বিটিআরসি ফোরজির জন্য নীতিমালা প্রকাশ করেছে

দেশে চতুর্থ প্রজন্মের (ফোরজি) টেলিযোগাযোগ সেবা চালুর জন্য খসড়া নীতিমালা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। খসড়া নীতিমালায় ফোরজি সেবা দিতে মুঠোফোন অপারেটরদের পুঁজিবাজারে আসার শর্ত যুক্ত করা হয়েছে। এই নীতিমালার বিষয়ে আগ্রহী যে কেউ ১২ জুলাই পর্যন্ত লিখিত মতামত জানাতে পারবেন।

খসড়া নীতিমালায় মুঠোফোন অপারেটরদের পুঁজিবাজারে আসার বিষয়ে বলা হয়েছে, ফোরজির লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নিয়ম অনুযায়ী প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) যেতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। আইপিও-প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বিটিআরসির আলাদা অনুমতি নেওয়ারও প্রয়োজন হবে না লাইসেন্সধারী প্রতিষ্ঠানের।

এর আগে ২০১১ সালে দ্বিতীয় প্রজন্মের (টুজি) টেলিযোগাযোগসেবার লাইসেন্স নবায়ন নীতিমালায় মুঠোফোন অপারেটরদের পুঁজিবাজারে যাওয়ার শর্ত যোগ করা হয়েছিল। তবে চূড়ান্ত নীতিমালায় এ শর্ত বাদ দেওয়া হয়। বাংলাদেশে মুঠোফোন অপারেটরদের মধ্যে একমাত্র গ্রামীণফোনই এখন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠানটি আইপিওর মাধ্যমে ১০ শতাংশ শেয়ার বাজারে ছাড়ে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে রবি আজিয়াটা ও বাংলালিংকের পুঁজিবাজারে আসার এটি আলোচনায় এলেও তা আর বেশি দূর এগোয়নি।

জানতে চাইলে রবি আজিয়াটার ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মুখপাত্র ইকরাম কবীর বলেন, বিএসইসির আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে যেসব প্রতিষ্ঠান প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) নিয়ে আসে, তাদের জন্য পুঁজিবাজারে যাওয়া বাধ্যতামূলক নয়। তবে বিএসইসির প্রযোজ্য সব শর্ত পূরণ করে রবি পুঁজিবাজারে আসতে চায়। এর আগেও বিটিআরসির বিভিন্ন খসড়া নীতিমালায় মুঠোফোন অপারেটরদের পুঁজিবাজারে যাওয়ার এটি ছিল।

ফোরজি লাইসেন্সের ব্যাংক গ্যারান্টি হিসেবে ১৫০ কোটি টাকা জমা দেওয়ার শর্ত রয়েছে খসড়া নীতিমালায়। এই অর্থ মুঠোফোন অপারেটরদের দুই ভাগে পরিশোধ করতে হবে। এর মধ্যে বিটিআরসি নির্ধারিত সময়ে ফোরজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের সময়সীমার পূরণের নিশ্চয়তা হিসেবে ৭৫ কোটি টাকা দিতে হবে। আর ভবিষ্যতের বকেয়া পরিশোধের নিশ্চয়তা হিসেবে জমা দিতে হবে আরও ৭৫ কোটি টাকা।

ফোরজি চালুর নয় মাসের মধ্যে দেশের সব বিভাগীয় শহরে সেবাটি নিয়ে যাওয়ার শর্ত রাখা হয়েছে খসড়া নীতিমালায়। এ ছাড়া সেবা চালুর তিন বছরের মধ্যে মুঠোফোন অপারেটরদের সারা দেশে ফোরজি নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করতে হবে। নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের প্রতিটি শর্ত পূরণ করলে ২৫ কোটি টাকা করে ফেরত পাবে অপারেটররা।

খসড়া নীতিমালায় ফোরজি লাইসেন্সের আবেদন ফি ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ টাকা। এ সেবা থেকে মুঠোফোন অপারেটরদের যে আর্ন হবে, তার সাড়ে ৫ শতাংশ বিটিআরসিকে দিতে হবে। এ ছাড়া আয়ের ১ শতাংশ অর্থ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সামাজিক সুরক্ষা তহবিলে (এসওএফ) জমা দিতে হবে।

চলতি বছরের মধ্যে দেশে ফোরজি চালু করার লক্ষ্য নিয়ে গত এপ্রিলে এ-সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরি করে বিটিআরসি। নীতিমালা অনুযায়ী বর্তমান মুঠোফোন অপারেটররাই সেবাটি আগে চালু করার সুযোগ পাবে। একই সঙ্গে তরঙ্গ কেনার শর্তে নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানও এ সেবা দিতে পারবে। ফোরজি চালুর জন্য সব মুঠোফোন অপারেটরই নিজেদের মতো করে এখন প্রস্তুতি নিচ্ছে। গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ইতিমধ্যেই ফোরজি প্রযুক্তির পরীক্ষা চালিয়েছে।

বাংলাদেশে ১৯৯৩ সালে সিটিসেলের মাধ্যমে প্রথম টুজি প্রযুক্তির মুঠোফোনসেবা চালু হয়। এরপর ২০১২ সালে সরকারি মালিকানাধীন অপারেটর টেলিটক থ্রিজি প্রযুক্তির সেবা চালু করে।

 

আরো পড়ুন:

চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল ইন্টারনেট সেবা তথা ফোর-জি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline