
দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর একটি দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছিল। ১৮ ডিসেম্বর ২০১৬ তে স্থাপিত ভাস্কর্য অর্থাৎ ৬ মাস যেতে না যেতেই সেটা গত ২৫ মে ২০১৭ রাতে অপসারণ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টে মূলভবনের সামনে ফোয়ারার মধ্যে এটি স্থাপন করা হয়েছিল। ভাস্কর্যটি নির্মাণ করছেন ভাস্কর মৃণাল হক।
গ্রিক দেবী থেমিস ভাস্কর্যের বর্ণনা:
ভাস্কর্যটি একজন নারীর। তিনি দাঁড়িয়ে আছেন। তার ডান হাতে তলোয়ার বাম হাতে দাঁড়িপাল্লা। তলোয়ারটি নিচের দিকে নামানো। দাঁড়িপাল্লা উপরে ধারণ করে আছেন।
এটি বিচার বিভাগের প্রতীক হিসেবে কয়েকটি দেশে স্থাপিত। তবে অন্যান্য দেশে স্থাপিত ভাস্করর সাথে আমাদের দেশের ভাস্কর্যের একটু পার্থক্য রয়েছে। অন্যান্য দেশে ভাস্কর্যের গায়ে স্কার্ফ পরা থাকলেও এখানে শাড়ি পরানো হয়েছে। তাছাড়া অন্যান্য দেশে পায়ের নিচে সাপ থাকলেও এখানে এটি বাদ দেয়া হয়েছে।
এই ভাস্কর্য কী বার্তা দিচ্ছে
গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্য গ্রিকদের ন্যায় বিচারের প্রতিক হিসেবে বিবেচনা করা হতো। উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, রোমানদের কাছে এটি ন্যায় বিচারের দেবী। গ্রিক মিথ অনুযায়ী গ্রিক ন্যায় বিচারের দেবীর অনুরূপ।
দেবীর চোখ বাধা রয়েছে। এর অর্থ হলো-একজন বিচারক পক্ষপাতিত্ব করবেন না। তার কাছে সবাই সমান।
দেবীর বাম হাতে দাঁড়িপাল্লা আছে। এর অর্থ হলো- একজন বিচারক সবার মাঝে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন।
দেবীর ডান হাতে রয়েছে তলোয়ার। এর অর্থ হলো-অন্যায় কারীকে একজন বিচারক দণ্ড প্রদান করবেন।
ভাস্কর্য আর মূর্তির পার্থক্য দেখে নিন এই পোস্ট থেকে
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রতিষ্ঠাকাল হতে দাঁড়িপাল্লা ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের মনোগ্রামে ব্যবহার করা হয়। ফলে দাঁড়িপাল্লা অন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত। দাঁড়িপাল্লা ন্যায় বিচার তথা সুপ্রীম কোর্টের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হওয়ার পাশাপাশি যদি কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান রা রাজনৈতিক সংগঠনের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয় তাহলে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে।’
বি:দ্র: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দলীয় প্রতীক হলো দাঁড়িপাল্লা। তবে হাইকোর্টের এক রায়ে দলটির নিবন্ধন বাতিল করা হয়েছে।