বিসিএস প্রিলিমিনারি সাধারণ বিজ্ঞান খাদ্য ও পুষ্টি
খাদ্য উপাদান
খাদ্য অনেকগুলো রাসায়নিক উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত। এ রাসায়নিক উপাদানগুলোকে খাদ্য উপাদান বলা হয়কেবলমাত্র একটি উপাদান দিয়ে গঠিত এমন খাদ্যবস্তুর সংখ্যা খুবই কম। এভাবে উপাদান অনুযায়ী খাদ্যবস্তুকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা-
১. আমিষ বা প্রোটিন – ক্ষয়পূরণ, বৃদ্ধিসাধন ও দেহ গঠন করে।
২. শর্করা বা শ্বেতসার – শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।
৩. স্নেহ বা চর্বি – তাপ ও শক্তি উৎপাদন করে।
এছাড়া তিন প্রকার অন্যান্য উপাদান বিশেষ প্রয়োজন। যথা-
১. খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন – রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়, বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ায় উদ্দীপনা যোগায়।
২. খনিজ লবণ – বিভিন্ন জৈবিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়।
৩. পানি – দেহে পানির সমতা রক্ষা করে, কোষের গুণাবলি নিয়ন্ত্রণ করে এবং কোষ অঙ্গাণুসমূহকে ধারণ ওতাপের সমতা রক্ষা করে।
শর্করা/শ্বেতসার
আমরা নাস্তায় রুটি, মুড়ি, চিড়া, পাঁউরুটি ইত্যাদি খাই। এগুলো শর্করা জাতীয় খাদ্য। শর্করা শক্তি উৎপাদনকারী খাদ্য।আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যের বিভিন্ন উপাদানগুলোর মধ্যে শর্করার পরিমাণ সবচেয়ে বেশি থাকে। শর্করা সহজপাচ্য। সবশর্করাই কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন এই তিনটি মৌলিক উপাদানের সমন্বয়ে গঠিত। শর্করা দেহের কর্মক্ষমতাযোগায়। গ্লুকোজ এক ধরনের সরল শর্করা। রাসায়নিক গঠনপদ্ধতি অনুসারে সব শর্করাকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। একটি মাত্র শর্করা দিয়ে গঠিত হয় মনোস্যাকারাইড। একে মৌলিক শর্করাওবলে। দ্বি-শর্করী ও বহু শর্করী পরিপাকের মাধ্যমে সরল শর্করায় পরিণতহয়ে দেহের শোষণযোগ্য হয়। মানবদেহ পরিপুষ্টির জন্য সরল শর্করাঅত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ মানবদেহ শুধুমাত্র সরল শর্করা গ্রহণ করতেপারে। গ্লুকোজ, ফ্রুকটোজ, গ্যালাকটোজ এ তিনটি শর্করার মধ্যে গ্লুকোজরক্তের মাধ্যমে সারা দেহে পরিবাহিত হয়।
শর্করা, স্নেহ ও আমিষের মধ্যে শর্করা সর্বাপেক্ষা সহজপাচ্য। দেহে শোষিত হওয়ার পর শর্করা খুব কম সময়ে তাপউৎপন্ন করে দেহে শক্তি যোগায়। এর প্রম ও প্রধান কাজ হলো শক্তি উৎপাদন করা। ১ গ্রাম শর্করা ৪ কিলোক্যালরি তাপ উৎপন্ন করে। মানবদেহে প্রায় ৩০০-৪০০ গ্রাম শর্করা জমা থাকতে পারে। এ পরিমাণ শর্করা ১২০০-১৬০কিলোক্যালরি তাপ উৎপন্ন করে দেহের শক্তি যোগায়। বয়স, দেহের ওজন, উচ্চতা, পরিশ্রমের মাত্রার উপর শর্করার চাহিদা নির্ভর করে। একজন পূর্ণ বয়স্ক পুরুষের শর্করা দৈনিক চাহিদা তার দেহের প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের ৪.৬ গ্রাম হয়ে থাকে। একজন ৬০ কেজি ওজনের পুরুষ মানুষেরগড়ে প্রতিদিন শর্করার দৈনিক চাহিদা = (৬০X ৪.৬) গ্রাম বা ২৭৬ গ্রাম। আমাদের মোট প্রয়োজনীয় ক্যালরির শতকরা৬০-৭০ ভাগ শর্করা হতে গ্রহণ করা দরকার।
কাজ : সামান্য পরিমাণ এরারুট দ্রবণ বা ভাতের মাড় একটি টেস্টটিউবে নাও এবং এর সাথে সামান্য পরিমাণপানি মেশাও। এবার এর ভিতর দুই-তিন ফোঁটা আয়োডিন দ্রবণ মেশাও। কী ঘটে দেখ? দ্রবণটি নীল বর্ণ ধারণ করবে। এ থেকে উক্ত দ্রবণে শর্করা বা শ্বেতসারের উপস্থিতি নির্ণয় করা যায়।
অভাবজনিত রোগ
আহারে কম বা বেশি শর্করা গ্রহণ উভয়ই দেহের জন্য ক্ষতিকর। শর্করার অভাবে অপুষ্টি দেখা দেয়। রক্তে শর্করারপরিমাণ কমে গেলে দেহে বিপাক ক্রিয়ার সমস্যার সৃষ্টি হয়। রক্তে শর্করার মাত্রা কমে গেলে হাইপোগ্লাইসমিয়ার লক্ষণদেখা দেয়। যেমনঃ
– ক্ষুধা অনুভব করা
– বমি বমি ভাব
– অতিরিক্ত ঘামানো
– হৃদকম্পন বেড়ে বা কমে যেতে পারে।
এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।
পরের পাতাসমুহ >>
0 responses on "বিসিএস প্রিলিমিনারি সাধারণ বিজ্ঞান খাদ্য ও পুষ্টি"