
৩৮তম বিসিএসের আবেদন আগামী ১০ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে। এই বিসিএসের মাধ্যমে দুই হাজার ২৪ জন প্রথম শ্রেণির ক্যাডার কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নম্বর ছাড়া কেউ বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নেয়ার আবেদন করতে পারবেন না। এই বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রতিটি খাতা দু’জন পরীক্ষক মূল্যায়ন করবেন। তাদের নম্বরের ব্যবধান ২০ শতাংশের বেশি হলে তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে খাতা পাঠানো হবে। এর ফলে পরীক্ষার্থীদের মেধা যথাযথভাবে মূল্যায়িত হবে বলে মনে করছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। এ ছাড়া ৩৮তম বিসিএস থেকে বাংলাদেশ বিষয়াবলির ২০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় আলাদা করে নেয়া হবে। এতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ৫০ নম্বরের প্রশ্ন থাকবে। কেউ চাইলে ইংরেজীতেও ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন।
পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, ৩৮তম বিসিএসে সরকারের প্রথম শ্রেণি কর্মকর্তার এই নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক সংস্কার আনছে কমিশন। এতে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০, পুলিশ ক্যাডারের ১০০টি পদসহ সাধারণ ক্যাডারে মোট ৫২০টি, কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারে ৫৪৯টি এবং শিক্ষা ক্যাডারে ৯৫৫টি পদ থাকছে।
এদিকে ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষার অনলাইন আবেদন-সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে হেল্পলাইন খুলবে পিএসসি। কর্মকর্তারা প্রার্থীদের সমস্যার সমাধান দেবেন। টেলিটকের পাঁচটি নম্বরে প্রার্থীরা যে কোনো সমস্যা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
আবেদনের দিন থেকে পুরো প্রক্রিয়া চলাকালীন পর্যন্ত এই হেল্পলাইন চালু থাকবে।
বিসিএস পরীক্ষার উত্তরপত্র সঠিকভাবে দেখা হচ্ছে না- এমন অভিযোগ তুলে পরীক্ষার্থীরা তা পুনর্মূল্যায়নের দাবি করে আসছেন। রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা অনুযায়ী ৩৮তম বিসিএস থেকে লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র দু’জন পরীক্ষক দিয়ে মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিএসসি। প্রথমবারের মতো বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র দু’জন পরীক্ষক দ্বারা মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরীক্ষকদের দেয়া নম্বরের ব্যবধান ২০-এর বেশি হলে তৃতীয় পরীক্ষক উত্তরপত্র দেখবেন। পিএসসির সংশ্লিষ্টরা জানান, এত দিন পর্যন্ত বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার খাতা একজন পরীক্ষক দেখতেন। ফলে মাঝেমধ্যেই পরীক্ষার্থীরা বঞ্চনার শিকার হতেন। অতীতেও অনেকে ভালো পরীক্ষা দিয়ে কাক্সিক্ষত নম্বর পাননি বলে অভিযোগ রয়েছে। পরীক্ষার্থীদের দাবি, বিসিএসের মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় যেখানে এক-দুই নম্বরেই ভাগ্য বদলে যায়, সেখানে অনেক সময়েই পরীক্ষকের অবহেলায় অনেকেই কাক্সিক্ষত নম্বর পান না। ২০১৬ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিতে গেলে রাষ্ট্রপতিও দু’জনকে দিয়ে খাতার যথাযথ মূল্যায়নের কথা বলেন।
এ প্রসঙ্গে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, আগামী বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় ৫০ নম্বরের মুক্তিযুদ্ধ বিষয় প্রশ্ন রাখার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর ফলে চাকরিপ্রার্থীদের মহান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে ব্যাপক ধারণা তৈরিতে সহায়ক হবে। ৩৮তম বিসিএস থেকে লিখিত পরীক্ষার উত্তরপত্র দু’জন পরীক্ষক দ্বারা মূল্যায়ন করা হবে। তিনি জানান, প্রার্থীরা বাংলা ও ইংরেজী বিষয়ের লিখিত পরীক্ষা নিজ ভাষায় দিয়ে বাকি বিষয়গুলোর প্রশ্ন সুবিধামতো ভাষায় উত্তর করতে পারেন। তবে ইংরেজীতে শুরু করলে ইংরেজী ও বাংলায় শুরু করলে বাংলায় উত্তর শেষ করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ৩৮তম বিসিএসে (লিখিত) ইংরেজী ভার্সনে পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ থাকবে। বাংলা অথবা ইংরেজী সংস্করণে পরীক্ষা দেয়ার বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, আবেদনকারীকে অবশ্যই আবেদন করার সময়ই অনলাইনে উল্লেখ করে দিতে হবে কোন সংস্করণে পরীক্ষা দিতে ইচ্ছুক। কারণ যে প্রার্থী যে সংস্করণে পরীক্ষা দেবে, তার জন্য কেবল সেই সংস্করণের প্রশ্নই বরাদ্দ রাখা হবে। পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে সংস্করণ পরিবর্তনের কোনো সুযোগ থাকবে না।
আরো পড়ুন: