NTRCA শিক্ষক নিবন্ধন – বাংলা – কারক বিভক্তি

 

কারক
কৃ +ণক=কারক।
বাক্যে ক্রিয়া পদের সাথে অন্য পদের সম্পর্ক কে কারক বলে।
বিভক্তি: বাক্যের শব্দসমূহের সাথে যে শব্দাংশ যুক্ত হয় তাকে বিভক্তি বলে।

কারক ৬ প্রকার আর বিভক্তি ৭ প্রকার।
প্রথমে  দেখি কারক কি কি-
১) কর্তৃকারক
২) কর্মকারক
৩) করণ কারক
৪) সম্প্রদান কারক
৫) অপাদান কারক
৬) অধিকরণ কারক

নাম দেখেই প্রথম চারটি কারক আপনার বুঝার কথা।
বাক্যের কর্তাই হল কর্তৃকারক। যেমন: সুমন ডাক্তারকে ডাকতে গেল। এখানে সুমন কর্তৃকারক।
কর্তা যাকে/ যারে অবলম্বন করে কিছু করে তা হল কর্ম।  যেমন: সুমন ডাক্তারকে ডাকতে গেল।  এখানে সুমন কর্তৃকারক আর ডাক্তার কর্ম কারক।
কর্তা যেটি দ্বারা/দিয়ে কাজ করে তা হল করণ কারক। [জেনে রাখুন করণ মানে হল যন্ত্র।] যেমন:  সুমন পায়ে হেঁটে ডাক্তারকে ডাকতে গেল। পায়ে করণ কারক।
যাকে স্বত্ব ত্যাগ করে প্রদান করা হয় সে সম্প্রদান কারক। যেমন: ভিক্ষুক কে ভিক্ষা দাও।  ভিক্ষুক সম্প্রদান কারক।
যা/যেখান হতে/থেকে -কিছু বিচ্যুত,গৃহীত,জাত,বিরত,দূরিভুত ,রক্ষিত এবং ভীত হয় তা অপাদান কারক। যেমন: তিল থেকে তেল হয়।  তিল অপাদান কারক।
ক্রিয়ার আধার(স্থান,কাল পাত্র)কে অধিকরণ কারক বুঝায় । যেমন: বনে বাঘ থাকে। বন অধিকরণ কারক।

বিভক্তি মনে রাখতে পারেন কারক দিয়ে:

সাধারণত কর্তার সাথে কোন শব্দাংশ থাকে না।
যেমন:
-সুমন ডাক্তারকে ডাকতে গেল।
– সে ঘুরতে বের হল।
– মেসি সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেল।
– রোনাল্ডো এবার সবচে বেশি গোল করেছে।

যখন কোন শব্দাংশ থাকে না তা শুন্য বা প্রথমা বিভক্তি।

আবার খেয়াল কর:
-সুমন ডাক্তারকে ডাকতে গেল।
– তাকে ডাক।
– ধোপাকে কাপড় দাও।
কর্ম কারকে সাধারণত কে, রে থাকে। কে, রে  দিয়েই দ্বিতীয়া বিভক্তি।

করণ কারক খেয়াল কর:

সে কলম দিয়ে লিখছে।
ডাকাত আমাকে লাঠি দ্বারা আঘাত করল।
কৃষক লাঙ্গল দিয়ে চাষ করছে।

কলম, লাঠি এবং লাঙ্গল  এই তিনটি করণ কারক। এখানে দ্বারা এবং দিয়ে ব্যবহৃত হয়েছে। দ্বারা এবং দিয়ে হল তৃতীয়া বিভক্তি।

ভিক্ষুক কে ভিক্ষা দাও।
অসহায়কে খাদ্য দাও।
সম্প্রদান কারকে সাধারণত কে, রে থাকে। কে, রে  দিয়েই চতুর্থী বিভক্তি।

যা/যেখান হতে/থেকে -কিছু বিচ্যুত,গৃহীত,জাত,বিরত,দূরিভুত ,রক্ষিত এবং ভীত হয় তা অপাদান কারক।
আর এই হতে, থেকে, চেয়ে এ বিভক্তি হল পঞ্চমী বিভক্তি।

ক্রিয়ার আধার(স্থান,কাল পাত্র)কে অধিকরণ কারক বুঝায় । স্থান এবং সময়ের সাথে র, এর,এ, য়, তে বসে।
যেমন: ঘরের মধ্যে কে?
তিনি ঢাকায় থাকেন।
বনে বাঘ থাকে।
পুকুরে মাছ পাওয়া যায়।

র, এর হল ষষ্ঠী বিভক্তি এবং এ, য়, তে হল সপ্তমী বিভক্তি।

দুটি বিষয় ভুলবেন না:
১।  বিভক্তি সংখ্যা দিয়ে লিখবেন না।  অর্থাৎ ১মা না লিখে প্রথমা লিখবেন।
২।  অনেক ব্যাকরণবিদ/বৈয়াকরণ সম্প্রদান কারক কে আলাদা কারক মনে করেন না।

এখন সহজ নিয়মে কারক নির্ণয় শিখে ফেলুন:

নিচের বাক্যটি খেয়াল কর:

মেসি ব্রাজিল থেকে টিকেট কিনে প্লেনে করে স্পেন গিয়ে ভাল অর্থ আর্ন করে কিছু অংশ দরিদ্র কে দিল।

আপনাকে বলা হল নিচের শব্দ গুলোর কারক নির্ণয় করতে :

মেসি, ব্রাজিল, প্লেন,  স্পেন, টিকেট, দরিদ্র।

আপনার প্রথম কাজ ক্রিয়া চিহ্নিত করা।  কিনে, গিয়ে, খেলে, আর্ন করে, দিল —> এই সব গুলো এখানে ক্রিয়া।
মেসি এখানে সব কাজ করেছে। তাহলে আপনি মেসির সাথে যেকোন একটি ক্রিয়া নিন।  মেসি দিল।
এখন আপনার দ্বিতীয় কাজ হল এই ক্রিয়া দিয়ে এমন প্রশ্ন করা যার উত্তর মেসি হয়। কে দিল? মেসি দিল।  “কে” দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাবেন তা হল কর্তৃকারক।
মেসি টিকেট কিনে।  কি কিনে? টিকেট; “কি” অথবা “কাকে” দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তা হল কর্মকারক।

প্লেনে করে স্পেন গেল। কি দ্বারা গেল? প্লেন দ্বারা। “কি দ্বারা” দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তা হল করণ কারক।

দরিদ্র কে দিল।  কাকে দিল? [একবারে দিয়ে দিল, ফেরত নিবে না। ] “কাকে” দিয়ে প্রশ্ন করলে যে উত্তর পাওয়া যায় তা হল সম্প্রদান কারক।
মেসি ব্রাজিল থেকে গেল। কোথা থেকে গেল? “থেকে”, “হতে”, “চেয়ে” দিয়ে প্রশ্ন করলে অপাদান কারক।
মেসি স্পেন গেল।  কোথায় গেল? কোথায় বা কখন দিয়ে প্রশ্ন করলে অধিকরণ কারক হবে।

আসলে কারক খুবই সহজ।  কিন্তু বাক্যের উপস্থাপন আপনাকে বিভ্রান্ত করে দিতে পারে। যেমন:

সর্বাঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দিব কোথা?  (সর্বাঙ্গে )
শিকারী বিড়াল গোফে চেনা যায়। (গোফে)
বোটা আলগা ফল গাছে থাকে না।  (বোটা আলগা)
জিজ্ঞাসিব জনে জনে। (জনে জনে)
তিলে তেল আছে। (তিলে)
তিলে তেল হয়। (তিলে)

আপনি যদি বুঝতে পারেন বাক্যটি কি বুঝতে চাচ্ছে, আপনার কাজ অনেক সহজ হয়ে যাবে।
সর্বাঙ্গে ব্যথা, ওষুধ দিব কোথা?  (সর্বাঙ্গে )  কোথায় ব্যথা — অধিকরণ কারক।
শিকারী বিড়াল গোফে চেনা যায়। (গোফে) কি দ্বারা, গোফ  দ্বারা — করণ কারক।
বোটা আলগা ফল গাছে থাকে না।  (বোটা আলগা) বোটা আলগা মানে বোটা  থেকে আলগা — অপাদান কারক।
জিজ্ঞাসিব জনে জনে। (জনে জনে) কাকে জিজ্ঞাসিব — কর্ম কারক।
তিলে তেল আছে। (তিলে) কোথায় তেল আছে? — অধিকরণ কারক।
তিলে তেল হয়। (তিলে)  কোথা থেকে তেল হয়? — অপাদান কারক।


প্রতিটি লেকচারে নতুন নতুন লিখা যুক্ত হচ্ছে, তাই কাঙ্খিত কোন লিখা না পেলে দয়া করে কিছুদিন পর আবার ভিজিট করে দেখবেন।

লিখাতে কিংবা লেকচারে কোন ভুলত্রুটি থাকলে অথবা আপনার কাঙ্খিত লিখা খুঁজে না পেলেইশিখন.কম এর ফ্যানপেইজ অথবা নিচে কমেন্ট কর

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline