ভারত মুক্তিযোদ্ধা বৃত্তি দিলো ২১০০ শিক্ষার্থীকে।
বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে ভারত সরকার মুক্তিযোদ্ধা বৃত্তি দিলো বৃহস্পতিবার (০৩ মে)।
উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে ২১শ শিক্ষার্থীকে এ বৃত্তি পাচ্ছে চলতি বছর। এরমধ্যে ৩০১ জনের চেক হস্তান্তর করা হলো অনুষ্ঠানে।
জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে মুক্তিযোদ্ধা চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ভারত আমাদের চিরস্থায়ী বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত সমর্থন না দিলে নয় মাস নয়, কত বছরে এই যুদ্ধ শেষ হতো তা বলে বোঝানো যাবে না। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কোনোভাবেই ছিন্ন করা যাবে না।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় সৈন্যবাহিনীর নিহত সৈনিকদের স্মরণে আখাউড়ায় স্মৃতিস্তম্ভ করা হচ্ছে বলে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই স্মৃতিসৌধের মাধ্যমে আমরা আমাদের ভারতীয় যুদ্ধবন্ধুদের চিরদিন স্মরণ করবো।
তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি ইস্যুতে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে আমিও সফরসঙ্গী ছিলাম। সেখানে দেখেছি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জোর দিয়ে বলেছেন তার এবং আমাদের প্রধানমন্ত্রীর চলতি মেয়াদেই তিস্তা চুক্তি হবে। এরইমধ্যে প্রাদেশিক সরকারের বাধা দূর করে সেদেশের আদালতে একটি রায় দিয়েছেন। এখন প্রাদেশিক সরকারের অনুমোদন ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকার চুক্তি করতে পারে। তাই আমরা আশাকরছি শিগগিরই তিস্তা চুক্তির সমাধান হবে।
খাদ্যমন্ত্রী কারুল ইসলাম বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ধাত্রী মায়ের মতো। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের সময় ভারত ধাত্রী মায়ের মতো ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ভারতের সঙ্গে আমাদের সেই সম্পর্ক নস্যাৎ করার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী চক্র চক্রান্ত করেছিল। তারা ভারতকেআমাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো চেষ্টা করেছিল। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু কন্যা ক্ষমতায় আসার পর সেই সেতুবন্ধন আবার রচিত হয়েছে। তবে কুচক্রীদের ষড়যন্ত্র এখনো থেমে নেই।
ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে ২০০৬ সালে ভারত সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরাধিকারীদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা বৃত্তি চালু করে। উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হয়। স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ২৪ হাজার টাকা করে চার বছর এই বৃত্তি দেওয়া হয়। এছাড়া উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা ১০ হাজার টাকা করে দুই বছর এ বৃত্তি পায়। এর আওতায় এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ৯৩৬ জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা।
নতুন বৃত্তি প্রকল্পের আওতায় পরবর্তী পাঁচ বছরে মোট ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হবে। এজন্য ব্যয় হবে ৩৫ কোটি টাকা। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ২০ হাজার টাকা ও স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ৫০ হাজার টাকা করে বৃত্তি দেওয়া হবে।
হাইকমিশনার আরও বলেন, এবছর পুরনো বৃত্তি প্রকল্পের আওতায় স্নাতক পর্যায়ের ৪০০ জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হবে। নতুন প্রকল্পের জন্য ১ হাজার ৬২১ জন (স্নাতক পর্যায়ের ১ হাজার জন ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের ৬২১ জন) শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়েছে। আজ ঢাকা বিভাগের ৩৮৬ জনের মধ্যে ৩০১ জনকে চেক বিতরণ করা হয়। এরপর রংপুর, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, বরিশাল, যশোর ও ময়মনসিংহে পর্যায়ক্রমে চেক দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
আরো পড়ুন: