শিক্ষকরাই প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে শিক্ষক সমাজে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

‘শিক্ষকরাই প্রশ্নফাঁসের সাথে জড়িত’ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন শিক্ষকরা। শিক্ষকদের দোষারোপ করে শিক্ষামন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যে ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছেন শিক্ষকসমাজ। আজ সোমবার (১৮ই ডিসেম্বর) বাংলদেশ শিক্ষক-কর্মচারি সংগ্রাম লিয়াঁজো কমিটির এক সভায় শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। সভায় সভাপতিত্ব করেন ড. নূর মোহাম্মদ তালুকদার।

সংগঠনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।

গতকাল (১৭ ডিসেম্বর) শিক্ষাখাতে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এক সভাশেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার বলেন, ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসে সরকারি লোকজন জড়িত।’ একই সভাশেষে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষকরাই আসল প্রশ্নফাঁসকারী।’  গতকালই দৈনিকশিক্ষাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রচার হয়। এমন প্রেক্ষাপটে শিক্ষক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আজ সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) এক সভায় মিলিত হয়ে মন্ত্রীর মন্তব্যের নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেন।

‘দুর্নীতি দমন কমিশন বলছে প্রশ্নফাঁসে সরকারি লোকজন জড়িত। শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন শিক্ষকরা জড়িত। দায় কার?’ দোষী যেই হোক, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে লিয়াঁজো কমিটি।

সভায় নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস নতুন কোন ঘটনা নয়। এটি অতীতেও ছিল। তবে কয়েক বছর যাবৎ এর মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। সম্প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, শিক্ষামন্ত্রী কথায় কথায় শুধু শিক্ষকদের দোষারোপ করে বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছেন। ফলে সারাদেশের শিক্ষকগণ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছেন। অথচ গতকাল (১৭ ডিসেম্বর) দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার বলেছেন প্রশ্নপত্র ফাঁসে সরকারি লোকজন জড়িত।

শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রশ্নফাঁসের সাথে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। শুধু বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়েই কেউ নিজের দায় এড়াতে পারেন না। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে, প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ শিক্ষাক্ষেত্রে সকল দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারি সংগ্রাম লিয়াজো কমিটি শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধসহ সকল প্রকার দুর্নীতি বন্ধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কিন্তু কর্তৃপক্ষ শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সমস্যা নিয়ে শিক্ষক সংগঠনের সাথে কোন আলোচনাই করছেন না। আমরা মনে করি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

প্রকৃত দোষীদের আড়াল করে একতরফাভাবে শিক্ষক সমাজকে দোষারোপ না করার জন্য আহবান জানানো হয় সভায়। তারা আরও বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রের সমস্যাসমূহ দূর করতে হলে শিক্ষক-কর্মচারিদের ন্যায্য পাওনা প্রদান ও সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণসহ শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করতে হবে।

সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি আসাদুল হক, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি এম. এ আউয়াল সিদ্দিকী, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোঃ আবুল কাশেম, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (আউয়াল-বিলকিস) সাধারণ সম্পাদক বিলকিস জামান, বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর মোঃ ফয়েজ হেসেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ মহসীন রেজা, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সহ সভাপতি রঞ্জিত কুমার সাহা, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সহ সভাপতি অধ্যক্ষ মোঃ বজলুর রহমান, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মোঃ কাওছার আলী শেখ, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক মোঃ শাহে আলম প্রমূখ শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।

লিয়াজো কমিটিভুক্ত সংগঠনসমূহ: বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ), বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (আসাদুল হক-ফয়েজ হেসেন), বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (বাকবিশিস), বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (আউয়াল-বিলকিস), বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদারেছিন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (আজিজুল ইসলাম-মহসীন), বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষক সমিতি (সাত্তার-মোঃ আলী), বাংলাদেশ শিক্ষালয় কর্মচারি ফেডারেশন (হাবিব), বাংলাদেশ শিক্ষালয় কর্মচারি সমিতি (শহীদ-হুমায়ুন), বাংলাদেশ শিক্ষালয় কর্মচারি সমিতি (জিগার)।

 

আরো পড়ুন:

শিক্ষকেরাই আসল প্রশ্নফাঁসকারী বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নফাঁসের তদন্ত প্রতিবেদন ছাড়াই জবিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline