বাংলাদেশের পদক ও পুরস্কার-
ক. স্বাধীনতা পুরস্কারঃ
*স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার বা স্বাধীনতা পুরস্কার বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত সর্বোচ্চ বেসরকারী সম্মাননা পদক।
সংক্ষিপ্ত নোট-বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬শে মার্চ উপলক্ষ্যে প্রতি বছর এটি প্রদান করা হয়ে থাকে। শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে এই পদক দেওয়া হয়। ১৯৭৭ সাল হতে স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে। পুরস্কারজয়ী প্রত্যেকে পেয়েছেন একটি করে স্বর্ণপদক, সনদ এবং পুরস্কারের অর্থমূল্য হিসেবে দুই লাখ টাকার চেক। বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী পরিষদ কমিটি একটি তালিকা প্রস্তুত করে সরকার প্রধানের নিকট চুড়ান্ত মনোনয়নের জন্য প্রদান করেন। পদকটি সাধারণত স্বাধীনতা দিবসের সন্ধ্যায়, বিভিন্ন মন্ত্রিপরিষদ সদস্য ও অন্যান্য বিশিষ্ট নাগরিকদের উপস্থিতিতে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রদান করা হয়।
যে কোন ব্যক্তি, গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থাকে নিম্নবর্ণিত ক্ষেত্রসমূহে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করতে পারেনঃ স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চিকিৎসা বিদ্যা, শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, পল্লী উন্নয়ন, সমাজ সেবা/জনসেবা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, জনপ্রশাসন, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্য যে কোন ক্ষেত্র।
#স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৬
*মোট ১৫ ব্যক্তি ও নৌবাহিনীকে স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৬ প্রদান করা হয়।
১। আবুল মাল আবদুল মুহিত-অর্থমন্ত্রী।
২। মাকসুদুল আলম-বিজ্ঞানী।
৩। মুহা. ইমাজ উদ্দিন প্রমানিক।
৪। মরহুম মৌলভী আচমত আলী খান।
৫। বদরুল আলম বীরউত্তম।
৬। শহীদ শাহ আব্দুল মজিদ।
৭। এম আবদুল আলী।
৮। সৈয়দ হাসান ইমাম।
৯। এ কে এম আবদুর রউফ।
১০। কে এম শিহাব উদ্দিন।
১১। মরহুম রফিকুল ইসলাম।
১২। আবদুস সালাম।
১৩। ডা. মোহাম্মদ রফি খান (এম আর খান)।
১৪। কবি নির্মলেন্দু গুণ।
১৫। নিজামউদ্দিন আহমেদ।
এবং একটি প্রতিষ্ঠান-
*বাংলাদেশ নৌ বাহিনী-
১৯৭১ সালের জুলাইয়ে প্রতিষ্ঠিত এই বাহিনীর প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে স্বাধীনতা পদক গ্রহণ করেন।
#স্বাধীনতা পুরস্কার-২০১৫
*মোট সাতজনকে ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়েছে।
১। কমান্ড্যান্ট মানিক চৌধুরী (মরণোত্তর),
২। রাজশাহী রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি মামুন মাহমুদ (মরণোত্তর),
৩। সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিববিয়া,
৪। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান,
৫। চলচ্চিত্র অভিনেতা আবদুর রাজ্জাক,
৬। বিশিষ্ট কৃষি গবেষক মোহাম্মদ হোসেন মণ্ডল ও
৭। সাংবাদিক সন্তোষ গুপ্ত (মরণোত্তর)।
খ। একুশে পদকঃ
*একুশে পদক বাংলাদেশের একটি জাতীয় এবং সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত নোট-বাংলাদেশের বিশিষ্ট ভাষাসৈনিক, ভাষাবিদ, সাহিত্যিক, শিল্পী, শিক্ষাবিদ, গবেষক, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদ, দারিদ্র্য বিমোচনে অবদানকারী, সামাজিক ব্যক্তিত্ব ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পর্যায়ে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি প্রদানের উদ্দেশ্যে ১৯৭৬ সাল থেকে একুশে পদক প্রদান করা হচ্ছে। ভাষা আন্দোলন এর শহীদদের স্মরণে ১৯৭৬ সালে এই পদকের প্রচলন করা হয়। একুশে পদকে ১ লক্ষ টাকা, ১৮ ক্যারট স্বর্ণের মেডেল এবং একটি সনদ প্রদান করা হয়। পদকটির ডিজাইন করেছেন নিতুন কুণ্ডু। প্রত্যেক পদকপ্রাপ্তকে একটি স্বর্ণপদক, সম্মাননা সনদ এবং পুরস্কারের অর্থমূল্য প্রদান করা হয়ে থাকে। প্রাথমিকভাবে পুরস্কারের অর্থমূল্য ২৫,০০০ টাকা দেয়া হতো, এবং বর্তমানে এটি ১লক্ষ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে।
#একুশে পদক-২০১৬
*৬টি বিভাগে মোট (১৬ জন) ব্যাক্তিকে ২০১৬ সালে একুশে পদক প্রদান করা হয়।
১। ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য- অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, ডা. সাইদ হায়দার, ড. জসীম উদ্দিন আহমেদ এবং ভাষা সংগ্রামী সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া(মরণোত্তর)।
২। শিল্পকলায়–অভিনেত্রী জাহানারা আহমেদ, শাস্ত্রীয় সংগীতগুরু পণ্ডিত অমরেশ রায় চৌধুরী, সংগীত শিল্পী শাহীন সামাদ, নৃত্যশিল্পী আমানুল হক, চিত্রশিল্পী কাজী আনোয়ার হোসেন (মরণোত্তর)
৩। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য–মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি মফিদুল হক।
৪। সাংবাদিকতায়–দৈনিক জনকণ্ঠের উপদেষ্টা সম্পাদক তোয়াব খান।
৫। গবেষণায়– অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ এবং মংছেনচীং মংছিন।
৬। ভাষা ও সাহিত্যে– জ্যোতিপ্রকাশ দত্ত, অধ্যাপক হায়াৎ মামুদ ও হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
#একুশে পদক-২০১৫
*৯টি বিভাগে মোট (১৫ জন) ব্যাক্তিকে ২০১৫ সালের একুশে পদক প্রদান করা হয়।
১। ভাষা আন্দোলন- পিয়ার সরদার (মরনোত্তর);
২। মুক্তিযুদ্ধ – অধ্যাপক মোঃ মজিবুর রহমান দেবদাস;
৩। ভাষা ও সাহিত্য- অধ্যাপক দ্বিজেন শর্মা, মুহম্মদ নূরুল হুদা;
৪। সাংবাদিকতা – কামাল লোহানী;
৫। গণমাধ্যম- ফরিদুর রেজা সাগর;
৬। শিল্পকলা- আব্দুর রহমান বয়াতি (মরনোত্তর), এস.এ.আবুল হায়াত, এটি.এম.শামসুজ্জামান
৭। শিক্ষা- অধ্যাপক ডাঃ এম.এ.মান্নান , সনৎ কুমার সাহা;
৮। গবেষণা- আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া;
৯। সমাজসেবা- অধ্যাপক অরূপ রতন চৌধুরী; ঝর্ণা ধারা চৌধুরী, শ্রীমৎ সত্যপ্রিয় মহাথের।
গ। বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কারঃ
সংক্ষিপ্ত নোট-বাংলা একাডেমি পুরস্কার ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে প্রবর্তন করা হয়। বাংলা সাহিত্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
# “বাংলা একাডেমি সাহিত্য পদক -২০১৫”
*১০টি বিভাগে মোট (১১ জনকে) ২০১৬ সালে “বাংলা একাডেমি সাহিত্য পদক -২০১৫” প্রদান করা হয়।
১) কবিতায়– আলতাফ হোসেন,
২) কথাসাহিত্যে– শাহীন আকতার,
৩) প্রবন্ধে– যৌথভাবে আবুল মোমেন ও ড. আতিউর রহমান,
৪) গবেষণায়– মনিরুজ্জামান,
৫) অনুবাদে– আব্দুস সেলিম,
৬) মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যে– তাজুল মোহম্মদ,
৭) আত্মজীবনী, স্মৃতিকথা ও ভ্রমণকাহিনি ক্যাটাগরিতে– ফারুক চৌধুরী,
৮) নাটকে– মাসুম রেজা,
৯) বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশে– শরীফ খান এবং
১০) শিশুসাহিত্যে– সুজন বড়ুয়া।
# “বাংলা একাডেমি সাহিত্য পদক -২০১৪”
*২০১৫ সালে প্রদত্ত মোট ৭ জনকে “বাংলা একাডেমী সাহিত্য-২০১৪” পুরস্কার প্রদান করা হয়।
১) কবিতায় শিহাব সরকার,
২) সাহিত্যে জাকির তালুকদার,
৩) প্রবন্ধে শান্তনু কায়সার,
৪) গবেষণায় ভূঁইয়া ইকবাল,
৫) মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যে আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন,
৬) ভ্রমণে মঈনুস সুলতান ও
৭) শিশুসাহিত্যে খালেক বিন জয়েনউদ্দীন।
*অনুবাদ, নাটক এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও পরিবেশ বিভাগে এবার কাউকে পুরস্কার দেওয়া হয়নি।
ঘ। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-
*সংক্ষিপ্ত নোট-জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের একমাত্র রাষ্ট্রীয় ও সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯৭৫ সাল থেকে এই পুরস্কারটি প্রদান করা হচ্ছে। এর আগে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার দেয়া হতো না, এটি ২০০৯ সালেই প্রথম চালু করা হয়।
#৩৯তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৪-
* সেরা চলচ্চিত্র: নেকাব্বরের মহাপ্রয়ান
* সেরা পরিচালক: জাহিদুর রহিম অঞ্জন (মেঘমল্লার)
* সেরা অভিনেতা: ফেরদৌস আহমেদ (এক কাপ চা)
* সেরা অভিনেত্রী: ১) মৌসুমী (তাঁরকাটা) ও ২) বিদ্যা সিনহা মিম (জোনাকির আলো)
*আজীবন সম্মাননা: ১) সৈয়দ হাসান ইমাম ও ২) রানী সরকার
#৩৮তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৩-
* সেরা চলচ্চিত্র: মৃত্তিকা মায়া
* সেরা পরিচালক: গাজী রাকায়েত (মৃত্তিকা মায়া)
* সেরা অভিনেতা: তিতাস জিয়া (মৃত্তিকা মায়া)
* সেরা অভিনেত্রী: মৌসুমী(দেবদাস) ও শর্মীমালা(মৃত্তিকা মায়া)
* আজীবন সম্মাননা: কবরী সারোয়ার
ঙ। নজরুল পুরস্কারঃ
নজরুল ইনস্টিটিউট সম্প্রতি নজরুল পুরস্কার প্রবর্তন করেছে। কবি নজরুল ইসলাম সম্পর্কে গবেষণা এবং নজরুলগীতির বিকাশে অবদানের জন্য প্রতিবছর ব্যক্তিবিশেষকে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। এই পুরস্কারের মান নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা। নগদ পুরস্কারের সঙ্গে একটি সম্মাননা প্রতীক ও সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয়।
*‘নজরুল পুরস্কার ২০১৪’ পেলেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও শবনম মুশতারী।
*’নজরুল পুরস্কার ২০১৩’ পেলেন খিলখিল কাজী এবং ড. নাশিদ কামাল।
চ। বাংলাদেশ শিশু একাডেমী সাহিত্য পুরস্কারঃ
শিশুসাহিত্যে সার্বিক অবদানের জন্য বাংলাদেশ শিশু একাডেমী বছরে একজন সাহিত্যসেবীকে এ পুরস্কার প্রদান করে। বাংলা ১৩৯৬ সন (১৯৮৯ খ্রি) থেকে এ পুরস্কার চালু করা হয়েছে।
একজন কবি বা সাহিত্যিক জীবনে মাত্র একবার এ পুরস্কার লাভ করতে পারেন। এ পুরস্কার মরণোত্তর পুরস্কার হিসেবে দেওয়ার বিধান নেই। শিশু একাডেমী পুরস্কারের মান নগদ ৫০ হাজার টাকা। পুরস্কৃত সাহিত্যিককে নগদ অর্থ, সম্মাননা প্রতীক ও সম্মাননাপত্র প্রদান করা হয়।
*‘বাংলাদেশ শিশু একাডেমী সাহিত্য-১৪২০’ পুরস্কার পেলেন জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন চাঁদের হাটের প্রতিষ্ঠাতা ও শিশু সাহিত্যিক রফিকুল হক।
*‘বাংলাদেশ শিশু একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার-১৪১৯’ পেলেন তপন চক্রবর্তী।
*‘বাংলাদেশ শিশু একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার-১৪১৮’ পেলেন বরেণ্য সাহিত্যিক ড. হায়াৎ মামুদ।
প্রতিটি লেকচারে নতুন নতুন লিখা যুক্ত হচ্ছে, তাই কাঙ্খিত কোন লিখা না পেলে দয়া করে কিছুদিন পর আবার ভিজিট করে দেখবেন।
লিখাতে কিংবা লেকচারে কোন ভুলত্রুটি থাকলে অথবা আপনার কাঙ্খিত লিখা খুঁজে না পেলেইশিখন.কম এর ফ্যানপেইজ অথবা নিচে কমেন্ট কর