১ | আইফেল টাওয়ার | প্যারিস |
১ | আল আকসা | জেরুজালেম |
২ | ইন্ডিয়া হাউস | লন্ডন |
৩ | এ্যাম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং | নিউইর্য়ক |
৪ | ওভাল | লন্ডন |
৫ | ওয়াল স্ট্রীট বিল্ডিং | নিউইর্য়ক |
৬ | ওয়েম্বলী | লন্ডন |
৭ | ওয়েস্ট মিনিস্টার এ্যাবে | লন্ডন |
৮ | কলোসিয়াম | রোম |
৯ | কাবা শরীফ | মক্কা |
১০ | ক্রেমলিন | মস্কো |
১১ | গ্রান্ড ক্যানিয়ন | এ্যারিজোনা |
১২ | ডাউনিং স্ট্রীট | লন্ডন |
১৩ | বাকিংহাম প্রাসাদ | লন্ডন |
১৪ | তিয়েন আন মান স্কয়ার | বেইজিং |
১৫ | পিরামিড | মিশর |
১৬ | পেন্টাগন | ওয়াশিংটন |
১৭ | ক্লিট স্ট্রীট | লন্ডন |
১৮ | ব্রান্ডেনবার্গ ফটক | বার্লিন |
১৯ | মারদেকা প্রাসাদ | জাকার্তা |
২০ | লিনিং টাওয়ার পিসা | ইটালী |
২১ | স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড | লন্ডন |
২২ | রেড স্কয়ার | মস্কো |
২৩ | সেন্ট সোফিয়া | কনস্টান্টিনোপল |
২৪ | স্ফিংস | মিশর |
ভাস্কর্য কারুশিল্পের একটি অনন্য শাখা। সাধারণত কাদামাটি, সিরামিক, বিভিন্ন রকম ধাতু, কাঠ, পাথর খোদাইয়ের মাধ্যমে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়।
ভাস্কর্য কারুশিল্পের একটি অনন্য শাখা। সাধারণত কাদামাটি, সিরামিক, বিভিন্ন রকম ধাতু, কাঠ, পাথর খোদাইয়ের মাধ্যমে ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। তবে আধুনিক ভাস্কর্যগুলো তৈরিতে নতুন নতুন উপকরণ ও পদ্ধতি সংযোজন হচ্ছে। বর্তমানে ওয়েল্ডিং ও ঢালাইয়ের পদ্ধতিও ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রাচীন সংস্কৃতিতে ভাস্কর্য নির্মাণে কাদামাটির তুলনায় কাঠ ও পাথরের ব্যবহার ছিল বেশি।
অনেক ধর্মে ভাস্কর্যকে উপাসনার একটি উপকরণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও ভাস্কর্য ভিন্ন ভিন্ন দেশের সংস্কৃতির প্রতিফলন হিসেবে কাজ করে। প্রাচীন ভূ-মধ্যসাগরীয় এলাকার সাংস্কৃতিক উপাদান হিসেবে ভাস্কর্যকে বিশেষ প্রাধান্য দেওয়া হতো। তাছাড়া ইন্ডিয়া, চীন, আফ্রিকা ও সাউথ আমেরিকায়ও ভাস্কর্যের বেশ কদর রয়েছে।
পাশ্চাত্যে ভাস্কর্য তৈরির ধারণা মূলত প্রাচীন গ্রিস থেকে এসেছে। তবে মধ্যবর্তী সময়ে প্রদর্শিত ভাস্কর্যগুলোতে প্রধানত খ্রিস্ট ধর্মীয় বিশ্বাস ও অনুভূতি তুলে ধরা হয়েছে এসব ভাস্কর্যে।
আধুনিক ভাস্কর্য নির্মাণে আগের তুলনায় আকৃতি ও বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন এসেছে। উপকরণ ব্যবহারেও এসেছে বৈচিত্র্য।
ভাস্কর্যের রকমসকম
ভাস্কর্য বিভিন্ন রকমের হয়। এগুলোর মধ্যে একটি হলো মূর্তি। এর গঠন স্বতন্ত্র। ভাস্কর্য নির্মাণের একটি পদ্ধতি হচ্ছে রিলিফ। এর রয়েছে বিভিন্ন ধাপ। যেমন, বেজ রিলিফ, হাই রিলিফ এবং মিড রিলিফ।
এখানে একটি সমতল ভিত্তির ওপর কোনো দৃশ্য সম্বলিত ঘটনাকে তুলে ধরা হয়। তা হতে পারে কোনো প্রতিমূর্তি, প্রাকৃতিক দৃশ্য, জ্যামিতিক নকশা বা ধর্মীয় নিদর্শন। এই দৃশ্যেও প্রতিটি চরিত্র ও উপাদানকে বিভিন্ন উপকরণ- যেমন, কাদামাটি, ধাতুজাত দ্রব্য প্রভৃতি দিয়ে তৈরি করে সমান প্রস্তরের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।
বিশ্ববিখ্যাত ভাস্কর্য
মোয়াই
মোয়াই পৃথিবীর বিখ্যাত ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে অন্যতম। মোয়াই শক্তিশালী জীবসত্তার প্রতিমূর্তি। এই ভাস্কর্যগুলো পৃথিবীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ ইস্টারে রয়েছে। এগুলো পলেনেশীয় কোলোনাইজাররা ১২৫০ থেকে ১৫০০ খ্রিস্টব্দের মধ্যে তৈরি করেছেন।
সবচেয়ে উঁচু মোয়াইকে ‘পেরো’ বলা হয় । এটি ৩৩ ফুট লম্বা। ওজন ৭৫ টন। ইউরোপিয়ানরা এ অঞ্চলে আসার পরও ভাস্কর্যগুলো ছিল। কিন্তু ক্ল্যানদের সঙ্গে বিরোধ হওয়ার পর সেগুলোর বেশির ভাগই ক্ষয়প্রাপ্ত হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৫০টি মোয়াই বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার
খ্রিস্টান ধর্মের নিদর্শন হিসেবে ক্রাইস্ট দ্য রিডিমারের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। যিশু খ্রিস্টের ভাস্কর্য ‘ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার’ ব্রাজিলের জেনেরিওতে করকোভাডো পর্বতের চূড়ার ৭০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত।
এটি উত্তর উপসাগরের অভ্যন্তরীণ গুয়ানাবারা অঞ্চল থেকে দৃশ্যমান। ৯.৫ মিটার (৩১ ফুট) স্তম্ভমূলসহ এ ভাস্কর্যটির দৈর্ঘ্য ৩৯.৬ মিটার অর্থাৎ ১৩০ ফুট। এটি ৩০ মিটার অর্থাৎ ৯৮ ফুট প্রশস্ত। ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার বিশ্বের উঁচু ভাস্কর্যগুলোর মধ্যেও একটি। তবে বলিভিয়ার ‘ক্রিস্টো ডি লা কনকর্ডিয়া’ এর চেয়েও কিছুটা উঁচু।
স্ট্যাচু অব লিবার্টি
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার একশ’ বছর পূর্তিতে ফ্রান্স যুক্তরাষ্ট্রকে উপহারস্বরূপ ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’ নামক ভাস্কর্যটি দেয়। বিশ্বমানের খ্যাতনামা এ ভাস্কর্য লিবার্টি আইল্যান্ডে স্বগর্বে দাঁড়িয়ে আছে। এটি আলোক বিচ্ছুরিত মুকুট পরা একটি নারী প্রতিমা। সমস্ত শৃঙ্খলকে পদদলিত করে ডান হাতে মশাল উত্তোলন করে আছে। ফ্রান্সে এই ভাস্কর্যের নির্মাণ কাজ ১৮৮৪ সালের জুলাই মাসে শেষ হয়। সে বছরই তা নিউইয়র্কে পাঠানো হয়। ১৮৮৬ সাল থেকে জেট এজ পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ প্রবাসীদের কাছে প্রথম আকর্ষণ ছিল এই স্ট্যাচু অব লিবার্টি।
গ্রেট স্ফিংস
স্ফিংস বিশ্বের বৃহৎ ও প্রাচীনতম ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে একটি। এটি মিশরের কায়রোর গিজা মালভূমিতে অবস্থিত। তবে এ ভাস্কর্যেও প্রতিমূর্তিটি কার, কবে নির্মাণ করা হয়েছে, কারা তৈরি করেছে- তা নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।
এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় একপ্রস্তর বিশিষ্ট স্তম্ভ। তবে বহু বছরের সাক্ষ্যপ্রমাণ ও পর্যালোচনার ওপর ভিত্তি করে আধুনিক ইজিপটোলজিস্টরা ধারণা করেন, সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ অব্দে ফারাও খাফরি এটি নির্মাণ করেন।
নেমরুত পর্বত
দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের আদিয়ামান শহরে নেমরুত নামে একটি পাহাড় রয়েছে। এর উচ্চতা ২১৩৪ মিটার অর্থাৎ ৭০০১ ফুট। খ্রিস্টপূর্ব ৬২ অব্দে রাজা অ্যন্টিওসাস ও থিওস এই পাহাড়ের চূড়ায় উপাসনালয় এবং সমাধি নির্মাণ করেন। সেখানে তিনি বিপুল সংখ্যক মূর্তি নির্মাণ করেন।
এগুলোর উচ্চতা ২৬ থেকে ৩০ ফুট। এ ভাস্কর্যগুলোর মধ্যে তার নিজের প্রতিমূর্তিসহ রয়েছে দুটো সিংহ, দুটো ঈগল এবং অনেক গ্রিক ও ফরাসি দেব-দেবীর মূর্তি। এসব মূর্তি নির্মাণের পর থেকেই এদের মাথা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আশেপাশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। নেমরুত পাহাড়ের মূল আকর্ষণ এর পূর্ব দিক থেকে সূর্য ওঠার দৃশ্য দেখা। যখন ভাস্কর্যগুলোর শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন মাথাগুলোর ওপর কমলা রঙের আলো পড়ে তখন সমস্ত জায়গাটাকে অদ্ভুত রহস্যময় মনে হয়।
ওলমেক হেডস
ওলমেক প্রাক কলোম্বিয়ান সভ্যতার অধিবাসী। তারা দক্ষিণ মধ্য মেক্সিকোর গ্রীষ্মমণ্ডলীয় নিচু ভূমিতে বসবাস করে। খ্রিস্টপূর্ব ১৪০০ থেকে ৪০০ অব্দে ওলমেক সভ্যতা বিস্তৃতি লাভ করে। তারা সবসময় মাথায় ভারী হেলমেট পরতো। তারা মাথাকে শাসকের প্রতিকৃতি বলে মনে করতো।
তাদের এই শিরণাস্ত্রর আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। এগুলো নানা ধরনের উপকরণ দিয়ে অলংকৃত করা হতো। এ ধরনের ১৭টি প্রকাণ্ড শিরণাস্ত্র পরিহিত মাথা পাওয়া গেছে। এগুলোর সাইজ ৩.৪ মিটার থেকে শুরু করে ১.৪৭ মিটার পর্যন্ত।
লায়নস অব ডেলোস
গ্রিসের ডেলোস দ্বীপ উল্লেখযোগ্য পৌরাণিক, ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে খ্যাত। গ্রিক পুরাণ অনুসারে এটি গ্রিক দেবতা অ্যাপোলো ও আর্টিমিসের জন্মস্থান। এখানকার সিংহের ভাস্কর্যগুলো খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দে নির্মিত। নেক্সাসের মানুষ এগুলোকে অ্যাপোলোর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছে।
এখানে মার্বেলের তৈরি ৯ থেকে ১২টি সিংহ প্রধান পথের অভিমুখে রাখা ছিল। এগুলোর মধ্যে ৫টি এখনো সুরক্ষিত। তিনটির ভগ্নাংশ পড়ে আছে। তাছাড়া আবহাওয়ার কারণে ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়া ভাস্কর্যগুলো ১৯৯৯ সালে ডেলোসের প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে সংরক্ষিত হয়।
লিটল মারমেইড
ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে রয়েছে ‘দ্য স্ট্যাচু অব লিটল মারমেইড’। এটি আকারে অন্য ভাস্কর্যের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ছোট। তাই ই ভাস্কর্য দেখে প্রথমদিকে অনেক পর্যটকই স্তম্ভিত হতেন। এর উচ্চতা মাত্র ১.২৫ মিটার। ওজন ১৭৫ কেজি। এ ভাস্কর্যটির ডিজাইনার এডভার্ড এরিকসেন। পানিতে উচ্ছ্বসিত মৎসকন্যার কথা মনে রাখার জন্য ১৯১৩ সালে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়।
আরো দেখুন : মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যসমুহ
0 responses on "বিখ্যাত ভাস্কর্য ও স্মৃতিসৌধ"