্মা- প্রাণীর দেহে অবস্থানকারী আত্মা
পরমাত্মা- পরম ব্রহ্মা, ঈশ্বর, সৃষ্টিকর্তা
খেলো করা- গুরুত্বহীন বা অসার করা
বৈশ্য- প্রাচীন আর্যসমাজের চতুর্বর্ণের তৃতীয় স্তর; যারা কৃষিকাজ বা ব্যবসা-বাণিজ্য করত
শূদ্র- প্রাচীন আর্যসমাজের নিম্নতম শ্রেণী, অনার্য
গলাধঃকরণ- ভক্ষণ
বাল্মীকি- বিখ্যাত প্রাচীন ভারতীয় কবি, আদি কবি হিসেবে পরিচিত। তিনি ‘রামায়ণ’ প্রণেতা। যৌবনে তাঁর নাম ছিল রত্নাকর, পেশা ছিল দস্যুতা। জনশ্রুতি আছে, তিনি ব্রহ্মার উপদেশে দস্যুবৃত্তি ছেড়ে তপস্যামগ্ন হন, পরে নারদের উপদেশে রামায়ণ রচনা করেন
কুশীলব- নট, অভিনেসতা
কৌপীন- ল্যাঙট
পেলা- পাঁচালি, কীর্তন, ইত্যাদি গানের আসরে গায়ক-গায়িকাকে শ্রোতারা যে পারিশ্রমিক দেয়
যোগবশিষ্ঠ রামায়ণ- রামচন্দ্রের প্রতি বশিষ্ঠ মুনির উপদেশ সংবলিত সংস্কৃত রামায়ণ
নিগূঢ়- দুর্জ্ঞেয়, গভীর ও প্রচ্ছন্ন
তত্ত্ব- মতবাদ, Theory
শবচ্ছেদ- শবদেহ কেটে পরীক্ষা করা, মড়া কাটা
লেখক পরিচিতি
ছদ্মনাম : বীরবল
জন্ম : ১৮৬৮, যশোর
মৃত্যু : ১৯৪৬
চলিত গদ্যরীতির প্রবর্তক
‘সবুজপত্র’-এর সম্পাদক (সবুজপত্র বাংলা সাহিত্যে চলিত ভাষারীতির প্রথম মুখপত্র, বাংলা চলিত গদ্য প্রবর্তনে এই পত্রিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।) (প্রথম প্রকাশ- ১৯১৪)
গ্রন্থ- চার ইয়ারী কথা, বীরবলের হালখাতা, রায়তের কথা, তেল-নুন-লকড়ি, সনেট পঞ্চাশৎ
ভাষাভিত্তিক/ব্যাকরণ অংশ
লিঙ্ক- বাগধারা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্ন
- ‘যে খেলার ভিতর আনন্দ নেই কিন্তু উপরি পাওনার আশা আছে, তার নাম খেলা নয়, ____।’ (ঘ-২০১০-১১)
- সাহিত্যে খেলা প্রবন্ধ অনুযায়ী কে শিক্ষক গোত্রভুক্ত? (ঘ-২০১০-১১)
- ‘রাজনীতির রাঙ্গালাঠি’ কোন রচনার প্রসঙ্গ? (ঘ-২০০৮-০৯)
- ‘লেখক এবং পাঠকদের মধ্যে এখন স্কুলমাস্টার দণ্ডায়মান।’- এই উক্তি কে করেছেন? (ঘ-২০০০-০১)
- ‘সাহিত্যে মানবাত্মা খেলা করে এবং সেই খেলার আনন্দ উপভোগ করে।’- এই উক্তি কোন লেখকের? (ঘ-২০০১-০২)
- ‘বৈশ্য লেখকের পক্ষেই শূদ্র পাঠকের মনোরঞ্জন করা সঙ্গত।’ এই বাক্যটি কোন লেখায় আছে?(ঘ-২০০২-০৩)
- ‘মন উঁচুতেও উঠতে চায়, নীচুতেও নামতে চায়।’- এই বাক্যটি কোন লেখকের লেখায় আছে? ? (ঘ-২০০২-০৩)
- ‘কুশীলব’ প্রসঙ্গ কোন রচনার অন্তর্গত (ঘ-২০০৩-০৪)
- ‘তবে বস্তু যে কি, তার জ্ঞান অনুভূতিসাপেক্ষ, তর্কসাপেক্ষ নয়।’- বাক্যটির রচয়িতা (ঘ-২০০৪-০৫)
- ‘হীরক ও কাচ যমজ হলেও সহোদর নয়।’ উদ্ধৃত অংশটি কোন রচনার অন্তর্গত? (ক-২০০৭-০৮)
- নিচের কোনটি প্রমথ চৌধুরী রচিত গ্রন্থ? (ক-২০০৭-০৮)
- ‘বেদীতে না বসলে আমাদের উপদেশ কেউ মানে না।’- উক্তিটি কোন রচনার অন্তর্গত? (ক-২০০৮-০৯)
- রোদ্যাঁ কে ছিলেন? (ক-২০০৬-০৭)
- ‘কেননা তারাই হচ্ছেন যথার্থ সামাজিক জীব, বাদবাকি সকলে কেবলমাত্র পারিবারিক’- বাক্যটি যে রচনার তার নাম- (ক-২০০৬-০৭)
- ‘লেখক ও পাঠকের মধ্যে এখন স্কুল মাস্টার দণ্ডায়মান’- এ উক্তিটি করেছেন: (গ-২০১০-১১)
- ‘কারও মনোরঞ্জন করা সাহিত্যের কাজ নয়।’- এ মন্তব্য করেছেন? (গ-২০১০-১১)
- বাংলা সাহিত্যে চলিত গদ্য রীতির প্রবর্তক: (গ-২০১০-১১)
- প্রমথ চৌধুরী কোন সাহিত্যের আদর্শে উজ্জীবিত? (গ-২০০৯-১০)
- ‘কাব্যজগতে যার নাম আনন্দ, তারই নাম বেদনা’- এ অংশটুকু কোন প্রবন্ধ থেকে নেয়া (গ-২০০৮-০৯)
- ‘অনেকের পক্ষে নিজের আয়ত্তের বহির্ভূত উচ্চস্থানে ওঠবার চেষ্টাটাই মহাপতনের কারণ হয়।’- এ বাক্যটি যে প্রবন্ধ থেকে নেয়া হয়েছে তা’হল: (গ-২০০৭-০৮)
- প্রমথ চৌধুরীর পৈত্রিক নিবাস যে জেলায় তার নাম: (গ-২০০৭-০৮)
- প্রমথ চৌধুরীর ‘সাহিত্যে খেলা’ প্রবন্ধটি সর্বপ্রথম যে পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তার নাম: (গ-২০০৬-০৭)
- ‘ভাষা মানুষের মুখ থেকে কলমের মুখে আসে, উল্টোটা করতে গেলে মুখে শুধু কালিই পড়ে’- এ উক্তিটি করেছেন? (গ-২০০৪-০৫)
- ‘বীরবল’ এ ছদ্মনামে লিখতেন- (গ-২০০৩-০৪)
0 responses on "উচ্চ মাধ্যমিক এইচএসসি বাংলা ১ম গদ্য সাহিত্যে খেলা"