এসএসসি (ssc) বা মাধ্যমিকির সকল অধ্যায় দেখতে এখানে যাও
শব্দার্থ ও টীকাঃ- অসুর নৃত্য – হিন্দু পুরাণ মতে অসুর হলো দেবতাদের শত্রু। দৈত্য বা দানব। অসুর নৃত্য হলো দানবদের নৃত্য। এখানে অসুর নৃত্য বলতে কবি বাংলাদেশে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দানবীয় ধ্বংসলীলাকে বুঝিয়েছেন; রক্তাক্ত হাত মুচড়ে দিয়েছি – পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালিদের রক্তে তাদের হাত রঞ্জিত করেছিল। প্রতিশোধ হিসেবে কবি সেই কলঙ্কিত হাতকে মুচড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন; চির কবিতার দেশ – বাংলা ও বাঙালি জাতি কবিতার জন্য বিখ্যাত।
২৫২ মাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য
এদেশের আছে কবিতার সমৃদ্ধ এক ঐতিহ্য। চির কবিতার দেশ বলতে কবি বাংলাদেশকে বুঝিয়েছেন; বাঙালি অনার্য জাতি – আর্যগণ ভারতে আসার বহু র্পূব থেকেই অনেক জাতির লোক এদেশে বসবাস করতেন। তারা অনার্য হিসেবে পরিচিত। আর্যগণ অনার্যদের ঘৃণার চোখে দেখতেন, অত্যাচার-অবিচার করতেন। কবি বাঙালিদেরও অনার্য হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু বাঙালিরা যে ভীতু নয়, দুর্বল বা কাপুরুষ নয়, বরং বীরের জাতি কবি তাদের এই ঐতিহাসিক ও সাহসী পরিচয়ের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন; অ আ ক খ বর্ণমালা পথে পথে- বাঙালির বীরত্ব আর শৌর্যের সুদীর্ঘ ইতিহাস আছে। সেই ইতিহাস এর তাৎর্পূযর্পূণ
অধ্যায় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন। ভাষার জন্য বাঙালির আত্মত্যাগের সুমহান প্রেরণার পথ ধরে বাঙালি জাতি এগিয়ে এসেছে মুক্তির পথে, স্বাধীনতার পথে। কবিতার এই অংশে কবি আমাদের ভাষা প্রেমের উদ্দীপনাময় চিত্রকল্প নির্মাণ করেছেন; ঘৃণার কার্তুজ – কার্তুজ শব্দটি এসেছে কার্টিজ শব্দ থেকে। এর অর্থ হলো বন্দুকের টোটা। ঘৃণার কার্তুজ বলতে কবি বাঙালি জাতির বিস্ফোরণ উন্মুখ ঘৃণার সম্মিলনকে বুঝিয়েছেন; নীলকমলেরা জাগে – নীলকমল অর্থ নীল রঙের পদ্ম। কিন্তু কবি এখানে রূপকথার রাজকুমারদের কথা বলেছেন। আর এই রাজকুমারগণ হলেন ৭১-এর বীর মুক্তিযুদ্ধা যারা দেশমাত…কার মুক্তির জন্য দীর্ঘদিন রাত জেগে কাটিয়েছেন; কবিতার হাতে রাইফেল- কথাটি রূপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ১৯৭১ সালে বাঙালি কবিরা কবিতাকেও যুদ্ধের অ ̄¿ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন।
অর্থাৎ কবিতার মাধ্যমেও প্রতিরোধ ও মুক্তির কথা বলা হয়েছে; এবার বাঘের থাবা- মুক্তিযোদ্ধাদের শক্তিশালী আক্রমন বোঝাতে প্রতীকটি ব্যবহার করা হয়েছে; রাতজাগা নির্বাসন শেষে- ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আক্ষমণের ফলে এদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ ভিটেমাটি ছাড়া হন। তারা দীর্ঘ নয় মাস নিজ দেশেই কিংবা প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে নির্বাসিত জীবনযাপন করতে বাধ্য হন। কিন্তু তারা এ অবস্থাতেই গড়ে তোলেন প্রবল প্রতিরোধ। নির্ঘুম রাত্রিকে তারা উৎসর্গ করেন প্রিয় মাতৃভূমির মুক্তির লক্ষ্যে। এক সময় শত্রুকে পরাজিত করে তারা ফিরে আসেন বীরের বেশে। আলোচ্য অংশে কবি তাঁদের গর্বিত প্রত্যাবর্তনের কথা বলেছেন।
আরও পড়ুনঃ
1 responses on "সাহসী জননী বাংলা - শব্দার্থ ও টীকা"