উচ্চ মাধ্যমিক এইচএসসি প্রাণিবিজ্ঞান : মানবদেহ- রেচন তন্ত্র

মানবদেহ- রেচন তন্ত্র

প্রারম্ভিক আলোচনা: অধ্যায়টা গুরুত্বপূর্ণ।

অধ্যায় সারবস্তু:

১. দেহের ভেতর গঠিত বিভিন্ন রাসায়নিক বিক্রিয়ায় দেহে ক্ষতিকর অ্যামোনিয়া, ইউরিয়া, ইউরিক এসিড প্রভৃতি নাইট্রোজেনজাত জৈব যৌগ উৎপন্ন হয়। এদের “রেচন পদার্থ” বলা হয়। যে প্রক্রিয়ায় এই রেচন পদার্থ দেহ থেকে নিষ্কাশিত করা হয়, তাকে রেচন বলে।\

 

২. রেচনতন্ত্র যেটি যা নিয়ে গঠিত:

  • বৃক্ক
  • ইউরেটার
  • মূত্রনালী
  • মূত্রথলি

৩. রেচনতন্ত্র দ্বারা দেহের ৮০% রেচন পদার্থ নিষ্কাশিত হয়।

৪. বৃক্ক দেখতে অনেক শিমের বীচির মত, যার দৈর্ঘ্য ১০-১২ সেমি, প্রস্থ ৫-৬ সেমি এবং স্থূলতা ৩ সেমি ।

৫. প্রতিটি বৃক্কের ওজন পুরুষের ক্ষেত্রে ১৫০-১৭০ গ্রাম এবং মহিলার ক্ষেত্রে ১৩০-১৫০ গ্রাম।

৬. সমগ্র বৃক্ক ক্যাপসুল নামক তন্তুময় আবরণে বেষ্টিত।

৭. বৃক্কের বাইরের অংশকে বলে কর্টেক্স (কর্টেক্স অর্থ গাছের বাকল) এবং অন্তঃস্ত অংশকে বলে মেডুলা।

৮. প্রতিটি বৃক্কে ১০ লক্ষ করে ইউরিনিফেরাস নালিকা থাকে যার কার্যকরী একক হচ্ছে নেফ্রন। ৮৫% নালিকা থাকে কর্টেক্সে এবং ১৫% নালিকা থাকে মেডুলায়। (অর্থাৎ মোট নেফ্রনের সংখ্যা প্রায় ২০ লক্ষ)

 

৯. ইউরিনিফেরাস নালিকা দু’টি প্রধান অংশে বিভক্ত, যথা:

  • নেফ্রন (যেখানে মূত্র উৎপন্ন হয়)
  • সংগ্রাহী নালিকা। [রেনাল পেলভিস (মূত্রনালীর উর্ধ্বপ্রান্তে অবস্থিত ফানেলাকার অংশ)-এ মূত্র বয়ে নিয়ে যায়]

১০. নেফ্রনকে আবার ২টি প্রধান অংশে ভাগ করা যায়। যথা:

  • মালপিজিয়ান কণিকা। এর দুটি অংশ রয়েছে-
  • ক) বোম্যান’স ক্যাপসূল (গ্লোমেরুলাসের অবলম্বন)
  • খ) গ্লোমেরুলাস (রেনাল পোর্টাল তন্ত্রের কৈশিক জালিকা)
  • রেনাল টিউবিউল: এর তিনটি অংশ রয়েছে-
  • প্রক্সিমাল (কাছাকাছি বোঝাতে) বা গোড়াদেশীয় প্যাঁচানো নালিকা
  • হেনলি’স লুপ
  • ডিস্টাল (দূরবর্তী বোঝাত) বা প্রান্তীয় প্যাঁচানো নালিকা

১১. রেনাল ধমনী থেকে সৃষ্ট অ্যাফারেন্ট আর্টারিওল বোম্যান’স ক্যাপসুলের ভেতরে ঢুকে ৫০ টির মত কৈশিক নালিকা তৈরি করে, যেটি পরে ইফারেন্ট আর্টারিওল সৃষ্টি করে আবার বের হয়ে যায়। (efferent = exit, এভাবে কনফিউশন দূর করা যায়)

১২. গ্লোমেরুলাস থেকে গোড়াদেশীয় প্যাঁচানো নালিকা থেকে হেনলি-এর লুপ হয়ে প্রান্তীয় প্যাঁচানো নালিকা হয়ে সংগ্রাহী নালিকা এটি মুক্ত হয়।

১৩. বৃক্ক থেকে পেলভিস অঞ্চল থেকে ইউরেটার নামে একটি নল বেরিয়ে মূত্রথলির পেছনদিকে প্রবেশ করে। এই নালীতে পেশীময় কপাটিকা থাকে যেটি মূত্রের গমন নিয়ন্ত্রণ করে।

১৪. মূত্রথলি প্রায় ৪৫০ মিলি মূত্র ধারণে সক্ষম।

১৫. ইউরিয়া মানবদেহের প্রধান নাইট্রোজেনঘটিত বর্জ্য পদার্থ।

১৬. মানুষের মূত্র সৃষ্টির প্রক্রিয়া ৩ ধাপে বিভক্ত (বিজ্ঞানী কুশনীর মতে):

  • গ্লোমেরুলাস পরিস্রাবণ
  • দ্রব্যের পুনঃশোষণ
  • দ্রব্যের সক্রিয় রেচন

১৭. প্রতিদিন দু’বৃক্কের গ্লোমেরুলাসে ১৭০ লিটার পানি পরিস্রুত হয়, (প্রতি বৃক্কে ৮৫ লিটার করে) যার ১৬৮.৫ লিটারই আবার পুনঃশোষিত হয়, বাকি ১.৫ লিটার মূত্ররূপে নির্গত হয়।

১৮. যে সব দ্রব্য মূত্রের স্বাভাবিক প্রবাহকে বাড়িয়ে দেয়, সেগুলোকে ডাই-ইউরেটিক্স বলে, যেমন – চা, কফি, পানি (লবণাক্ত)

১৯. মূত্রে ৯০% পানি থাকে।

২০. মূত্রের pH 6.0, কিছুটা অম্লীয়।

২১. স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতি মিনিটে ১২০ মিলি তরল পদার্থ গ্লোমেরুলাসে পরিস্রুত হয়, যার ১১৯ মিলি-ই আবার পুনঃশোষিত হয়ে যায় ও মাত্র ১ মিলি মূত্র হিসেবে নির্গত হয়।

২২. Antidiuretic Hormone (ADH) এর প্রভাবে তরল পুনঃশোষিত হয়, দেহে পানির পরিমাণ বেড়ে গেলে ADH এর ক্ষরণের পরিমাণ হ্রাস পায় ও মূত্র বেশি পরিমাণে নির্গত হয়।

২৩. আবার পানির পরিমাণ কমে গেলে অ্যাড্রেনাল কর্টেক্স থেকে ক্ষরিত Aldosteron (অ্যালডোস্টেরন) হরমোন মূত্রে সোডিয়াম আয়নের রেচন কমিয়ে পরোক্ষভাবে পানির রেচনও হ্রাস করে।

২৪. কোষে পানির পরিমাণ ২০% কমে গেলে তা কোষের ক্ষতির কারণ হয়।

প্রাণিবিজ্ঞান সকল অধ্যায় দেখতে এখানে যান

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline