দেশে ৬৪ জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি ল্যাব গড়ে তোলার কাজ প্রায়ই শেষ পর্যায়

দেশে ৬৪ জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি ল্যাব গড়ে তোলার কাজ প্রায়ই শেষ পর্যায়

দেশে ৬৪ জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি ল্যাব গড়ে তোলার কাজ প্রায়ই শেষ পর্যায় রয়েছে।

দেশের ১২৮ বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৬৪ জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি ল্যাব গড়ে তোলার কাজ শেষ পর্যায়ে। এ বছরের মধ্যেই ল্যাবগুলোয় পূর্ণাঙ্গ কাজ শুরু হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ২০১৮ সালের মধ্যে দেশে ৭০ হাজারের বেশি তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট এ্যান্ড গবর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রকল্প গুণগত প্রশিক্ষণে ৩৪ হাজার দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার কাজ চলছে। এর আগে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ৩ হাজার ৫শ’ শিক্ষার্থীকে তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তারা দক্ষতা অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে।

তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশে শুধু নেটওয়ার্কিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশ ঘটবে না। এজন্য প্রয়োজন যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধার। আধুনিকমানের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে গড়ে তোলা হবে তথ্যপ্রযুক্তি ল্যাব। এই ল্যাবে কাজ করে একজন সাধারণ ছাত্রও তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানে সমৃদ্ধ হয়ে উঠতে পারেন। চলতি বছরের মধ্যে সরকারের পরিকল্পনা রয়েছে দেশে ৭০ হাজার তথ্যপ্রযুক্তি তৈরি করা। এজন্য কয়েকটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং জেলা শহরে ল্যাব স্থাপন করা হলে তরুণ-তরুণীরা সহজেই ল্যাবগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। ল্যাবগুলো দক্ষ শিক্ষক দিয়ে পরিচালনা করা হবে। দক্ষ জনবল গড়তে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আইসিটি ক্লাবও গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। দেশ পুরোপুরি তথ্যপ্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ করতে দক্ষ জনবলের বিকল্প নেই। শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কম্পিউটার দিলেই দক্ষ জনবল সৃষ্টি হবে না। এজন্য দক্ষ শিক্ষকের প্রয়োজন হবে। প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ শিক্ষকদের আরও প্রশিক্ষণ দিয়ে সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলা হবে। তারাই মূলত ল্যাবগুলোতে ছাত্রছাত্রীদের দক্ষ করে তুলবেন। তাছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায় আইসিটি ক্লাবে দায়িত্ব পালন করবেন আর্নস্ট এ্যান্ড ইয়ং- এর টপ আপ আইটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা। অবশ্য আর্নস্ট এ্যান্ড ইয়ংয়ের শতকরা ৬০ শতাংশের কর্মসংস্থান হয়েছে। যারা এখনও কর্মসংস্থানে যেতে পারেননি তারা এ দায়িত্ব পালন করবে।

তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ২০১৮ সালের মধ্যে দেশে ৭০ হাজার তথ্যপ্রযুক্তিবিদের প্রয়োজন হবে। সরকার বিপুল তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তৈরি করতে নানা কর্মসূচী বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। নতুন করে আরও কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। দেশের ১২৮ বিশ্ববিদ্যালয় ও ৬৪ জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি ল্যাব গড়ে তোলার জন্য কাজ শুরু হয়েছে। আমরা আসলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ দিয়ে এক লাখ দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে চাই। ইতোমধ্যে ৪ হাজার তরুণ-তরুণীকে ফার্স্ট ট্র্যাক ফিউচার লিডারের (এফটিএফএল) প্রশিক্ষণ, ১০ হাজার জনকে টপ আপ আইটি এবং ২০ হাজার জনকে ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজ শুরু করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আর্নস্ট এ্যান্ড ইয়ং নামে একটি প্রতিষ্ঠান। আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের মেধা বিশ্বমানের। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর প্রমাণও পাওয়া গেছে। প্রোগ্রামিংয়ের বিশ্ব আসরে আমাদের শিক্ষার্থীরাও যাতে নিয়মিত ভাল করতে পারে সে চেষ্টা করা হবে। প্রোগ্রামিংয়ে আন্তর্জাতিক আসরে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক ভাল। জাতীয় হাই স্কুল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় ছাত্রছাত্রীরা মেধার স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছে।

২০১৮ সালের মধ্যে আমরা এই খাত থেকে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। এজন্য গাজীপুরের কালিয়াকৈরসহ দেশে ১৩ হাইটেক পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এগুলোতে ৭০ হাজার তথ্যপ্রযুক্তিবিদ প্রয়োজন হবে। তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে এসব প্রযুক্তিবিদ বেরিয়ে আসবে বলে প্রতিমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হচ্ছে প্রযুক্তি। তাই, এ খাতে দেশকে এগিয়ে রাখতে আমরা গবেষণা সংস্থা ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) সঙ্গে অধিক মাত্রায় পারস্পরিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চাই। কারণ, ২০২১ সালের মধ্যে তথ্য ও প্রযুক্তিনির্ভর দেশ গড়তে সরকার বদ্ধপরিকর। এই সরকারের আমলে তথ্য ও প্রযুক্তিসহ সব খাতে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, নিরবচ্ছিন্নভাবে ডিজিটালে রূপান্তরের জন্য সমৃদ্ধ দেশ গড়তে আগামীর অভিনব প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে আমাদের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে।

মন্ত্রণালয় সূত্র মতে, তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তৈরি করতে বিশ্বমানের প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। ভাল প্রশিক্ষণ না পেলে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ভাল কোন উন্নয়ন হবে না। বেশ কয়েকটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচী বর্তমানে চলমান রয়েছে। বিশ্বব্যাংকও প্রশিক্ষণের জন্য সহযোগিতা দিচ্ছে। একজন দক্ষ তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তৈরি হলে, তার মাধ্যমে আরও অনেক তথ্যপ্রযুক্তিবিদ তৈরি হতে পারে। তাই এবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ও ৬৪ জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি ল্যাব তৈরি করার। এসব ল্যাব থেকেও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে উঠবে।

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline