২. কোনো অঘোষ অল্পপ্রাণ ধ্বনির পরে ঘোষ ধ্বনি আসলে অঘোষ অল্পপ্রাণ ধ্বনিটি তার নিজের বর্গের ঘোষ অল্পপ্রাণ ধ্বনি হয়।
অর্থাৎ, ক, চ, ট, ত, প- এদের পরে গ, জ, ড, দ, ব কিংবা ঘ, ঝ, ঢ, ধ, ভ কিংবা য, র, ব থাকলে প্রথম ধ্বনি (ক, চ, ট, ত, প) তার নিজের বর্গের তৃতীয় ধ্বনি (গ, জ, ড, দ, ব) হয়ে যায়।
অর্থাৎ, বর্গের প্রথম ধ্বনিগুলোর কোনোটি থাকলে, এবং তার পরে বর্গের তৃতীয় বা চতুর্থ ধ্বনিগুলোর কোনোটি বা য, র, ব (এরা সবাই ঘোষ ধ্বনি) আসলে বর্গের প্রথম ধ্বনি তার নিজ বর্গের তৃতীয় ধ্বনি হয়।
যেমন-ক+দ = গ+দ
বাক+দান = বাগদান
বাক+দেবী = বাগ্দেবী
ক+ব = গ+ব
দিক+বিজয় = দিগ্বিজয়
ক+জ = গ+জ
বাক+জাল = বাগ্জাল
ট+য = ড+য
ষট+যন্ত্র = ষড়যন্ত্র
ত+গ = দ+গ
উৎ+গার = উদ্গার
উৎ+গিরণ =উদ্গিরণ
সৎ+গুরু = সদ্গুরু
ত+ঘ = দ+ঘ
উৎ+ঘাটন = উদ্ঘাটন
ত+ভ = দ+ভ
উৎ+ভব = উদ্ভব
ত+য = দ+য
উৎ+যোগ = উদ্যোগ
উৎ+যম = উদ্যম
ত+ব = দ+ব
উৎ+বন্ধন = উদ্বন্ধন
ত+র = দ+র
তৎ+রূপ = তদ্রূপ
৩.নাসিক্য ধ্বনির পরে অঘোষ অল্পপ্রাণ ধ্বনি আসলে অঘোষ অল্পপ্রাণ ধ্বনিটি নিজ বর্গের ঘোষ অল্পপ্রাণ ধ্বনি বা নাসিক্য ধ্বনি হয়ে যায়।
অর্থাৎ, ঙ, ঞ, ণ, ন, ম- এদের পরে ক, চ, ট, ত, প থাকলে ক, চ, ট, ত, প যথাক্রমে গ, জ, ড, দ, ব অথবা ঙ, ঞ, ণ, ন, ম হয়ে যায়।
অর্থাৎ, বর্গের পঞ্চম/ শেষ ধ্বনির পরে বর্গের প্রথম ধ্বনি আসলে বর্গের প্রথম ধ্বনি তার নিজ বর্গের তৃতীয় বা পঞ্চম/ শেষ ধ্বনি হয়ে যায়।
ক+ন = গ/ঙ+ন
দিক+নির্ণয় = দিগনির্ণয়/ দিঙনির্ণয়
ক+ম = গ/ঙ+ম
বাক+ময় = বাঙময়
ত+ন = দ/ন+ন
জগৎ+নাথ = জগন্নাথ
উৎ+নয়ন = উন্নয়ন
উৎ+নীত = উন্নীত
ত+ম = দ/ন+ম
তৎ+মধ্যে = তদমধ্যে/ তন্মধ্যে
মৃৎ+ময় = মৃন্ময়
তৎ+ময় = তন্ময়
চিৎ+ময় = চিন্ময়
উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়েই ঘোষ অল্পপ্রাণ ধ্বনির চেয়ে নাসিক্য ধ্বনিই অধিক প্রচলিত।
৪. ‘ম’-এর পরে কোনো বর্গীয় ধ্বনি বা স্পর্শ ধ্বনি আসলে ‘ম’ তার পরের ধ্বনির নাসিক্য ধ্বনি হয়ে যায়।
অর্থাৎ, ‘ম’-এর পরে যে বর্গীয় ধ্বনি আসে, ‘ম’ সেই ধ্বনির বর্গের পঞ্চম ধ্বনি হয়ে যায়।
ম+ক = ঙ+ক
শম+কা = শঙ্কা
ম+ভ = ম+ভ
কিম+ভূত = কিম্ভূত
ম+চ = ঞ+চ
সম+চয় = সঞ্চয়
ম+ন = ন্ন
কিম+নর = কিন্নর
ম+ত = ন+ত
সম+তাপ = সন্তাপ
সম+ন্যাস = সন্ন্যাস
ম+দ = ন+দ
সম+দর্শন = সন্দর্শন
ম+ধ = ন্ধ
সম+ধান = সন্ধান
উল্লেখ্য, আধুনিক বাংলায় ‘ম’-এর পরে ক-বর্গীয় ধ্বনি থাকলে ক-বর্গের নাসিক্য/ পঞ্চম ধ্বনি ‘ঙ’-র বদলে ‘ং’ হয়। যেমন, ‘সম+গত’-এ ‘ম’ ও ‘গ (ক-বর্গীয় ধ্বনি)’ সন্ধি হয়ে ‘ম’, ‘ঙ’ না হয়ে ‘ং’ হয়ে ‘সংগত’। এরকম-
অহম+কার = অহংকার
সম+খ্যা = সংখ্যা
৫. ‘ম’-এর পরে অন্তঃস্থ ধ্বনি (য, র, ল, ব) কিংবা উষ্ম ধ্বনি (শ, ষ, স, হ) থাকলে ‘ম’-এর জায়গায় ‘ং’ হয়।
সম+যম = সংযম
সম+বাদ = সংবাদ
সম+রক্ষণ = সংরক্ষণ
সম+লাপ = সংলাপ
সম+শয় = সংশয়
সম+সার = সংসার
সম+হার = সংহার
বারম+বার = বারংবার
কিম+বা = কিংবা
সম+বরণ = সংবরণ
সম+যোগ = সংযোগ
সম+যোজন = সংযোজন
সম+শোধন = সংশোধন
সর্বম+সহা = সর্বংসহা
স্বয়ম+বরা = স্বয়ম্বরা
উল্লেখ্য, এই নিয়মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রম- সম+রাট = সম্রাট।
এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।