ইপিজেড হলো-রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা

EPZ এর পূর্ণরূপ Export Processing Zone

বাংলাদেশের প্রথম ইপিজেড(EPZ)  স্থাপিত হয় চট্টগ্রাম(1983 সালে)

বাংলাদেশে বর্তমানে ইপিজেড এলাকা  ৮টা

বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ রপ্তানী প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল -চট্টগ্রাম

বাংলাদেশের অষ্টম ই.পি.জেড অবস্থিত কর্ণফুলী

বাংলাদেশের  রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কে (ইপিজেড) কৃষিভিত্তিক হিসেবে গণ্য করা হয় -উত্তরা

বৈদেশিক বাণিজ্য:

বৈদেশিক বাণিজ্য  পুঁজি জাতীয় পণ্য, শিল্প কারখানার জন্য কাঁচামাল, জ্বালানি সামগ্রী ও নানা ধরনের ভোগ্যপণ্য আমদানির ওপর ব্যাপক ও ক্রমবর্ধমান নির্ভরশীলতার কারণে বৈদেশিক বাণিজ্য খাতে ঘাটতি বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি স্থায়ী বৈশিষ্ট্যে পরিণত হয়েছে। অষ্টাদশ শতকের গোড়ার দিক থেকে বাংলা একটি রপ্তানিকারক এলাকায় রূপান্তরিত হয়েছিল এবং ঐতিহাসিকভাবে এই অঞ্চলটি দীর্ঘদিন বৈদেশিক বাণিজ্য খাতে উদ্বৃত্ত ছিল। রেশম, সুতিবস্ত্র এবং নানা ধরনের খাদ্যপণ্যের সস্তামূল্যের কারণে এশিয়া ও অন্যান্য মহাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা বাংলায় আসা শুরু করে। সপ্তদশ শতকেই ব্রিটেন, হল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক ও আরও অনেক দেশের ব্যবসায়ীরা বাংলায় কুঠি প্রতিষ্ঠা করে। সে সময় তারা মূলত সোনা ও রুপার বিনিময়ে বাংলার বিভিন্ন পণ্য কিনে নিয়ে বিদেশে রপ্তানি করত। ১৬০০ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় তার অফিস প্রতিষ্ঠা করে এবং ১৬০৮ সালে সুরাটে তার প্রথম বাণিজ্য পোত স্থাপন করে। পর্তুগিজদের দৌরাত্ম্যের কারণে ব্রিটিশ বণিকরা ভারত থেকে সমুদ্রপথে রপ্তানি সম্প্রসারণে নানা রকম বাধা-বিপত্তিতে পড়ে। সম্রাট শাহজাহানের নির্দেশে সুবাদার কাশিম খান ১৬৩২ সালে হুগলি থেকে পর্তুগিজদের বিতাড়ন করেন। সুবাহদার শাহ সুজার আমল (১৬৫১) থেকে বাংলায় ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ বণিকরা কর অব্যাহতি ও অন্যান্য সুবিধা ভোগ করতে থাকে, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে তারা শুল্কমুক্ত বাণিজ্যের অধিকার পায় ১৭১৭ সালে, সম্রাট ফররুখশিয়ারের একটি বিশেষ ফরমানের মাধ্যমে। ইংরেজদের একাধিপত্য থাকলেও বাংলায় ফরাসি এবং ওলন্দাজ বণিকদের ব্যবসায় অব্যাহত ছিল। ইউরোপীয় কোম্পানিসমূহ বাংলা থেকে যেসব পণ্য রপ্তানি করত সেগুলির তালিকায় মূলত ছিল সিল্ক, সুতিবস্ত্র, সোরা এবং আফিম। অপেক্ষাকৃত কম পরিমাণে রপ্তানি হতো চিনি, চাল, গম, ঘি, সরিষার তেল, মোম, সোহাগা, লাক্ষা, কড়ি ও চটের বস্তা। তবে ইউরোপীয়রা বাংলা থেকে পণ্য কিনে শুধু ইউরোপেই রপ্তানি করত না, এসব পণ্যের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ মধ্যপ্রাচ্যেও যেত। বিদেশি বণিকদের সঙ্গে কারবারের সূত্র ধরে ক্রমশ একটি দেশীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী গড়ে ওঠে এবং তারাও বিদেশে পণ্য রপ্তানি শুরু করে। অনেকে নিজেরাই মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার নানা দেশে গিয়ে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে।

রপ্তানিমুখী বৈদেশিক বাণিজ্য বাংলার অর্থনীতিতে স্থানীয় বাজার সৃষ্টি বা রপ্তানি পণ্যের বর্ধিত চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে উৎপাদনের উন্নততর ভিত্তিগঠন কোন অর্থেই তেমন একটা প্রভাব ফেলে নি। অথচ এ সময়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে স্থানীয় বাজারে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে, উন্নয়ন কর্মকান্ডের জন্য নানাবিধ সামগ্রীর চাহিদা বেড়েছে। সে তুলনায় স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয়টি তেমন গুরুত্ব পায় নি, বৃদ্ধি পেয়েছে বাংলার আমদানি চাহিদা। ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লব এবং বিশ্বের অন্যান্য এলাকায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে বাংলা ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক বাজার হারাতে থাকে এবং একই সঙ্গে বিদেশি পণ্য আমদানির ওপর অধিকতর নির্ভরশীল হতে থাকে। এই প্রক্রিয়া ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের শেষ অবধি অব্যাহত থাকে এবং এর সব কুফল নিয়েই পূর্ব পাকিস্তান সৃষ্টি হয়। ১৯৪৭-এর পর পাকিস্তান সরকার যে বাণিজ্য নীতি পরিচালনা করে তার মূল প্রতিপাদ্য ছিল পূর্ব পাকিস্তান থেকে কাঁচামাল ও কৃষিপণ্য জাতীয় সকল প্রাথমিক পণ্য রপ্তানি করা। পাকিস্তান সরকারও পূর্ব পাকিস্তানে স্থানীয় শিল্পভিত্তি গড়ে তোলার দিকে তেমন নজর দেয় নি।

বাংলাদেশের মোট জাতীয় আয়ে বৈদেশিক বাণিজ্য খাতের অংশ সর্বদাই খুব কম ছিল। মুক্তিযুদ্ধের অব্যবহিত পূর্বে, ১৯৬১-৭০ সালে পূর্ব পাকিস্তান মোট ৩৫ কোটি ডলার মূল্যের রপ্তানি করে এবং ঐ বছর তার আমদানির পরিমাণ ছিল ৩৮.১ কোটি ডলার। এই হিসাবে পশ্চিম পাকিস্তানের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের বাণিজ্যের পরিমাণ ধরা হয় নি। মুক্তিযুদ্ধের বছরে ব্যাপক মাত্রায় ক্ষয়ক্ষতির কারণে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ঠিক পরবর্তী বছরগুলিতেই আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানি খাতে বাংলাদেশের ব্যয় দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ১৯৭৪-৭৫ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ৩৮.৩ কোটি ডলার আর আমদানি ব্যয় ছিল ১৪০.৩ কোটি ডলার। পরবর্তী ১৫ বছর ধরে বার্ষিক আমদানি ব্যয় বার্ষিক রপ্তানি আয়ের মোটামুটি তিনগুণ পরিমাণ বহাল ছিল এবং এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ অব্যাহতভাবে বর্ধিত পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি বহন করতে থাকে। ১৯৭২-৭৩ সালে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৩২৫ কোটি টাকা, যেটি ১৯৯১-৯২ এবং ১৯৯৬-৯৭ সালে দাঁড়ায় যথাক্রমে ৫,১৫৬ কোটি এবং ১১,৬০৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশ যেসব পণ্য রপ্তানি করে সেগুলির মধ্যে প্রধান হচ্ছে গার্মেন্টস সামগ্রী, হিমায়িত খাদ্য এবং চামড়া। আমদানি ব্যয়ের এক তৃতীয়াংশই যায় মূলধন জাতীয় পণ্য ক্রয়ে। অন্যান্য প্রধান আমদানি পণ্য হচ্ছে খাদ্যশস্য, ভোজ্যতেল, তুলা, পেট্রোলিয়াম, কাপড় এবং সিমেন্ট। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরবর্তী ত্রিশ বছরে আমদানি ও রপ্তানি উভয় খাতেই পণ্যকাঠামোতে বেশ পরিবর্তন এসেছে। তেমনি আমদানি ও রপ্তানির ভৌগোলিক বণ্টনও যথেষ্ট পাল্টে গেছে।

প্রতিটি লেকচারে নতুন নতুন লিখা যুক্ত হচ্ছে, তাই কাঙ্খিত কোন লিখা না পেলে দয়া করে কিছুদিন পর আবার ভিজিট করে দেখবেন।

লিখাতে কিংবা লেকচারে কোন ভুলত্রুটি থাকলে অথবা আপনার কাঙ্খিত লিখা খুঁজে না পেলেইশিখন.কম এর ফ্যানপেইজ অথবা নিচে কমেন্ট কর

মন্তব্য করুন

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline