তোমাকে পাওয়ার জনে্য, হে স্বাধীনতা

এসএসসি (ssc) বা মাধ্যমিকির সকল অধ্যায় দেখতে এখানে যাও

তোমাকে পাওয়ার জনে্য, হে স্বাধীনতা তোমাকে পাওয়ার জনে্য আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায় ? আর কতবার দেখতে হবে খা-বদাহন ?
তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা, সাকিনা বিবির কপাল ভাঙল, সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল হরিদাসীর। তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা, শহরের বুকে জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক এলো দানবের মতো চিৎকার করতে করতে তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা, ছাত্রাবাস, বিস্ত উজাড় হলো। রিকয়েললেস রাইফেল আর মেশিনগান খই ফোটাল যত্রতত্র। তুমি আসবে বলে ছাই হলো গ্রামের পর গ্রাম। তুমি আসবে বলে বিধ্বস্ত পাড়ায় প্রভুর বাস্তুভিটার ভগ্নস্তপে দাঁড়িয়ে একটানা আর্তনাদ করল একটা কুকুর। তুমি আসবে বলে, হে স্বাধীনতা, অবুঝ শিশু হামাগুড়ি দিল পিতা-মাতার লাশের উপর। তোমাকে পাওয়ার জনে্য, হে স্বাধীনতা, তোমাকে পাওয়ার জনে্য আর কতবার ভাসতে হবে রক্তগঙ্গায় ? আর কতবার দেখতে হবে খা-বদাহন ? স্বাধীনতা, তোমার জনে্য থুত্থুড়ে এক বুড়ো উদাস দাওয়ায় বসে আছেন – তাঁর চোখের নিচে অপরাহ্নের দুর্বল আলোর ঝিলিক, বাতাসে নড়ছে চুল।
২২৮ মাধ্যমিক বাংলা সাহিত্য
স্বাধীনতা, তোমার জনে্য মোল্লাবাড়ির এক বিধবা দাঁড়িয়ে আছে নড়বড়ে খুঁটি ধরে দগ্ধ ঘরের। স্বাধীনতা, তোমার জনে্য হাড্ডিসার এক অনাথ কিশোরী শন্য থালা হাতে বসে আছে পথের ধারে। তোমার জনে্য, সগীর আলী, শাহবাজপুরের সেই জোয়ান কৃষক, কেষ্ট দাস, জেলেপাড়ার সবচেয়ে সাহসী লোকটা, মতলব মিয়া, মেঘনা নদীর দক্ষ মাঝি, গাজী গাজী বলে যে নৌকা চালায় উদ্দাম ঝড়ে, রুস্তম শেখ, ঢাকার রিকশাওয়ালা, যার ফুসফুস এখন পোকার দখলে আর রাইফেল কাঁধে বনে জঙ্গলে ঘুরে-বেড়ানো সেই তেজি তরুণ যার পদভারে একটি নতুন পৃথিবীর জন্ম হতে চলেছে – সবাই অধীর প্রতীক্ষা করছে তোমার জনে্য, হে স্বাধীনতা। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে জ্বলন্ত ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে, নতুন নিশান উড়িয়ে, দামামা বাজিয়ে দিগি¦দিক এই বাংলায় তোমাকে আসতেই হবে, হে স্বাধীনতা। শব্দার্থ ও

টীকা : সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল হরিদাসীর- হরিদাসী বিধবা হলো। সনাতন ধর্মের মেয়েদের বিয়ের পর সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেওয়া হয়। তার স্বামী মারা গেলে সেই সিঁদুর মুছে ফেলা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের দেশের এমন অনেক হরিদাসীর স্বামী মুক্তিযুদ্ধ করতে গিয়ে শহিদ হয়েছেন। হরিদাসীর স্বামীও শহিদ হয়েছেন- এ এটি বোঝানোর জন্য বাক্যটি ব্যবহৃত হয়েছে; যত্রতত্র – যেখানে সেখানে, সব জায়গায়; তুমি আসবে বলে … ছাত্রাবাস, বিস্ত উজাড় হলো – স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাঙালিদের ওপর বীভৎস ও ভয়ংকর আক্ষমণ চালায়। তারা গ্রামের পর গ্রাম আগুনে পুড়িয়ে দেয়। তাদের সেই আক্ষমণ থেকে ছাত্রদের ছাত্রাবাস, গরীব মানুষের থাকার জায়গা, বিস্তও রক্ষা পায়নি। পাকিস্তানি সেনারা ছাত্রাবাস ও বিস্ততেও আক্ষমণ করে, এবং সেখানকার মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করে এবং পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়; থুত্থুড়ে এক বুড়ো – বয়সের ভারে বিধ্বস্ত লোক, যার বয়স অনেক হয়েছে এবং চলাচল করতে যার কষ্ট হয়; রুস্তম শেখ … এখন পোকার দখলে – রুস্তম শেখ নামের এক রিক্শাওয়ালা যিনি যুদ্ধে শহিদ হয়েছেন। মৃত অবস্থা বোঝানোর জন্য বলা হয়েছে ‘যার সুখদুখ এখন পোকার দখলে’।

এসএসসি (ssc) বা মাধ্যমিকির সকল মডেল টেস্ট কুইজ দেখতে এখানে যাও

এসএসসি (ssc) বা মাধ্যমিকির অধ্যায়ভিত্তিক অনুশীলন করতে এখানে যাও

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline