উচ্চ মাধ্যমিক এইচএসসি প্রাণিবিজ্ঞান : হাইড্রা

 

হাইড্রা

প্রারম্ভিক আলোচনা: অধ্যায়টা গুরুত্বপূর্ণ। এ অধ্যায় থেকে প্রশ্ন প্রায়ই আসে।

অধ্যায় সারবস্তু:

হাইড্রার শ্রেণিবিন্যাস:

পর্ব = Cnidaria (দেহে নিডোব্লাস্ট আছে)

শ্রেণী = Hydrozoa

বর্গ = Hydroida

গোত্র = Hydridae (গোত্র-এর নামের শেষে “idae” থাকে)

গণ = Hydra

প্রজাতি = Hydra vulgaris

১. হাইড্রা নিডারিয়া (Cnidaria) পর্বের প্রাণী (এদের নিডোব্লাস্ট আছে, তাই থেকে নিডারিয়া)।

২. হাইড্রা মাংসাশী। (এর মানে এরা মাংস খায়, এমন না, বলা যায় এরা অন্য প্রাণীকে খাদ্যরূপে গ্রহণ করে)

৩. ব্যাপন প্রক্রিয়ায় শ্বসন ও রেচন সম্পন্ন করে।

৪. হাইড্রা মিঠাপানির প্রাণী। পানিতে অবস্থিত কোন কঠিন বস্তুর গায়ে এটি লেগে থাকে।

৫. Hydra -এর দেহের একপ্রান্ত খোলা এবং অন্য প্রান্ত বন্ধ।

৬. হাইড্রার দেহ অরীয় প্রতিসম।

৭. হাইড্রা দ্বিস্তরবিশিষ্ট প্রাণী। এক্টোডার্ম এবং এন্ডোডার্ম। এক্টোডার্ম থেকে এপিডার্মিস (ত্বক) এবং এন্ডোডার্ম থেকে গ্যাস্ট্রোডার্মিস (উৎপন্ন হয়।

 

৮. দ্বিস্তরী ও ত্রিস্তরী প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য:

তুলনীয় বৈশিষ্ট্য দ্বিস্তরী প্রাণী ত্রিস্তরী প্রাণী
মেসোগ্লিয়ার উপস্থিতি থাকে এই স্তর মেসোডার্ম-এ পরিণত হয়।
ভ্রূণস্তরের পরিণতি কোষগুলো কোন কলা বা অঙ্গ গঠন করতে পারে না। ভ্রূণস্তরের কোষগুলো বিভিন্ন কলা, অঙ্গ ও অঙ্গতন্ত্র গঠন করে।
নালী দেহাভ্যন্তরে একটিমাত্র নালী দেখা যায়। দেহপ্রাচীর ও পৌষ্টিক নালী – এ দু’টি নালী থাকে
দেহ গহবর সিলেন্টেরন সিলোম

৯. হাইড্রার নিডোব্লাস্ট এপিডার্মিস স্তরে থাকে।

১০. এপিডার্মিস স্তর (এক্টোডার্ম)-এ থাকে = পেশী-আবরণী কোষ, ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ, নিডোব্লাস্ট, গ্রন্থি কোষ, স্নায়ূ কোষ, জনন কোষ।

১১. গ্যাস্ট্রোডার্মিস স্তর (এন্ডোডার্ম)-এ থাকে = পুষ্টি (নিউট্রিটিভ) কোষ, গ্রন্থি কোষ, সংবেদী কোষ

১২. অপাচ্য ও বর্জ্য পদার্থ মুখগহ্বর দিয়েই বাইরে নিষ্ক্রান্ত হয়।

১৩. সিলেন্টেরন বা গ্যাস্ট্রোভাসকুলার গহ্বর-এ বহিঃকোষীয় ভাবে খাদ্যবস্তু পরিপাক হয়।

১৪. নিডারিয়া পর্বে মোট ২৩ ধরনের নেমাটোসিস্ট রয়েছে। তবে হাইড্রাতে চার ধরনের নেমাটোসিস্ট পাওয়া যায়।

১৫. বৃহত্তম নেমাটোসিস্ট = স্টিনোটিল বা পেনিট্যান্ট

১৬. স্টিনোটিল-এ হিপনোটক্সিন নামক বিষাক্ত রস থাকে।

১৭. ভলভেল্ট-এর সূত্রক কর্ক-স্ক্রুর মত অনেকগুলো প্যাঁচের সৃষ্টি করে।

১৮. স্ট্রেপপলিন গ্লুটিন্যান্ট এর দেহ সর্পিলাকারে সজ্জিত কাঁটাযুক্ত। (স্ট্রেপটো = প্যাঁচানো)

১৯. স্টেরিওলিন গ্লুটিন্যান্ট ক্ষুদ্রতম নেমাটোসিস্ট। (স্টেরিও = সলিড; যেহেতু অস্পষ্ট অতি ক্ষুদ্র কাঁটাযুক্ত)

২০. ভলভেল্ট ও অন্যান্য নেমাটোসিস্ট শিকারকে ধরে রাখতে সাহায্য করে, গ্লুটিন্যান্ট নেমাটোস্টি গ্লু বা আঠালো রস ক্ষরণ করে। তারপর স্টিনোটিল “হিপনোটক্সিন” দিয়ে শিকারকে অবশ করে। পরে মুখছিদ্র দিয়ে তা গ্রহণ করে।

২১. একবার নিক্ষিপ্ত হলে নেমাটোসিস্টের সূত্রককে আর নিডোব্লাস্টে ফিরিয়ে আনা যায় না।

২২. গ্যাস্ট্রোডার্মিস-এর পুষ্টি কোষ কে দু’ভাগে ভাগ করা যায়:

· ফ্ল্যাজেলীয় কোষ

· ক্ষণপদীয় কোষ

২৩. হাইড্রার চলন:

· লুপিং = হামাগুড়ি

· সমার-সল্টিং = ডিগবাজী

· গ্লাইডিং = অ্যামিবয়েড চলন

২৪. হাইড্রার প্রধান খাদ্য ক্ষুদ্র ক্রাস্টাসীয় সন্ধিপদী। খাদ্য তালিকা: পতঙ্গের লার্ভা, সাইক্লপস ও ড্যাফনিয়া (ক্রাস্টাসীয় সন্ধিপদী প্রাণী), ছোট ছোট কৃমি, খণ্ডকায়িত (কেঁচো টাইপ) প্রাণী (Annelids), মাছের ডিম ইত্যাদি।

২৫. সিলেন্টেরনে বহিঃকোষীয় পরিপাক ঘটলেও হাইড্রার দেহে দু’প্রকার পরিপাক-ই ঘটে: বহিঃকোষীয় পরিপাক এবং অন্তঃকোষীয় পরিপাক।

২৬. যখন দু’টি ভিন্ন প্রজাতিভুক্ত জীব ঘনিষ্ঠভাবে সহাবস্থানের ফলে পরস্পরের কাছ থেকে উপকৃত হয়, তখন এই সম্পর্ককে মিথোজীবিতা বলে।

(যদি একটি প্রজাতি উপকার পায় আর আরেক প্রজাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন ওই সম্পর্ককে পরজীবিতা বলে। যেমন, ম্যালেরিয়ার পরজীবী, Plasmodium vivax)

২৭. Zoochlorella নামক শৈবাল এবং Chlorohydra virdissima হাইড্রার মাঝে মিথোজীবী সম্পর্ক দেখতে পাওয়া যায়।

§ শৈবাল যেভাবে উপকৃত হয়:

o হাইড্রার গ্যাস্ট্রোডার্মাল (অন্তঃকোষীয়) পেশী-আবরণী কোষে আশ্রয় পায়। (স্বাভাবিক ভাবে মনে হতে পারে যে এন্ডোডার্মিসে শৈবাল আশ্রয় নেয়, কিন্ত ব্যাপারটা তা নয়।)

o হাইড্রা উদ্ভূত CO2 এবং নাইট্রোজেনজাত বর্জ্য পদার্থ ব্যবহার করে।

§ হাইড্রা যেভাবে উপকৃত হয়:

o শৈবালের উদ্বৃত অংশ গ্রহণ করে হাইড্রা শর্করার চাহিদা মেটায়।

o শ্বসনে সৃষ্ট CO2 এবং বিপাকে সৃষ্ট বর্জ্য পদার্থ শৈবাল গ্রহণ করে, এবং শৈবাল নির্গত O2 হাইড্রা গ্রহণ করে।

২৮. গ্যাস্ট্রোডার্মাল গ্রন্থিকোষ পরিপাকের জন্য ক্ষরণ করে = মিউকাস এবং এনজাইম

২৯. দেহের প্রয়োজনে যে কোন কোষ সৃষ্টি হয় ইন্টারস্টিশিয়াল কোষ থেকে।

৩০. পরজীবীদের পুষ্টির জন্য এদের দেহের বিভিন্ন অঙ্গের সামান্য বা আমূল পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু মিথোজীবীদের অঙ্গের তেমন পরিবর্তন ঘটে না।

 

৩১. সিলেন্টেরন ও সিলোম-এর পার্থক্য:

তুলনীয় বিষয় সিলেন্টেরন সিলোম
প্রাপ্তিস্থান নিডারিয়া পর্বের প্রাণিদের দেহের অভ্যন্তরে থাকা গহ্বর ত্রিস্তরী প্রাণীর দেহপ্রাচীর ও পৌষ্টিকনালীর মধ্যবর্তী ফাঁকা অঞ্চল
ঘিরে থাকা কোষ গ্যাস্ট্রোডার্মাল কোষ পেরিটোনিয়াম কোষ (অপ্রকৃত সিলোমে থাকে না)
পরিপাক এখানে ঘটে এখানে ঘটে না
অন্তঃস্থ অঙ্গ থাকে না বিভিন্ন অঙ্গ থাকে
অন্তঃস্থ পদার্থ খাদ্য ও পানি সিলোমরস

প্রাণিবিজ্ঞান সকল অধ্যায় দেখতে এখানে যান

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline