
ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে মডেল টেস্টের নামে বিধি বর্হিভূতভাবে টাকা আদায়ে অভিযোগ তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এ কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর মোহাম্মদ ইউসুফ এবং সহকারী পরিচালক (এইচআরএম) আশেকুল হক। কমিটিকে ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজ পরিদর্শন করে অভিযোগ তদন্ত করে সুস্পষ্ট মতামত দিতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ মার্চ) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এ কমিটি গঠন করে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত রাজধানীর পুরান ঢাকার ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজে তালা ঝুলিয়ে দেন বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, এইচএসসির প্রবেশপত্র নিতে গেলে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে মডেল টেস্টের নামে অতিরিক্ত ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা দাবি করা হয়। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৭ মার্চ)বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা প্রথমে কলেজটির সামনের সড়ক অবরোধ করে। এরপর কলেজের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
পরীক্ষার্থীদের দাবি, কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে দিয়েছে টাকা না দিলে প্রবেশপত্র দেবে না, পরীক্ষাও দিতে দেবে না। তাই বাধ্য হয়ে তারা সড়কে নেমেছেন। ঢাকা মহানগর মহিলা কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অভিযোগ, টেস্ট পরীক্ষা দেয়ার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের বলে মডেল টেস্ট দিতে হবে। যদিও এটা বাধ্যতামূলক নয়। তারপরও তারা আমাদের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করেছে। পরীক্ষা শেষ হয়েছে। এখন তারা আমাদের কাছে এই মডেল টেস্টের জন্য ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা চাচ্ছে। গত তিন দিন ধরে আমরা প্রবেশপত্রের জন্য ঘুরছি। কিন্তু টাকা না দিলে প্রবেশপত্র দিচ্ছে না।
পরীক্ষার্থীরা আরও বলেন, অনেকেই অসুস্থ থাকায় মডেল টেস্ট দেয়নি। তাদের কাছ থেকেও টাকা নিচ্ছে। টাকা না দিলে পরীক্ষা দিতে দেবে না বলে হুমকি দিচ্ছে। আমাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন শিক্ষকরা। আমরা তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি। অন্যায়ভাবে আমাদের কাছ থেকে টাকা চাওয়া হচ্ছে।’
ফেরদৌসী নামে এক বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী বলেন, আমার কাছে পাঁচ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি। এর আগেও বিভিন্ন পরীক্ষার সময় টাকা চাওয়া হয়েছে। টাকা না দিলে প্রবেশপত্র দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে।
ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ, কলেজের অধ্যক্ষ আফসানা হাসান প্রবেশপত্র দেয়ার সময় এই বাড়তি টাকা নিয়ে থাকেন। আজ (মঙ্গলবার) প্রবেশপত্র দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেওয়া হয়নি। অথচ ২ তারিখে আমাদের পরীক্ষা শুরু হবে।
ফারজানা নামে এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, প্রিন্সিপাল বলেছেন, ছাত্রীদের গায়ে গরম পানি ঢালা হবে। তৃপ্তি নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, টাকা না দিয়ে অ্যাডমিট নিলে প্রাকটিক্যালে মার্ক দেয়া হবে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, অধ্যক্ষ ম্যাডাম কতিপয় রাজনীতিকদের ছত্রচ্ছায়ায় অবৈধভাবে পদ দখল করে আছেন। প্রায়শই তিনি কলেজে না থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও রাজনৈতিক দলের অফিসে ঘোরাফরা করেন।
আরো পড়ুন: