
প্রশ্নফাঁস এড়াতে প্রচলিত পদ্ধতিতে প্রশ্ন প্রণয়ন পদ্ধতির পরিবর্তন প্রয়োজন বলে মনে করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
তিনি বলেন, এ ধরনের একটা ধারণা আমাদের মধ্যে জন্ম নিয়েছিলো যে ফেসবুকে প্রশ্নফাঁস হয়, ইন্টারনেট প্রশ্নফাঁস করে। বিষয়টা খুবই সিম্পল। না ফেসবুক, না ইন্টারনেট, না হোয়াটসঅ্যাপ প্রশ্নফাঁস করে; প্রশ্নফাঁস হয় মানুষের হাতে। মানুষের হাতে যখন প্রশ্নটাফাঁস হয়, আমাদের ইন্টারনেটের উপর দায়টা আসে। ইন্টারনেট আমরা ব্যক্তিগত তথ্য থেকে রাষ্ট্রীয় তথ্য প্রচার করার জন্য ব্যবহার করি। প্রচারের দায়টা যদি প্রযুক্তির ঘাড়ে দিতে চান তাহলে এই দায়টা হয়তো তাকে দেওয়া যেতে পারে।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদযাপন উপলক্ষে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সচিবালয়ে স্মারক ডাক টিকিট অবমুক্তকরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, আমি যেটি বিশ্বাস করি, যে পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়, প্রশ্ন তৈরি হয় এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি, আমার মনে হয় এটা নতুন করে ভাবার সময় হয়েছে। নতুন করে যদি না ভাবি তাহলে শত শত বছরের প্রাচীন পদ্ধতি ডিজিটাল যুগে অচল হতে পারে’।
ডিজিটাল প্রযুক্তিতে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা দেওয়ার মতো উপায় আছে জানিয়ে মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রয়োগ করাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হবে। কারণ শিক্ষার্থী তো দু’চারজন না, লাখ লাখ, লাখ লাখ প্রতিষ্ঠান, লাখ লাখ শিক্ষক, এদের মধ্য থেকে আমরা প্রযুক্তিগতভাবে এরকম ব্যবস্থা করতে পারি যে প্রযুক্তিগত ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে প্রাকটিক্যালি কারো পক্ষে প্রশ্ন ফাঁস করার কোনো সুযোগই থাকবে না। তবে ইন্টারনেট বন্ধ করা অথবা ফেসবুক বন্ধ করা সমাধান না’।
প্রযুক্তিগত দিক থেকে আমরা যে কাউকে ট্রেস করতে পারি, কিন্তু একটি বিষয় মনে রাখতে হবে প্রযুক্তিতে যে রকম সরাসরি চিহ্নিত করার সুযোগ আছে, ফাঁকি দেওয়ারও সুযোগ আছে। রিয়েল আইপি অ্যাড্রেস থাকলে সহজে সনাক্ত করা যায়, কিন্তু ফেসবুকের সঙ্গে চুক্তি বা সরাসরি যোগাযোগ না থাকায় প্রশ্ন ফাঁসকারীর তথ্য তাৎক্ষণিক না পাওয়ায় ক্ষতি হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, আশ্বস্ত করতে পারি, আমরা তিন দিক থেকে কাজ করছি। বিটিআরসি, আইসিটি বিভাগ এবং পুলিশ বাহিনী কাজ করছে। আমরা এরইমধ্যে একটা সমন্বয় গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। যে অবস্থাটা যাচ্ছে এই অবস্থাটাকে যাতে প্রকৃত সমাধানের জায়গায়…এটা কেবল প্রশ্ন ফাঁসের নিরাপত্তার বিষয় নয়, বস্তুত পক্ষে আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পুরো ইন্টারনেট ব্যবস্থাটাকে নিরাপদ করা।
মন্ত্রী বলেন, আপনারা নিজেরা কখনও অ্যাবইউজ হন, নিজেরা অপপ্রচারের শিকার হন, মা-বোন অথবা কন্যারা অব্যবস্থার শিকারে পরিণত হয়। শুধু প্রশ্ন ফাঁসের বিষয় নয়, আমরা সামগ্রিক বিষয়টাকে একটা নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবস্থা গড়ে তুলবো, সেই পথে পা বাড়াচ্ছি।
আরো পড়ুন: