৩৭লিখিত প্রস্তুতি :: বাংলাদেশ বিষয়াবলি

সম্ভাব্য প্রশ্ন:
১। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে যে সব পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে এর সমালোচনা কর (৩৪ তম বিসিএস)
২। পরিকল্পনা কমিশন কী? এর গঠন ও কার্যাবলী বর্ণনা কর (

টীকা আসতে পারে)
সম্পর্কিত বিষয় (Related Topics):
বাংলাদেশ বিষয়াবলি = Economy of Bangladesh particular emphasis on developments including Poverty Alleviation
.,
:: পরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি :
পাঁচ পরিকল্পনা নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। পরিকল্পিত অর্থনীতির সুফল মিলতে শুরু করেছে ইতোমধ্যেই, মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হতে বেশি দিন লাগবে না। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য নিরসনে অসাধারণ অগ্রগতি, সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন, অবকাঠামো উন্নয়ন বিশেষত বিদ্যুত সম্প্রসারণ, মানব উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে দৃষ্টি গোচর উন্নতি অর্জিত হয়েছে বলে মনে করছে সরকারের অর্থনৈতিক থিঙ্কট্যাংক হিসেবে খ্যাত পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। তাছাড়া বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার সময়ও অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতা রক্ষা সম্ভব হয়েছে। দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৬ শতাংশের মধ্যেই রয়েছে। মাথাপিছু আয়ে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৯০ ডলারে। অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে যে সব পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে সেগুলো হলো:
.,
:: সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০)
মধ্যআয়ের অর্থনীতির দেশে উন্নীত হতে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় যাচ্ছে বাংলাদেশ। এ প্রেক্ষিতে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু করেছে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) যেটি বাস্তবায়ন হবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে থেকে। আর সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মেয়াদ হবে ২০১৬-২০। ২০২০ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য ধরে তৈরি হতে যাওয়া এ পরিকল্পনায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে বিদ্যুত ও জ্বালানি শক্তি, দ্বিতীয় গুরুত্বের তালিকায় থাকছে মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং তৃতীয় অবস্থানে থাকছে বৈষম্যদূরীকরণ (অর্থনৈতিক বৈষম্য, আর্ন বৈষম্য এবং আঞ্চলিক বৈষম্য)। বর্তমানে গড় মাথাপিছু আর্ন ১১৯০ মার্কিন ডলার। ২০০৫ সালে এই আর্ন ছিল ৪৪৭ মার্কিন ডলার। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলেই ২০২১ সালে দেশের সাধারণ মানুষের মাথাপিছু গড় আর্ন হবে ২০০০ মার্কিন ডলার। একই সঙ্গে মধ্যম আয়ের দেশ হবে বাংলাদেশ।
.,
:: প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২১)
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীকে সামনে রেখে সরকারের উন্নয়ন দর্শন, রূপকল্প: ২০২১ কে বাস্তবে রূপায়িত করার লক্ষ্যে ও ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যআয়ের দেশে পরিণত করতে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা (২০১০-২১) নামে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ পরিকল্পনাটি মূলত দুটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হচ্ছে। একটি হচ্ছে ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা (যা চলমান) এবং অপরটি হবে সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা।
.,
২০১০ সাল থেকে ২০২১ সাল নাগাদ দেশের অবস্থান নির্ধারণের লক্ষ্যে প্রণীত এ রোডম্যাপে সাতটি অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে।যা হলো: জনগণের অংশীদারিত্ব ভিত্তিক প্রবৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য হ্রাসকরণ, কার্যকরী সরকার ব্যবস্থাও উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নিশ্চিতকরণ, বিশ্বায়ন এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ, উন্নয়ন এবং নাগরিক কল্যাণ বৃদ্ধির জন্য জ্বালানি নিরাপত্তা অর্জন, সুদৃঢ় অবকাঠামো নির্মাণসহ নগর সমস্যা নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবসমূহ উপশমকরণ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিত্যনতুন উদ্ভাবন প্রক্রিয়াকে বেগবানকরণ।
.,
প্রেক্ষিত পরিকল্পনা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এতে ২০১৫ সালের মধ্যে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশ এবং ২০২১ সালের মধ্যে ১০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আর্ন ২০২১ সালের মধ্যে ২ হাজার ডলারে উন্নীত করা, জাতীয় সঞ্চয় ২০২১ সালের মধ্যে মোট জিডিপির ৩৯ শতাংশ অর্জন করা, অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ শতাংশ অর্জন এবং ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্রতা কমিয়ে ১৩ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে নিয়ে আসা। এ সব লক্ষ্য অর্জনে শিক্ষা, তথ্য ও প্রযুক্তি, গবেষণা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশে সব প্রয়াস নেয়া হবে বলে রোডম্যাপে উল্লেখ রয়েছে। ২০১৫ সালের মধ্যে ১৫ হাজার ৩৫৭ মেগাওয়াট এবং ২০২১ সালের মধ্যে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে । পাশাপাশি ২০২১ সালের মধ্যে সব মানুষকে বিদ্যুত সুবিধা দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তার কৌশল বিষয়ে রোডম্যাপে বলা হয়েছে ২০২১ সালের মধ্যে খাদ্যে টেকসই স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জনে ভূমির গুণাগুণ রক্ষা ও কৃষির বহুমুখীকরণ করা, উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে সমবায় প্রতিষ্ঠা উৎসাহীতকরণ এবং উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য গবেষণা ও উন্নয়ন প্রাধান্য পাবে।
.,
:: জাতীয় টেকসই উন্নয়ন কৌশল
জাতীয় টেকসই উন্নয়ন কৌশলপত্র ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)। টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে কৌশলপত্রে বলা হয়েছে, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান সমস্যাগুলো হচ্ছে, স্বল্প বিনিয়োগ ও সঞ্চয় হার, অদক্ষ মানবসম্পদ, প্রাণতিক মানের মোট উপকরণের উৎপাদনশীলতা এবং ভূমির দুষ্প্রাপ্যতা বা প্রতিবন্ধকতা, অবকাঠামো কর্মসূচীতে ক্রমবর্ধমান সরকারি বিনিয়োগ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, গবেষণা ও উন্নয়ন, পিপিপি, বিনিয়োগ ও বিনিয়োগ প্রণোদনা বৃদ্ধির মাধ্যমে আইটি খাত উৎসাহিতকরণ, বেসরকারী বিনিয়োগ, গবেষণা ও উন্নয়ন, শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ, রফতানি প্রবৃদ্ধি ও বৈচিত্র্যকরণ, বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং সবুজায়ন প্রবৃদ্ধিতে উন্নীতকরণ। এগুলো সমস্যা সমাধানে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। কৃষি, শিল্প, জ্বালানি ও পরিবহন হলো অগ্রাধিকার খাত যেটি কিনা দেশের টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
.
:: সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী ও কৌশল
বদলে যাচ্ছে সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচী। এ জন্য তৈরি হচ্ছে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল। এটি এখনও অনুমাদন দেয়া হয়নি। তবে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এর মাধ্যমে বর্তমান চলমান প্রায় ৯০টি কর্মসূচীকে এক ছাতার নিচে আনা হচ্ছে। তাছাড়া আসছে ব্যাপক পরিবর্তন। সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সূত্র জানায়, নতুন কৌশলপত্রে যে সব বিষয় যুক্ত হচ্ছে সেগুলো হচ্ছে অতিদরিদ্রদের জন্য ভিজিএফ, টিআর, কাবিখা ও বয়স্ক ভাতাসহ যে সব কর্মসূচী রয়েছে, সেগুলোর ধরন ও কৌশলে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। কৌশলপত্রে যে এটির ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দেয়া হয়েছে, তা হলো ‘লাইফ সাইকেল।’ জিইডি তাদের প্রস্তাবনায় বলছে, ২০২১ সালে মধ্যআয়ের দেশে উন্নীত হতে হলে ‘লাইফ সাইকেল’ পদক্ষেপ ছাড়া কোন বিকল্প নেই। এ জন্য জন্ম থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মোট পাঁচটি লাইফ সাইকেল চালু করতে হবে। অতিদরিদ্র, ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতিবন্ধী সবাইকে এই লাইফ সাইকেলে অন্তর্র্ভুক্ত করতে হবে।
.
:: পরিকল্পনা কমিশন
বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন প্রতিষ্ঠান হলো পরিকল্পনা কমিশন । দেশের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন রূপকল্পের আলোকে স্বল্প ও মধ্য মেয়াদী পরিকল্পনা কাঠামোর উদ্দেশ্যে লক্ষ্যমাত্রা ও কর্মপন্থা নির্ধারণ করে থাকে পরিকল্পনা কমিশন। কিভাবে ইপ্সিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে তার নীতি ও বাস্তবায়ন কাঠামো এবং অগ্রগতি পরিমাপের মানদন্ড নির্ধারণও পরিকল্পনা কমিশনের কাজ।
.
সংবিধানের ১৫ ধারায় রাষ্ট্রকে উপযুক্ত উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ তথা উন্নততর জীবনযাত্রা নিশ্চিত করণের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দেশের পরিকল্পিত উন্নয়নের এই দায়িত্ব অর্পন করে ১৯৭২ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশন গঠিত হয়। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এবং প্রকল্প পর্যালোচনা মূল্যায়ন অনুমোদন কাজে পরিকল্পনা কমিশন সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয়ধর্মী যোগাযোগ রক্ষা করে।
.
:: পরিকল্পনা কমিশনের গঠন:
পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যদের অধীনস্থ কর্মকর্তাগণ বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (ইকনোমিক) সদস্য এবং তাদের প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা বিভাগ। বিভাগীয় প্রধানগণ চীফ বা প্রধান এবং উইং-এর প্রধানগণ যুগ্ম প্রধান পর্যায়ের কর্মকর্তা। উইংসমূহ আবার অধি শাখায় বিভক্ত যেগুলো ডেপুটি চীফ বা উপ প্রধানের নেতৃত্বে। সর্বশেষ স্তর হল ডেস্ক যেটি সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট। অ্যাসিস্ট্যান্ট চীফ বা সহকারি প্রধান পর্যায়ের কর্মকর্তারা এর দেখাশুনা করে।
.
:: পরিকল্পনা কমিশনের কার্যাবলী:
১। দীর্ঘমেয়াদী (১৫-২০) রূপকল্পের আওতায় ৫ বছর মেয়াদী (পঞ্চবার্ষিক) অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করে।
২। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার ছায়া অবলম্বনে ত্রিবার্ষিক প্রবহমান বিনিয়োগ পরিকল্পনা (TYRIP) প্রণয়ন।
৩। দারিদ্র্য নিরসন কৌশলপত্র (PRSP) প্রণয়ন।
৪। ত্রিবার্ষিক ও পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাসমূহের ভাবদর্শনের আওতায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (ADP) প্রণয়ন।
৫। ECNEC সভা ও পরিকল্পনা মন্ত্রীর জন্য প্রকল্প মূল্যায়ন ও পর্যালোচনা সারপত্র প্রণয়ন।
৬। উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে উৎকর্ষতা বিধানের লক্ষ্যে গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ।

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline