১৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সতর্কবাণী মঞ্জুরি কমিশন

বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষা তদারককারী সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ১৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করে এক বিজ্ঞপ্তি জারী করে এগুলোতে ভর্তির বিষয়ে শিক্ষার্থিীদের সচেতন হবার পরামর্শ দিয়েছে।

এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান চিত্র তুলে ধরে কমিশন বলছে, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পারবর্তীতে কোনো জটিলতায় পড়লে তার দায়ভার কমিশন নেবে না।

কয়েক বছর আগে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করা হলেও আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে এরা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম বলেছেন, গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে যাতে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা সচেতন হতে পারে।

“এখন আমরা খুব খারাপ অবস্থার ভিতরে পড়েছি। যদি জনগন সচেতন না হয় তাহলে কী করা যাবে?” প্রশ্ন তোলেন অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম।

কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সার্টিফিকেট জটিলতায় পড়েছে। কারণ তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, যদিও উচ্চ আদালতের মাধ্যমে স্থগিতাদেশ নিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যলয়গুলো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে কার্যক্রম চালালেও এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সনদপত্র কোনো কাজে লাগছে না।

গণবিজ্ঞপ্তিতে নাম উল্লেখ করা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে – অনুমোদন ছাড়া একাধিক ক্যাম্পাস পরিচালনা করা, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর মধ্যে দ্বন্দ্ব এবং অনুমোদনহীন কোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো।

এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে ইবাইস ইউনিভার্সিটি নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ঢাকার উত্তরা এলাকায় প্রতিষ্ঠানটির একটি ক্যাম্পাস থাকলেও বেশ কয়েকবছর আগে ধানমন্ডি এলাকায় আরেকটি ক্যাম্পাস খোলা হয়েছিল।

ইবাইস ইউনিভার্সিটির উপাচার্য জাকারিয়া লিংকন দাবী করেন, সে ক্যাম্পাস খোলার সাথে তার কোন সম্পৃক্ততা ছিল না। তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন।

লিংকন বলেন, “আমার একক নামে সরকার লাইসেন্স দিয়েছে। ট্রাস্টি বোর্ড নিয়ে কোন দ্বন্দ্ব নাই। কোন একটা পক্ষ এসে যদি মামলা করে এবং বিল্ডিং ভাড়া নিয়ে ইউনিভার্সিটি চালু করে দেয়, এবং সরকারের পক্ষ থেকে কেউ যদি তাকে এন্টারটেইন করে, সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার থাকে না।”

তিনি অভিযোগ করেন, তার নামে লাইসেন্স থাকলেও জয়েন্ট স্টক কোম্পানি একই নামে অন্য আরেকটি পক্ষকে ট্রাস্টি বোর্ডের রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে। এনিয়ে আদালতে মামলা চলছে।

ইবাইস ইউনিভার্সিটির মতো এ রকম আরো কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ-এর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্নকভাবে ব্যহত হচ্ছে সেসব প্রতিষ্ঠানে।

বাংলাদেশে বর্তমানে ৯৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। শিক্ষাবিদরা বলছেন, কোন প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম থাকলে কর্তৃপক্ষশুধু গণবিজ্ঞপ্তি জারী করে দায়মুক্ত হতে পারে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বেশ কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, রাজনৈতিক প্রভাব এবং ব্যবসায়িক মনোবৃত্তির কারণে কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ভালো মতো গড়ে উঠতে পারেনি।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বলছে, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়ম হলে সেটি তদন্ত করে তারা প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের কাছে। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের।

বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে চায়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে একজন কর্মকর্তা অনানুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে বেশ কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়া হলেও আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কোনো ধরনের রাজনৈতিক প্রভাবের বিষয়টি খারিজ করে দিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

 

 

 

আরো পড়ুন:

কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদের বৈধতা প্রশ্নে অনুষ্ঠিত সভা শেষ হয়েছে

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি ফি কমানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের ধর্মঘট

রহমতুল্লাহ মডেল হাই স্কুলে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় ৭৪ শতাংশ পাস করেছে

গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান ডিপ্লোমা পরীক্ষা আগামী ১৯শে ডিসেম্বর শুরু হবে

এসএসসিএইচএসসি ফরম পূরণে বাড়তি ফি ফেরত না দিলে ম্যানেজিং কমিটির কার্যক্রম স্থগিত: হাই কোর্ট

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline