
৭ই মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের স্মরণে মাদক, জঙ্গিবাদ নিরসনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর।
বাংলার মাটিতে মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকসহ গণতন্ত্রকামী সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের ৭ই মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের স্মরণে একই ময়দানে বুধবার (৭ই মার্চ) বিকালে আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে এই কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে ক্ষমতায় আসার পর কিভাবে দেশের মানুষের উন্নতি করা যায় আমাদের সেই ভাবনা ছিল সবসময়। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। আমরা বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি। শিক্ষার মানোন্নয়নে উপজেলা পর্যন্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি।প্রাইমারি স্কুল থেকে পিএইচডি ডিগ্রি পর্যন্ত বৃত্তি-উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে ক্ষমতায় আসার পর কিভাবে দেশের মানুষের উন্নতি করা যায় আমাদের সেই ভাবনা ছিল সবসময়। আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি। আমরা বিনামূল্যে বই দিচ্ছি। প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি। শিক্ষার মানোন্নয়নে উপজেলা পর্যন্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি।প্রাইমারি স্কুল থেকে পিএইচডি ডিগ্রি পর্যন্ত বৃত্তি-উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০ লাখ মায়ের কাছে মোবাইল ছিল না। আমরা মোবাইল কিনে তাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি। দেশে ফোরজি নেটওয়ার্ক চালু করেছি। গ্রামে বসে অনলাইনে সবকিছু যাতে পায় সেজন্য পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বড় তথ্য বাতায়ন করে দিয়েছি।
শেখ হাসিনার বলেন, আমাদের উন্নয়ন সার্বিকভাবে সব মানুষের, বিশেষ করে গ্রামের মানুষের জন্য। গ্রামের মানুষের উন্নয়নের জন্য রাস্তাঘাট নির্মাণ, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতিসহ আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি যেন বিশ্ব দরবারে সম্মানজনক স্থানে পৌঁছাতে পারি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সত্তরের নির্বাচনে জয়লাভ করলেও পাকিস্তানি শাসকরা বাঙালিদের ক্ষমতায় বসতে দেয়নি। তিনি আরও বলেন, ৭ই মার্চের ভাষণে পাকিস্তানি শাসন-শোষণের কথা ছাড়াও বাঙালির মুক্তির দিক-নির্দেশনা ছিল। এই ভাষণ ছিল বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। ভাষণে বঙ্গবন্ধু একদিকে যেমন স্বাধীনতার কথা বলেছিলেন, অন্যদিকে অর্থনৈতিক মুক্তির কথাও বলেছিলেন। এসব ইতিহাস কেউ মুছে ফেলতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ যখন স্থিতিশীল হতে শুরু করে, দেশের মানুষের ভেতর যখন আস্থা-বিশ্বাস আসতে শুরু করে, তখনই আসে ১৫ই আগস্টের আঘাত। নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের। হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকেও।
১৯৭৫-এর পর ৭ই মার্চের ভাষণ বাজাতে গিয়ে দলের অনেক নেতা-কর্মী নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক সময় এই ভাষণকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ইউনেস্কো এই ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এসে দুর্নীতি ছাড়াও দেশকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে পরিণত করে। তাদের অপকর্মের জন্যই বিতর্কিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। জনগণের জন্য রাজনীতি করেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে মানুষ ও সম্পদ পুড়িয়েছে।
বিএনপি দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কোনো কাজ করেনি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়ার সরকার স্বাধীনতায়ও বিশ্বাস করে না। যুদ্ধাপরাধী, খুনিরা আর যেন ক্ষমতায় আসতে না পারে, সে বিষয়ে সজাগ থাকতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের বর্ণনা দিয়ে শেখ হাসিনা জানান, আগামী মাসে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ ধাপে ধাপে এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে ২০২১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ খ্রিস্টাব্দে উন্নত দেশে পরিণত হবে বলেও জানান তিনি। সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম তৃণমূল পর্যায়ে তুলে ধরতেও নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
এর আগে, সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। জনসভা উপলক্ষ্যে বড় ধরনের প্রস্তুতি নেয় ক্ষমতাসীন দলটি। সমাবেশে যোগ দিতে বেলা ১২টা থেকেই মানুষ জড়ো হতে শুরু করে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। সকাল থেকেই নেতা-কর্মীরা দলীয় নৌকা প্রতীক, বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি, ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে জনসভাস্থলে আসতে থাকেন।
আরো পড়ুন: