সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা
নতুন ১ কোটি ৩২ লাখ কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নির্ধারণ করে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক (২০১৬-২০) পরিকল্পনা খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী (২০১৫-২০২০) পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করবে সরকার। ২০১৫ সাল সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার শেষ বছর। সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘাটতিসমূহ এবং ২০১৫ পরবর্তী উন্নয়ন অ্যাজেন্ডার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকার প্রণয়ন করতে যাচ্ছে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা; যার বাস্তবায়ন শুরু হবে জুলাই ২০১৫ হতে।
সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় যেটি থাকছেঃ কারিগরি ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ গঠন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও যোগাযোগ খাতে অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা দূরীকরণ; কৃষিভিত্তিক শিল্পসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের উন্নয়ন কৌশল নির্ধারণ, আইসিটি-স্বাস্থ্য-শিক্ষা সংক্রান্ত সেবা রপ্তানিতে সুনির্দিষ্ট নীতিকৌশল প্রণয়ন; সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগে গতিশীলতা আনয়ন; রপ্তানির গতিশীলতা এবং একইসঙ্গে পণ্যের বৈচিত্রায়ণ থাকবে।
অর্থমন্ত্রী জানান, এই সব লক্ষ্যে অর্জনে সঞ্চয়, বিনিয়োগ, সরকারি আর্ন ও ব্যয়, ঘাটতি অর্থায়ন, বৈদেশিক সহায়তা, সরকারি ও বেসরকারি খাতের ভূমিকা, প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো ও সংস্কারের ধরন বিষয়েও নতুন পরিকল্পনা দলিলে দিক-নির্দেশনা থাকবে।
পঞ্চশীল নীতি – ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের পঞ্চশীল নীতি হল ভারত উদ্ভাবিত একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া । ভারতের জোটনিরপেক্ষ বিদেশনীতি পঞ্চশীলের উপর স্থাপিত । পঞ্চশীল নীতি গুলো হল
(ক) প্রতিটি স্বাধীন দেশের ভৌগোলিক অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাশীল হওয়া,
(খ) দ্বন্দ্ব-সংঘাত পরিত্যাগ বা অনাক্রমণ নীতি গ্রহণ করা,
(গ) অন্য কোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকা,
(ঘ) পারস্পরিক সাম্য ও সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং
(ঙ) শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে সকল সমস্যার সমাধান করা ।
এই পঞ্চশীল নীতিই হল জোট নিরপেক্ষ নীতির মূলকথা । জওহরলাল নেহরু এবং চিনা প্রধানমন্ত্রী চৌ-এন-লাই ছিলেন এই নীতির অন্যতম প্রবক্তা । এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলি এবং ইউরোপীয় রাষ্ট্র যুগশ্লাভিয়াও নির্জোট আন্দোলনে সামিল হন । স্টালিনের সঙ্গে মতভেদের ফলে যুগশ্লাভিয়ার প্রেসিডেন্ট মার্শাল টিটো কমিউনিস্ট ব্লক থেকে বেরিয়ে এসে পশ্চিমি শক্তিগোষ্ঠীর সঙ্গে না গিয়ে জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে পরিচালিত জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনে যোগদান করেন । তাঁর আমন্ত্রণে জওহরলাল নেহরু ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের জুলাই মাসে যুগশ্লাভিয়া যান এবং ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে মার্শাল টিটো ভারত সফরে আসেন । ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের ২২ শে ডিসেম্বর প্রচারিত এক যৌথ ঘোষণায় উভয় নেতা জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের প্রতি নিজেদের গভীর আস্থার কথা বর্ণনা করেন । ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে ভারত-তিব্বত চুক্তির পর তিব্বত ভারতের পঞ্চশীল নীতি মেনে নিয়েছিল ।
—
আফ্রিকান ফ্রি ট্রেড এরিয়া(AFTA)
বর্তমান যুগ হচ্ছে বানিজ্যের যুগ।আজকের যুগে প্রায় সকল দেশ বা অন্চলই সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে স্বীয় আর্থ-সামাজিক ব্যাবস্থার উন্নয়নে প্রত্যাশি। বিশেষ করে বিভিন্ন আন্চলিক জোটসমূহ স্বীয় জোটের সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সার্বিক বানিজ্য সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অবাধ বানিজ্য চুক্তি, অগ্রাধিকার বানিজ্য চুক্তির ন্যায় চুক্তি সম্পাদনে অধিক হারে মনোনিবেশ করছে। আফ্রিকান ইউনিয়ন(AU) ভুক্ত কতিপয় দেশের মধ্যে অবাধ বানিজ্য সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে সম্পাদিত তেমনি একটি চুক্তি হচ্ছে African Free Trade Area বা AFTA. ১০ জুন, ২০১৫ আফ্রিকার ২৬টি দেশ অভিন্ন বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে সম্ভাবনাময় ও ঐতিহাসিক এ চুক্তি স্বাক্ষর করে। মিসরের লোহিত সাগরের তীরবর্তী অবকাশ নগর শারম আল শেখে স্বাক্ষরিত এ চুক্তিটি Tripartite Free Trade Area নামে পরিচিত। এ চুক্তির আওতায় আফ্রিকায় বর্তমানে তিনটি বানিজ্য ব্লক Southern African Development Community (SADC), East African Community (EAC), Common Market for Eastern and Southern Africa(COMES) একীভূত হয়। এই তিনটি সংস্থার নেতৃবৃন্দ ২০০৮ সালের ২২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত SADC-EAC-COMES সামিট বা Tripartite সামিটে AFTA চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ চুক্তি সম্পাদনের মধ্য দিয়ে এ অন্চলের মানুষের Cape to Cairo বানিজ্য অন্চল গঠনের একশত বছরের অধিক সময়ের স্বপ্নের বাস্তবায়ন ঘটলো।
————-
প্রখ্যাত ভাস্কর নভেরা আহমেদঃ
৬মে ২০১৫ একুশে পদকপ্রাপ্ত,কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অন্যতম রূপকার, দেশ-বিদেশে প্রখ্যাত ভাস্কর্যশিল্পী নভেরা আহমেদ ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে নিজ বাসায় মারা যান।তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। বার্ধ্যকজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন তিনি।
নভেরা আহমেদ দীর্ঘকাল ধরে প্যারিসেই বসবাস করছিলেন.১৯৯৭ সালে তাকে একুশে পদ কে ভূষিত করা হয়। বাংলাদেশে ভাস্কর্য শিল্পে অন্যতম অগ্রদূত নভেরার জন্ম ১৯৩০ সালে কলকাতায়।পৈতৃকনিবাস চট্রগ্রামের আসকারদিঘির উত্তর পাড়ে। নভেরার শৈশব কেটেছে কলকাতায়। তিনি কলকাতার লরেটা থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন।তার শিল্পকর্মের প্রধান দিক হচ্ছে নারীর প্রতিমূর্তি।নভেরার প্রথম একক ভাস্কর্য প্রদশনী হয়েছিল কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারে(বর্তমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার)।প্রায় তিন যুগ ধরে জাতীয় জাদুঘরের উদ্যোগে সে প্রদর্শনীর ৩০টির বেশি ভাস্কর্য সংগৃহীত হয় এবং ১৯৯৮ সালে একত্রে এক মাসেরো বেশি সময় ধরে প্রদর্শিত হয়।
জাতীয় শহীদ মিনারের প্রাথমিক নকশা প্রণয়নের অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন তিনি.১৯৬৭ সালে হামিদুর রহমান ও নভেরা আহমেদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাজ শুরু করেন।শহীদ মিনারের জন্য অনেক মডেল জমা পড়লেও হামিদ-নভেরা ডিজাইনটিই নির্বাচিত হয়।
—–
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক নামে ব্যাংকিং খাতে যোগ হচ্ছে আরেকটি নতুন ব্যাংক। তবে এ ব্যাংকটি বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে আসছে না। আসছে দারিদ্র্য বিমোচনকে প্রাধান্য দিয়ে। প্রাথমিকভাবে দেশের ৪৮৫ উপজেলায় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শাখা খোলা হবে। ব্যাংকের ৫০ ভাগ মালিকানা সরকারের অধীনে সংরক্ষিত থাকবে। তবে এ মালিকানার জন্য সরকার কোনো লভ্যাংশ বা ডিভিডেন্ড পাবে না।
মূলত বর্তমান সরকারে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরই পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকটি স্থায়ী রূপ পাবে। আগামী ২০১৬ সালের ৩০ জুন এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে। তবে এখন থেকে আগামী ২ বছর প্রকল্পের মেয়াদ এমনভাবে চলমান থাকবে যেন তা ব্যাংকের একটি চলমান কর্মসূচি। আর প্রকল্পটি বিলুপ্ত হওয়ার পর এর অধীন অনুমোদিত কিন্তু অনিষ্পন্ন কার্যক্রম এমনভাবে নিষ্পন্ন করা যাবে যেন তা ব্যাংকের কোনো কার্যক্রম। তাছাড়া একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পটি বিলুপ্ত হওয়ার পর সকল সম্পদ, ক্ষমতা, কর্তৃত্ব, সুবিধাদি এবং স্থাবর-অস্থাবর, নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ, কর্মসূচি এবং অন্য সকল প্রকার দাবি ও অধিকার ব্যাংকে হস্তান্তরিত হবে এবং ব্যাংক তার স্বত্ত্বাধিকারী হবে।
—————
বাংলাদেশের সমুদ্র জয়।
১মজয় : মিয়ানমারের সাথে
————- ২০১২ সালের ১৪ মার্চ জার্মানির সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের(ITLOS জার্মানির হামবুর্গ বার্গ) রায়ে মিয়ানমারের বিপক্ষে বাংলাদেশের বিরোধপূর্ণ ৮০ হাজার বর্গকিলোমিটারের মধ্যে ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ লাভ করে। উপকূল থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত সমুদ্র সম্পদের একচ্ছত্র সার্বভৌমত্বের অধিকারী হয় বাংলাদেশ। এছাড়াও মহীসোপানে ১ লাখ ১১হাজার বর্গকি.মি লাভ করে।
—— ২য় জয়: ভারতের সাথে ৭জুলাই, ২০১৪
————– ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণী মামলার রায়ে বাংলাদেশের বিপুল বিজয় হয়েছে। নেদারল্যান্ডসের হেগে সালিশি ট্রাইব্যুনালের রায়ে বিরোধপূর্ণ আনুমানিক ২৫,৬০২ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকার মধ্যে ১৯,৪৬৭ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা বাংলাদেশকে প্রদান করা হয়েছে।রায়ে ভারত পেয়েছে ৬ হাজার ১৩৫ বর্গ কিলোমিটার। বঙ্গোপসাগরে ভারতের দাবি করে আসা ১০টি ব্লকেও বাংলাদেশের মালিকানা দেয়া হয়। ———— বর্তমানে সম্মিলিত ভাবে বাংলাদেশের মোট সমুদ্রসীমা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার। রায়ের ফলে বাংলাদেশ এই এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি টেরিটোরিয়াল সমুদ্র,বঙ্গোপসাগরে ১২ নটিক্যাল মাইল রাষ্ট্রাধীন অঞ্চল , ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে অবস্থিত সব ধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে
————-
বাংলাদেশ নিম্ন আয়ের দেশ থেকে বেরিয়ে এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় উন্নীত হয়েছে। বুধবার বিশ্বব্যাংক প্রকাশিত এক তালিকায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন ১ হাজার ৩১৪ ডলার। যেসব দেশের মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৪৬ ডলার থেকে শুরু করে ৪ হাজার ১২৫ পর্যন্ত সেসব দেশকে নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় রাখা হয়।
আগে বাংলাদেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় ১ হাজার ৪৫ ডলার বা তার নিচে, তাদের বলা হয় নিম্ন আয়ের দেশ। বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর থেকে এ তালিকাতেই ছিল।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মাথাপিছু জাতীয় আয় ১ হাজার ৩১৪ ডলার।
বিশ্বব্যাংকের পদ্ধতি অনুযায়ী তা এখন ১ হাজার ৪৫ ডলারকে ছাড়িয়ে গেছে। এ কারণেই নতুন তালিকায় নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হতে পেরেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের সঙ্গে কেনিয়া, মিয়ানমার ও তাজিকিস্তানও নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে বলে বিশ্ব ব্যাংক জানিয়েছে।
0 responses on "৩৮ তম বিসিএস প্রস্তুতি টিকা"