ওয়েব ডিজাইন-
ওয়েব ডিজাইন হচ্ছে একটা ওয়েবসাইটের জন্য বাহ্যিক অবকাঠামো তৈরী করা । অর্থাৎ ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হবে বা এর সাধারন রূপ কেমন হবে তা নির্ধারণ করা । আমরা সাধারণত ২ ধরনের ওয়েবসাইটের সাথে পরিচিত। একটি হল ডায়নামিক ওয়েবসাইট এবং অপরটি হল স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট।
ওয়েব ডিজাইনারের মুল কাজ একটা পূর্ণাঙ্গ ওয়েব সাইটের টেম্পলেট তৈরি করা, যেমন এটার লেয়াউট কেমন হবে, হেডারে কোথায় মেনু কেমন হবে, সাইডবার হবে কিনা এবং ইমেজগুলো কিভাবে প্রদর্শন করবে ইত্যাদি । ভিন্ন ভাবে বলতে গেলে ওয়েবসাইটের তথ্য কি হবে এবং কোথায় জমা থাকবে এগুলো চিন্তা না করে, তথ্যগুলো কিভাবে দেখানো হবে সেটা নির্ধারণ করাই হচ্ছে ওয়েব ডিজাইনের এর কাজ। ওয়েব ডিজাইনে কোন এপ্লিকেশন থাকবেনা ।
আরো দেখুন:আসলেই কি আপনি ওয়েব ডিজাইন জানেন?
ওয়েব ডিজাইন এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর মধ্যে পার্থক্য-
স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য ওয়েব ডিজাইন দরকার হয়। আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন ব্রাউজার যেমন গুগল ক্রোম, ফায়ারফক্স ইত্যাদি দিয়ে যেসকল সাইটে ঢুকি কিংবা ইউআরএল ব্রাউজ করি এইগুলো এক একটি ওয়েবসাইট। এই সাইটেগুলো সাধারণত প্রথমে স্ট্যাটিক থাকে এবং এটি ওয়েব ডিজাইনের একটি অংশ। এই সাইটগুলোতে যখন লগিন রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম যুক্ত হয়। তখন একটি ডায়নামিক ওয়েবসাইটে রুপান্তিত হয়।
যেমন লগিন সিস্টেম, ফাইল আপলোড করে ডেটাবেসে সেভ করা, ইমেজ ম্যানিপুলেশন, যদি সাইটে বিজ্ঞাপন থাকে তাহলে প্রতিবার পেজ লোড হওয়ার সময় বিজ্ঞাপনের পরিবর্তন এগুলি এপ্লিকেশন বা ওয়েব এপ্লিকেশন । এসব তৈরী করতে হয় প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ, স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ এবং মার্কআপ ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে । কোন প্রকার এপ্লিকেশন ছাড়া ওয়েব সাইট তৈরী করাকে ওয়েব ডিজাইন, এধরনের ডিজাইনকে বলতে পারেন স্টাটিক ডিজাইন । ওয়েব ডিজাইনের জন্য এই ধারনাটি সাধারনত ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।
আরো দেখুন:ওয়েব ডিজাইন কি? কিভাবে শিখবেন ওয়েব ডিজাইন?
ওয়েব ডিজাইন করতে যা যা দরকার হয়-
ওয়েব ডিজাইন কিংবা ওয়েব সাইট তৈরি করার জন্য কিছু লাইট প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ ব্যবহুত হয়। তার মধ্যে অন্যতম হল
- এইচটিএমএল
- সিএসএস
- জাভাস্ক্রিপ্ট
- জেকুয়েরি
- বুটস্ট্রাপ
ইত্যাদি এর মধ্যে বুটস্ট্রাপ হল একটি ফ্রেমওয়ার্ক, যার মধ্যে এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট, জেকুয়েরী অর্ন্তভুক্ত রয়েছে। এছাড়াও পিএসডিটুএইচটিএমএল ও এই কোর্সের আওতাভুক্ত।
আরো দেখুন:ওয়েব ডিজাইন কি?
এছাড়ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এর জন্য পিএইচপি, এএসপি, জাভা, পাইথন ইত্যাদি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ প্রয়োজন হয়।
ওয়েব ডিজাইন কেন শিখবেন?
Yahoo এর ছোট্ট একটি রিপোড়্রট দেখে নিনঃ
*শুধুমাত্র আমেরিকাতেই ২০.১+ বিলিয়ন ডলারের মার্কেট রয়েছে ওয়েব ডেভেলপমেন্ট খাতে।
*প্রতি মাসে আমেরিকাতেই ১৬ মিলিয়নেরও বেশি ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে।
*প্রায় ৭০ শতাংশ ওয়েবসাইটই প্রিমিয়াম হয় অর্থাৎ কেউকে না কেউকে টাকা দিয়ে করানো হয়।
*এর মার্কেট ভ্যেলু ২০.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার
আরো দেখুন:ওয়েব ডিজাইন কেন শিখবেন?
এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে।কিন্তু সবচাইতে মজার বিষয় হচ্ছে প্রতিদিন যে হারে নতুন ওয়েবসাইট তৈরির প্রয়োজন পড়ছে, নতুন ওয়েব ডিজাইনার বা ডেভেলপার কিন্তু সে হারে তৈরি হচ্ছে না।প্রতিনিয়ত মার্কেটে ওয়েব ডিজাইনারের ঘাটতি বেড়েই চলেছে।যদিও ওয়েব ডিজাইন আসলে উচ্চ আয়ের পেশার মধ্যে অন্যতম কিন্তু আপনি যদি আয়ের কথাটাই মাথায় রেখে এগুতে চান তাহলে আমি বলবো আপনার জন্য ওয়েব ডিজাইন নয়।আর তাই এখনই সময় নিজেকে একজন ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে গড়ে তোলার।
২০১৯ সালে কিভাবে ওয়েব ডিজাইনার হিসাবে স্মার্ট ক্যারিয়ার তৈরি করা সম্ভব?
এই পৃথিবীতে প্রতি ১ মিনিটে প্রায় ৫৭১ টি নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করা হচ্ছে। তার মানে, ঘণ্টায় ৩৪২৬০। এবার ভাবুন মাসে কতগুলো! বর্তমানে প্রায় বিলিয়ের উপরে অ্যাক্টিভ ওয়েবসাইট রয়েছে পৃথিবীতে। প্রায় ২৯৪ মিলিয়ন ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছিল ২০১৫ এর শুরুর দিকে!একবার ভেবে দেখেছেন কি, এই ওয়েবসাইট গুলো কারা তৈরি করে?
এগুলো কিন্তু কোন মেশিন বা রোবোট তৈরি করে না, এগুলো তৈরি করেন আপনার আমার মত সাধারন মানুষ যারা ওয়েব ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট করতে জানেন।বিভিন্ন ফ্রীল্যান্স মার্কেটেই প্রতিদিন কয়েক হাজারের বেশি জব পোস্ট করা হয়, ভালভাবে স্কীল ডেভেলপ করতে পারলে থাকছে কাজ করার অফুরন্ত সুযোগ।এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে।
আরো দেখুন: কিভাবে ওয়েব ডিজাইনার হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করবেন-
ওয়েব ডিজাইনার হিসাবে ক্যারিয়ার শুরু করবেন কিভাবে-
প্রাথমিক পর্যায়ে দুটো শিখায় জরুরী।ওয়েব ডেভলপিং না জানলে আপনি ভাল ওয়েব ডিজাইনার হতে পারবেন না।আবার ওয়েব ডিজাইন না জানলে ভাল ওয়েব ডেভেলপার হতে পারবেন না।তাই দুটোই আপনার জানা দরকার।কারন একটা আরেকটা পরিপূরক।কিন্তু সেক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে যে আপনাকে আগে ওয়েব ডিজাইন শিখতে হবে এবং পরে ডেবলপিং শিখতে হবে।অনেক ক্লাইন্ট চায় একজনকে দিয়েই ডিজাইন এবং ডেভ্লপিং দুটোই করাতে ।আর আপনি যদি দুটোই জানেন তাহলে আপনার ক্লাইন্ট গুলোকে নিজেই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপনিই সাপোর্ট দিতে পারবেন।এতে আপনার স্কিল এবং ইনকাম দুটোই বাড়বে।ধীরে ধীরে আপনি যখন মার্কেটে আপনার অবস্থান তৈরি করে নিতে পারবেন তখন শুধু ডিজাইন বা শুধু ডেভেলপমেন্ট যেকোন একটা করতে পারেন।
আরো দেখুন:ওয়েব ডিজাইনের চাহিদা
কোথায় শিখবেন ওয়েব ডিজাইন-
বর্তমানে ওয়েব ডিজাইন শেখায় এরকম অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যেখান থেকে আপনি ওয়েব ডিজাইন করতে পারেন। তবে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে সব ট্রেইনিং সেন্টার সঠিকভাবে টিকে থাকতে পারছে না। এক্ষেত্রে আপনি ইশিখন থেকে ঘরে বসে অনলাইনে লাইভ ক্লাসের মাধ্যমে ওয়েব ডিজাইন কোর্সটি করতে পারেন। কারণ- ইশিখনে রয়েছে দীর্ঘদিন বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস অথবা কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করছে এমন কিছু প্রফেশনাল ট্রেইনার। ইশিখন থেকে কোর্স করলে যারা হবে আপনার ট্রেইনার। এছাড়াও ইশিখন থেকে কোর্স করলে আপনি কোর্স সম্পর্কিত অন্যান্য সকল সুবিধাসমূহ পাবেন।
আরো দেখুন:ওয়েব ডিজাইন জানতে হলে কি কি শিখতে হবে?
ইশিখনে ওয়াব ডিজাইন শিখার এর বিশেষ সুবিধা-
- লাইভ ক্লাস মিস করলে পরের দিন কোর্সের ভেতর উক্ত ক্লাসের ভিডিও রেকর্ডিং ও আলোচিত ফাইল সমুহ পাবেন।
- লাইভ ক্লাসের সম্পূর্ণ ফ্রি ভিডিও কোর্স, ( শুধুমাত্র এই ভিডিও কোর্সই অনেক প্রতিষ্ঠান হাজার হাজার টাকায় বিক্রি করে।)
- প্রতিটি ক্লাস শেষে এসাইনমেন্ট জমা দেওয়া। (প্রতিটি এসাইনমেন্ট এর জন্য ১০ মার্ক)
- ক্লাসের লাইভ ক্লাসের পাশাপাশি প্রাকটিজ ফাইল পাবেন এবং কনটেন্ট পাবেন।
- প্রতিটি ক্লাসের প্রথম ১৫ মিনিট আগের ক্লাসের সমস্যাগুলো সমাধান হবে, পরের ১ ঘন্টা মুল ক্লাস শেষ ১৫ মিনিট প্রশ্নোত্তর পর্ব
- ক্লাসের শেষে ১০ নাম্বারের মডেল টেস্ট। এই মডেল টেস্ট মার্ক এবং এসাইনমেন্ট মার্ক ও নিয়মিত উপস্থিতির উপর ভিত্তি করেই পরবর্তীতে আপনার সার্টিফিকেট এর মান নির্ধারণ হবে।
- কোর্স শেষে সার্টিফিকেট
- লাইভ ক্লাস সমুহের ডিভিডি ।
ওয়েব ডিজাইন শিখতে হলে আপনার কি যোগ্যতা লাগবে ও কত সময় লাগবেঃ
তেমন কোন যোগ্যতাই লাগবে না। আপনার ইচ্ছাশক্তিটাই যথেষ্ট। যে কেউ চাইলে ওয়েব ডিজাইন শিখতে পারে। আর ওয়েব ডিজাইন শিখতে গেলে একদম নতুন হিসাবে ৩ মাস লাগতে পারে। তবে কিছুটা বেশি সময় দিলে ২ মাসেই HTML and CSS ভালোভাবে আয়ত্ব করা সম্ভব। তবে মনে রাখবেন, ওয়েব ডিজাইনিং এর সাথে ওয়েব ডেভেলাপমেন্টের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ওয়েব ডিজাইনিং শিখতে কম সময় লাগলেও ওয়েব ডেভেলাপমেন্ট শিখতে ২ বছর পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
কোথায় কাজ পাবেনঃ
আমি আগেই বলেছি যে, শুধু HTML and CSS শিখে খুব একটা কাজ পাওয়া যাবে না। কারন বর্তমানে সবাই ডায়নামিক ওয়েবসাইট তৈরি করতে চায়। তাই আপনাকে ডায়নামিক করা শিখতে হবে। তা না হলে আপনি নিখুত কোডিং করতে পারবেন না। কারন HTML and CSS কোড করার সময় ডায়নামিকের কথা মাথায় রেখে কোড করতে হয়। তা না হলে ডায়নামিক করার সময় বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়। আশাকরি ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছেন। তারপরেও আপনি কোথায় কোথায় কাজ খুজতে পারেন জেনে নিন।
http://upwork.com
http://freelancer.com
http://themeforest.net
কাজ পেতে হলে আপনাকে কি করতে হবে?
আপনার নিজের করা পূর্বের কাজের উদাহরন দেখাতে হবে আপনার ক্লায়েন্টকে। এটাকে পোর্টফোলিও(Portfolio) বলা হয়ে থাকে। আপনার পোর্টফোলিও যত বেশি প্রফেশনাল হবে আপনি তত তাড়াতাড়ি কাজ পাবেন। এক্ষেত্রে আপনি একটা ডোমেইন বা হোষ্টিং কিনে আপনার করা টেমপ্লেটগুলি আপলোড করে তার লিংক দিয়ে রাখতে পারেন। তাতে করে আপনার ক্লায়েন্ট আপনার দক্ষতা সম্পর্কে বেশ ভালো ধারনা পাবে।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে একটা পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট বানানো খুবই সহজ।
নিজেকে আপডেট রাখতে হলে কোন কোন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করতে হবেঃ
=> https://shapebootstrap.net/
এইটা হলো Bootstrap দিয়ে গঠিত টেমপ্লেটের দারুন একটা ওয়েবসাইট। আপনি অনেক ধারনা পেতে পারেন এই ওয়েব সাইট থেকে। মজার ব্যাপার হলো এই ওয়েব সাইটের মালিক বাংলাদেশী। তবে বিশ্বের সেরা ওয়েবসাইটের মধ্যে অন্যতম এই ওয়েবসাইট টি।
=> https://themeforest.net/category/site-templates
একদম প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট টেমপ্লেট পাবেন এই সাইটটি তে।
=> https://webdesign.tutsplus.com/
=> http://www.hongkiat.com/blog/category/design/
যখন আপনি এডভান্স হবেন তখন এই ওয়েব সাইটগুলি কিন্তু নিয়মিত ফলো করতে হবে। নিত্যনতুন খবরাখবর রাখার জন্য।
0 responses on "ওয়েব ডিজাইন কি?"