সারাদিন কাজ, রাতে বাড়ি ফিরে ঘুম, সপ্তাহে একবার বাইরে বের হওয়া, খানিকটা খুনসুটি- হাসাহাসি- কি নেই আপনার জীবনে। তাও কেন যেন প্রতিদিন হঠাৎ করেই মাথার ভেতরে একটা ছোট্ট ঘুনপোকা কুরে কুরে খেতে থাকে আপনাকে আর বলতে থাকে- নাহ! কিচ্ছু ভালো লাগে না। কিন্তু কেন? কখনো কি নিজেকে প্রশ্ন করেছেন আপনি কেন এমনটা হয় আপনার সাথে? একবার শান্তভাবে ভাবুন। প্রতিদিন সকালবেলায় ঠিক কি করেন আপনি? ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করে নাস্তা আর বাকীসব গোছগাছ শেষ করে অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়া। এইতো আপনার দৈনন্দিন সকালবেলার কাজের ফিরিস্তি? কিন্তু যার দিনের প্রথমটাই এতটা একঘেয়েভাবে শুরু হয়, তার জীবনের ভালোলাগাটা থাকবে কোথায়? আর কীভাবেই বা থাকবে?
আর তাই মেনে চলুন এই কয়েকটি ব্যাপার। কিছু ছোট্ট কাজ কর সকালবেলায়। আর দেখুন কত সহজেই না আপনার পুরো দিনটা এক নিমিষে পাল্টে যায় আর ভরে যায় আনন্দে।
১. দু কলম লিখুন
সকালের শান্ত পরিবেশে সবার মনেই কিছু না কিছু কথা ভেসে ওঠে। নিজের জীবন নিয়ে, নিজেকে নিয়ে, ভালোবাসার মানুষ নিয়ে, জীবনের ইতিবাচক প্রাপ্তিগুলে নিয়ে। কিংবা সেটা হয়তো শুধুই এক টুকরো কবিতা বা গল্পের কয়েক লাইন। তবে যাই হোক না কেন, বসে পড়ুন কলম নিয়ে আর আগজে ছড়িয়ে দিন নিজের মনের ভাব অন্তত পাঁচ মিনিটের জন্যে ( লাইফহ্যাক )। দেখুন, সারাটা দিন কত ভালো লাগে আপনার।
২. শরীরচর্চা আর যোগব্যায়াম কর
সকালের শুরুতে খানিকটা শরীরচর্চা আপনার মন আর শরীরকে চনমনে করে দিতে প্রচন্ডভাবে সাহায্য করবে। আর সেই সাথে যদি যোগ হয় যোগব্যায়াম তাহলে তো আর কথাই নেই ( লাইফহ্যাক )। প্রফুল্লতার সাথে সাথে মনের প্রশান্তিও ফিরে আসবে এ পদ্ধতিতে। সকালে ঘুম থেকে উঠে খানিকটা পানি পান করে নিয়ে যোগব্যায়ামের দু-একটা আসন আর খানিকটা ব্যায়াম কিন্তু সত্যিই আনন্দে ভরিয়ে দিনে পারে আপনার পুরো দিন।
৩. গুরুত্বপূর্ণ কাজ সারুন
সকালে ঘুম থেকে উঠেই কোন দরকারী কাজ সারাটা মস্তিষ্কের জন্যে অনেকটা বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার মতন হলেও এটা কিন্তু আপনাকে দেবে সারাদিনের জন্যে চিন্তামুক্ত থাকার ভালোলাগাও। আর কে না জানে যে সকালবেলায় মানব মস্তিষ্ক প্রচন্ড ভালো কাজ করে বাকী সময়গুলোর চাইতে? এছাড়াও এ গুরুত্বপূর্ণ কাজের তালিকায় থাকতে পারে পুরোন কোন বিরক্তিকর আর কষ্টদায়ক স্মৃতি বিজড়িত জিনিসকে ফেলে দেওয়া, ভালোবাসার মানুষকে মনে করা কিংবা কাউকে ধন্যবাদ বলাটাও। সকালে উঠে এসব ছাড়াও শিখে নিতে পারেন খানিকটা বিদেশী শব্দও। হতে পারে সেটা কোন একটি শব্দ। তাও নিজের এই শিখতে পারার আনন্দটা আপনাকে ভারো রাখবে পুরোটা দিনজুড়ে তা নিশ্চিতভাবে বলে দেওয়া যায় ( লাইফহ্যাক )।
৪. হাসি
জীবনের চলার পথে অনেক বন্ধুই হয়তো আপনাকে কষ্ট দিয়ে কিংবা কাঁদিয়ে চলে গিয়েছে। কিন্তু আপনার ঠোঁট আর সেই ঠোঁটের হাসি হচ্ছে এমনই এক জিনিস যেটা জীবনের সবটা ক্ষণে হয়ে থাকবে আপনার সবসময়কার বন্ধু। চার্লস ডারউইন প্রথম এই ধারনা দিয়েছিলেন যে আমাদের আবেগ আমাদের অনুভূতিকে প্রভাবিত করে ( সাইন্টিফিক আমেরিকান )। নেদারল্যান্ডসের ইউনিভার্সিটি অব গোরিংগেনের মনরোগবিশেষজ্ঞ জুডিথ গ্রোব বলেন – “ মুখ যখন আবেগ প্রকাশ করতে পারেনা, তখন শরীর অন্যভাবে সেটা প্রকাশ করে। “ ( সাইন্টিফিক আমেরিকান )। আর কে জানে, হতে পারে সেটা খারাপ কোন উপায়ে? আর তাই সকালে উঠেই হাসুন। ভালো থাকবেন তাহলে সারাদিন।
৫. পোষা প্রাণী
ভালোবাসার জন্যে, আপনার জীবনকে সুন্দর করে সাজিয়ে তোলার জন্যে কোন মানুষ আপনাকে সাহায্য না করলেও এদিক দিয়ে সবসময়েই আপনাকে হাত বাড়িয়ে দেবে পোষা প্রাণীরা। পোষা প্রাণীরা আপনার শরীর ভালো রাখবে, মন ভালো রাখবে, এমনকি পোষা প্রাণীদের সাথে সময় কাটালে সেটা শরীরের বিষাক্ত রাসায়নিক হরমোনকেও প্রতিরোধ করে ( হাউ স্টাফ ওয়ার্কস )।