কর্ণফুলী :
————
আসামের লুসাই পাহাড় থেকে উৎপনড়ব হয়ে প্রায় ২৭৪ কিলোমিটার দীর্ঘ কর্ণফুলী নদী রাঙামাটি ও চট্টগ্রাম অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়েছে। এটি চট্টগ্রাম ও রাঙামাটির প্রধান নদী। কর্ণফুলীর প্রধান উপনদী কাসালাং, হালদা এবং বোয়ালখালি। কাপ্তাই নামক স্থানে কর্ণফুলী নদীতে বাঁধ দিয়ে ‘কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎ কেন্দ্র’স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত।
সাঙ্গু :
————
এ নদীর উৎপত্তি আরাকান পাহাড়ে। মায়ানমার ও বাংলাদেশ সীমানায় আরাকান পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে বান্দরবান ও চট্টগ্রামের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কর্ণফুলী নদীর মোহনার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।
ফেনী :
ফেনী নদী ফেনী জেলায় অবস্থিত। এ নদীর উৎপত্তিস্থল পার্বত্য ত্রিপুরায়। ফেনী জেলার পূর্ব সীমা দিয়ে সন্দ্বীপের উত্তরে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।
নদী ও জলাশয় ভরাটের কারণঃ
—-
, প্রভাব ও প্রতিরোধ বাংলাদেশে নদী ও জলাশয় ভরাটের পিছনে বহুবিধ প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট কারণ জড়িত রয়েছে। বাংলাদেশের প্রায় সমগ্র ভূপৃষ্ঠ পলিমাটি দ্বারা গঠিত। পলিমাটির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পানির সংস্পর্শে এটি সহজে দ্রবণে পরিণত হয়। বর্ষাকালে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব দিকে এবং এর উজানে প্রতিবেশী দেশ চীন, নেপাল, মায়ানমার ও ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে অপেক্ষাকৃত অধিক বৃষ্টি হয়। বর্ষাকালে উজান থেকে আসা খরস্রোতা নদীগুলো পাহাড়ি পলি বয়ে নিয়ে আসে এবং নদীতীরে ভাঙনের সৃষ্টি করে। ভাটিতে নদীগুলোর স্রোতের গতি কমে যায় তখন নদীগুলোর তলদেশে পলি সঞ্চিত হয়ে ভরাট হয় ও ক্রমে নাব্যতা হারাচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরীণ বিভিনড়ব নদী ও জলাশয়গুলোর দুধারে অপরিকল্পিত বাঁধ, সড়ক, কলকারখানা, আবাসিক স্থাপনা নির্মাণ ও পয়ঃনিষ্কাশনের নির্গমন স্থান হিসেবে ব্যবহার এবং নদী-জলাশয়গুলোর অপদখল ও ভরাটকরণের ফলে দ্রুত নদী ও জলাশয়গুলো মরে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক নদীগুলো নিয়ে বিরোধ ও ঐগুলো থেকে পানি প্রত্যহারের ফলে পানির খরস্রোতধারা কমে যাওয়ায় নদীর মোহনায় পলি সঞ্চিত হয়ে চর জেগে উঠছে। নদী ও জলাশয়গুলো ভরাটের কারণে বর্ষাকালে পানির প্রবাহধারা বাধাগ্রস্ত এবং দুকূল উপচিয়ে বন্যার প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে। আর শুষ্ক মৌসুমে ঐগুলোতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় নৌ-চলাচল, সেচ ব্যবস্থা ও মাছচাষ ব্যাহত হচ্ছে। প্রাকৃতিক পানির জলাধারের সংরক্ষণ ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হওয়ায় শহরগুলোতে পানির সরবরাহ কমে যাচ্ছে ও পরিবেশের বিপর্যয় ঘটছে। বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে নিয়মিত নদী ও জলাশয়গুলো ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা করে এদের নাব্যতা রক্ষা করা, পরিকল্পিত ও পরিবেশ উপযোগীভাবে বাঁধ এবং অন্যান্য উনড়বয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। আরও প্রয়োজন অপদখলীয় নদী ও জলাশয় উদ্ধার, পাহাড়কাটা বন্ধকরণ, কলকারখানার সঙ্গে বাধ্যতামূলকভাবে বর্জ্য পরিশোধন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। ভারত, নেপাল ও চীনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক নদী গঙ্গা, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও ফেনীসহ অন্যান্য নদীগুলোর ন্যায্যতার ভিত্তিতে পানির হিস্যা নিশ্চিত করতে হবে। সামগ্রিকপরিবেশকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে বিদ্যমান পরিবেশ আইন যুগোপযোগী ও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা একান্তপ্রয়োজন।
এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।