
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস ও ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে। ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ফোকলোর বিভাগের শ্রেণিকক্ষে বিশৃঙ্খলা ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
ক্লাস বর্জনের অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার (৬ই ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সৈয়দ ঈসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনে ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীরা নিজেদের শ্রেণি কক্ষে তালা দেয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ভবনের ১২২ নং কক্ষে চতুর্থ বর্ষের ক্লাস নিচ্ছিলেন ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. উদয় শংকর বিশ্বাস। এ সময় পাশের ১২১ নং কক্ষে অবস্থানরত ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা বিশৃঙ্খলা করছিল। এতে পাঠদানে সমস্যা হওয়ায় চতুর্থ বর্ষের এক শিক্ষার্থী তাদেরকে গোলমাল করতে নিষেধ করেন। কিন্তু এরপরেও তারা গোলমাল বন্ধ করেনি।
পরে নিষেধ অমান্য করাকে কেন্দ্র করে ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা প্রায় তাদের পাঠদানের সময় পাশের কক্ষে বিশৃঙ্খলা করে। তাছাড়া এরআগে কয়েকবার ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করেছে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে আমরা আমাদের বিভাগকে মৌখিকভাবে জানালে সমাধানের আশ্বাস দেয়া হয়। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি।
তবে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা বলেন, তাদের ১২১ নং কক্ষটি হস্তগত করতেই ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই তাদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে গোলমাল করার অভিযোগে প্রায়ই তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। হুমকির প্রতিবাদ করায় তারা আমাদের উপর চড়াও হন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফোকলোর বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতার হোসেন বলেন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা আমাদের বিভাগের ছেলে-মেয়েদের ধাওয়া করেছিল। এটি আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে বলেছি। আমরা প্রক্টর ও উপাচার্যকে লিখিত অভিযোগ দেব।
ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মু. ময়েজুল ইসলাম বলেন, সকালে আমাদের ছেলেরা ক্লাসের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। তখন তাদেরকে নিষেধ করার জন্য ফোকলোর বিভাগের এক শিক্ষার্থী গিয়েছিল। আর আমাদের এতোগুলো শিক্ষার্থী তো একটু সমস্যা হবেই। আমি ফোকলোর বিভাগের সভাপতিকে বলেছি। পরে এটির সমাধান হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান বলেন, শুনেছি ইতিহাস বিভাগের সঙ্গে ফোকলোর বিভাগের রুম নিয়ে শিক্ষার্থীদের ঝামেলা হয়েছে। আমি সহকারী প্রক্টর জাহিদকে এটি খতিয়ে দেখতে বলেছি। যদি বড় ঝামেলা হয় তাহলে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আরো পড়ুন: