বিসিএস ও ব্যাংক লিখিত প্রস্ততি:
পর্যটন_শিল্প:
::আমাদের দেশে বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার রয়েছে, পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন রয়েছে, রয়েছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়। শৈবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন, রামুর বৌদ্ধ মন্দির, হিমছড়ির ঝরনা, ইনানী সমুদ্র সৈকত, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ, টাঙ্গুয়ার হাওড়, টেকনাফ সহজেই পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সবুজ পাহাড়ি অঞ্চল দেখে কেউ কেউ আত্মভোলা হয়ে যায়। আবার আমাদের দেশে অনেক ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানও রয়েছে। বগুড়ার মহাস্থানগড়, নওগাঁর পাহাড়পুর, দিনাজপুরের কান্তজীর মন্দির, ঢাকার লালবাগ কেল্লা, আহসান মঞ্জিল, বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ, খান জাহান আলীর মাজার, রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘর, কুষ্টিয়ার লালন সাঁইয়ের মাজার, রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ি শুধু দেশীয় নয়, বরং বিদেশি পর্যটক ও দর্শণার্থীদের নিকটও সমান জনপ্রিয় এবং সমাদৃত।
উৎসঃ দৈনিক ইত্তেফাক।২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫।
::বর্তমানে বিশ্বব্যাপী পর্যটকের সংখ্যা প্রায় ৯০ কোটি। ধরা হচ্ছে ২০২০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা দাঁড়াবে ১৬০ কোটি। পর্যটন বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিপুল সংখ্যক পর্যটকের প্রায় ৭৩% ভ্রমণ করবেন এশিয়ার দেশগুলোতে।২০১৮ সালের মধ্যে এ শিল্প থেকে ২৯.৭০ কোটি লোকের কর্মসংস্থান হবে, যেটি বিশ্ব অর্থনীতিতে অবদান রাখবে ১০.৫%।
উৎসঃ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা।
::পর্যটন সক্ষমতা বা প্রতিযোগিতার (টিটিসিআই) দিক থেকে ১৪৪টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৮। পর্যটনকে কেন্দ্র করে অর্থনীতির বিকাশ ঘটিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশ প্রমাণ করেছে ‘পর্যটন গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক শক্তি।
উৎসঃ দৈনিক ইত্তেফাক।২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫।
::বিশ্বের কিছু দেশের সোট জাতীয় আয়ে পর্যটন শিল্পের অবদানঃ (%)
দেশ
——–অবদা
মালদ্বীপ
-১০০(প্রায়)
সিঙ্গাপুর
–৭৫
তাইওয়ান
৬৫
হংকং
——৫৫
ফিলিপাইন
————-৫০
নেপাল
—-৪০
থাইল্যান্ড
৩০
মালয়েশিয়ার বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ৭% ই আসে পর্যটন খাত থেকে।
উৎসঃ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা।
::২০১৩ সালে বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পে ১২ লাখ ৮১ হাজার ৫০০ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, যেটি বাংলাদেশের সর্বমোট কর্মসংস্থানের ১.৮%। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের ওপর প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ২৭ লাখ ১৪ হাজার ৫০০টি চাকরির সৃষ্টি হয়েছে, যেটি সর্বমোট কর্মসংস্থানের ৩.৭%।এ বছরের শেষে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান দাঁড়াবে ৩৮ লাখ ৯১ হাজার, যেটি বাংলাদেশের সর্বমোট কর্মসংস্থানের ৪.২%। এর ফলে বাংলাদেশের এ শিল্পে বার্ষিক কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধি ২.৯%।
উৎসঃ ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের (ডব্লিওটিটিসি) ২০১৪ সালের রিপোর্ট।
::পর্যটন শিল্পের জিডিপিতে প্রত্যক্ষ অবদানের ভিত্তিতে ১৭৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের অবস্থান ১৪২তম।
উৎসঃ দৈনিক ইত্তেফাক।২৭ ডিসেম্বর, ২০১৫।
::তুলনামূলক কম ব্যয়বহুল হওয়ায় পশ্চিমা ভ্রমণবিলাসীদের কাছে ইন্দোনেশিয়ার অবকাশ কেন্দ্র বালি অথবা থাইল্যান্ডের চমৎকার বিকল্প হতে পারে বাংলাদেশ।
উৎসঃ নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন, ২০০৬।
::পর্যটন শিল্প সম্পর্কে অভিজ্ঞদের মতে, আধুনিক ট্যুরিস্ট স্পট হিসেবে কক্সবাজারকে গড়ে তোলা হলে পর্যটকের সংখ্যা বিশেষ করে বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা অন্তত ১০ গুণ বাড়বে। ফলে রাজস্ব আর্ন দাঁড়াবে ন্যূনতম ২০ হাজার কোটি টাকা।
উৎসঃ দৈনিক জনকন্ঠ।১০ জানুয়ারি, ২০১৬।
::পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সরকারেরও আছে নতুন পরিকল্পনা। সরকার ইতোমধ্যে সারাদেশে ৮০০০ পর্যটন স্পট নির্ধারণ করেছে। সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকা টেকনাফ নিয়ে নতুন করে ভাবছে সরকার। টেকনাফে পর্যটকদের জন্য অপার সৌন্দর্যের সমুদ্র সৈকত ছাড়াও রয়েছে নাফ নদীর পাড় দিয়ে পাহাড়ের অপরূপ রূপ দেখার সুযোগ। টেকনাফকে নিয়ে নতুন যে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে এর নামকরণ করা হয়েছে প্রিপারেশন অব ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান অব কক্সবাজার টাউন এ্যান্ড সী বীচ আপ টু টেকনাফ শীর্ষক প্রকল্প।
উৎসঃ দৈনিক জনকন্ঠ।১০ জানুয়ারি, ২০১৬।
::২০১৫ সালে দেশের জিডিপিতে পর্যটন খাতের প্রত্যক্ষ অবদান ছিল ৪০৭.৬ বিলিয়ন টাকা। যেটি জিডিপির ২.৪%। এ বছর জিডিপিতে তা অবদান রাখবে ৪২৮.৯ বিলিয়ন টাকা। ২০২৬ সালে পর্যটন খাতে প্রত্যাশিত প্রত্যক্ষ জিডিপি দাঁড়াবে ৭৩৮.১ বিলিয়ন টাকা। আর আগামী দশ বছর পর ১৫৯৬ বিলিয়ন টাকার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদান রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।
উৎসঃ ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের (ডব্লিউটিটিসি) ২০১৬ সালের বার্ষিক গবেষণা প্রতিবেদন।
::বাংলাদেশে এ মুহূর্তে ১১ লাখ ৩৮ হাজার ৫০০ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পর্যটন খাতে সম্পৃক্ত। ২০২৬ সালে বাংলাদেশে এ খাতে শুধু প্রত্যক্ষভাবেই ১২ লাখ ৫৭ হাজার লোক কাজ করবে।বিশ্বের ১৮৪টি পর্যটন সমৃদ্ধ দেশের মধ্যে র্যাংকিংয়ে ২০১৫ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ৬০ নম্বরে। দশ বছর পর বাংলাদেশ ১৮তম অবস্থানে চলে আসবে।
উৎসঃ ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিলের (ডব্লিউটিটিসি) ২০১৬ সালের বার্ষিক গবেষণা প্রতিবেদন।
::বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড কিংবা সিঙ্গাপুরের কাছাকাছি এগিয়ে নিতে ন্যাশনাল ট্যুরিজম কাউন্সিল একটি ট্যুরিজম মাস্টার প্লান (টিএমপি) তৈরি করেছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৫ বছরের স্বল্প মেয়াদি, ১০ বছরের মধ্য মেয়াদি এবং ২০ বছরের দীর্ঘ মেয়াদি ধাপে মনোরম এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়নসহ বহুমাত্রিক কাজ শুরু হবে। পরিকল্পনায় থাকছে পর্যটনের কৌশল নির্ধারণ, নতুন নতুন পর্যটন এলাকা চিহ্নিতকরণ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, চাকরির ক্ষেত্র তৈরি, আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশের উন্নতি। পরিকল্পনা মতে চট্টগ্রাম, সিলেট, কক্সবাজার, উত্তরবঙ্গ, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশালকে আলাদা ট্যুরিজম জোনে ভাগ করা হবে। সেখানকার ঐতিহ্যবাহী ও পর্যটন স্থাপনাগুলোর পাশাপাশি অপ্রচলিত স্থানগুলোও চিহ্নিত করে তা মানদন্ডে নিয়ে আসা। তাছাড়া সবকটি সাফারি পার্ককে পর্যটন খাতে সংযুক্ত করা।
উৎসঃ বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড।
::বাংলাদেশে এ মুহূর্তে ইতিহাস, ঐতিহ্য, জমিদারি স্থাপনা, ধর্মীয় স্থাপনা নির্ভর ঐতিহ্যবাহী ৭২৮টি স্থাপনা রয়েছে। এর মধ্যে ট্যুরিজম বোর্ডের আওতায় আছে ৩০-৪০টি স্থাপনা। অবশিষ্ট সম্ভাবনাময় এলাকাগুলো এখনো অন্ধকারেই রয়ে গেছে।
উৎসঃ দৈনিক আমাদের সময়।১ এপ্রিল ২০১৬।
::২০১৫ সালে পরোক্ষভাবে ২৩.৪৬ লাখ মানুষ পর্যটন শিল্পে কাজ করে। ২০২৬ সালে প্রত্যাশিত কাজ দাঁড়াবে ২৮.৯৪ লাখ। যেটি মোট চাকরিজীবীর ৪.১% হবে। আর বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ২০১৫ সালে বিনিয়োগ ছিল ৬১ বিলিয়ন টাকা। যেটি মোট বিনিয়োগের ১.২%। ২০২৬ সালে ১৫১.৯ বিলিয়নে দাঁড়াবে। যেটি মোট বিনিয়োগের ১.৭%।
উৎসঃ ডব্লিউটিটিসি।
::সারাবিশ্বে প্রায় ১০০ মিলিয়নের বেশি মানুষ তাদের জীবন-জীবিকার জন্য পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভরশীল।২০২০ সাল নাগাদ পর্যটন থেকে প্রতিবছর ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্ন হবে।
উৎসঃ বিশ্ব পর্যটন সংস্থা।
::২০১৮ সাল নাগাদ জিডিপিতে পর্যটন খাতের অবদান ১০৯৯.৩ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এটা হবে বৈদেশিক আয়ের ৫.৩% এবং ২০১৮ সালে পর্যটন খাতে কর্মসংস্থানের সংখ্যা বেড়ে ৩৭.৯১ লাখে উন্নীত হবে।বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের রয়েছে অমিত সম্ভাবনা। প্রায় প্রতি বছর বাংলাদেশে পর্যটকদের সংখ্যা প্রতিদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং আবাসন সুবিধা, অবকাঠামো সংস্কার, উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হলে ২০২১ সালে বাংলাদেশের পর্যটন খাত দেশের অন্যতম সমৃদ্ধশালী শিল্পে পরিণত হবে।
উৎসঃ বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন।
::সার্কভুক্ত দেশগুলোতে পর্যটন শিল্প হতে বার্ষিক আয়ঃ (মিলিয়ন ডলার)
দেশ
-আয়
ভারত
———–১০৭২৯
মালদ্বীপ
——৬০২
শ্রীলঙ্কা
——–৩৮৫
পাকিস্তান
——২৭৬
নেপাল
———-১৯৮
বাংলাদেশ
—-৭৬.১৯
উৎসঃ ওয়ার্ল্ড ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কাউন্সিল।
::বাংলাদেশে পর্যটন খাত থেকে ১৯৯৯ সালে ২৪৫.১৯ কোটি টাকা আর্ন আসে। এর ঠিক ১০ বছরের মাথায় অর্থাৎ ২০০৯ সালে এ খাতের আর্ন তিন গুণ বেড়ে ৬১২.৪৫ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এর পরের পাঁচ বছরও একই হারে পর্যটন খাত থেকে আর্ন বেড়েছে। ২০১৩ সালে এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৬ হাজার ৩০ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ২০১২ সালে শুধু পর্যটন শিল্প দিয়ে ১০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার রাজস্ব পেয়েছে।
উৎসঃ বাংলাদেশ ব্যাংক ও পর্যটন করপোরেশন।
::মালয়েশিয়ার জাতীয় অর্থনীতিতে পর্যটন শিল্পই বছরে অবদান রাখছে প্রায় ২০০০ কোটি ডলার। ২০১৫ সালে ২৮.৮ মিলিয়ন পর্যটককে আকর্ষণের লক্ষ্য নেয় থাইল্যান্ড। এই অঙ্ক ছাড়িয়ে গত বছর ২৩ ডিসেম্বরেই ২৯ মিলিয়ন পর্যটক টানতে সমর্থ হয় দেশটির পর্যটন বিভাগ। নেপালেরও জাতীয় আয়ের ৪০% এর উৎস পর্যটন খাত।
উৎসঃ দৈনিক আমাদের সময়।১ এপ্রিল ২০১৬।
আরো পড়ুন: