
তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে বিকশিত করার জন্য দেশের আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যম স্তরের কর্মকর্তাদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ‘এডভান্সড সার্টিফিকেশন ফর ম্যানেজমেন্ট প্রফেশনালস (এসিএমপি)’ প্রোগ্রাম চালু করতে যাচ্ছে সরকার।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, এসিএমপি প্রোগ্রাম চালুর লক্ষ্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলে (বিসিসি) বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের লিভারেজিং আইসিটি ফর গ্রোথ, এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড গভর্নেন্স (এলআইসিটি) প্রকল্প হতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ংকে (ইওয়াই) নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আগামী ১০ আগস্ট এসিএমপির কার্যক্রম শুরু হতে পারে। দেশের আইটি প্রতিষ্ঠানের ৫শ’রও বেশি মধ্যম স্তরের কর্মকর্তাকে এসিএমপি প্রোগ্রামের আওতায় প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, দেশে এবং বিদেশে আইটি এবং আইটিইএস কোম্পানিগুলোর জন্য প্রায় অভিন্ন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দক্ষতাসম্পন্ন মানুষের অভাব। সরকার তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে বিকশিত করার জন্য প্রতিযোগিতামূলক সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে আইটি এবং আইটিইএস খাতের জন্য দক্ষ মানুষ তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ংকে দেশের একটি স্বনামখ্যাত শিক্ষালয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলে এসিএমপি প্রোগ্রাম চালু করতে বলা হয়েছে। যাতে কোর্স কারিকুলাম ও মডিউলে দেশ এবং বিদেশের প্রশিক্ষকদের অভিজ্ঞতার প্রতিফলন ঘটে। স্বনামখ্যাত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হলে ঐ প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষকরা পরবর্তীতে প্রশিক্ষণ অব্যাহত রেখে দেশের আইটি শিল্পকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখতে পারবে।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার সরকার বলেন, আইটি খাতের বিকাশে আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তাদের দক্ষতা উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই। আর দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রয়োজন মানসম্মত প্রশিক্ষণ। দেশ ও বিদেশের প্রশিক্ষকরা এসিএমপি প্রোগ্রামের আওতায় প্রশিক্ষণের গুণগত মান বজায় রেখেই আইটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যম স্তরের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেবে।
ইওয়াই এর বিজনেস অ্যাডভাইজারি সার্ভিসের প্রকল্প পরিচালক বিদ্যুত্ ঠাকুর বলেন, ইওয়াই ইতোমধ্যে বাংলাদেশের আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যম স্তরের কর্মকর্তাদের কোন কোন ক্ষেত্রে দক্ষতার অভাব রয়েছে তা নিয়ে একটি জরিপ পরিচালনা করে। কারিকুলাম ও মডিউল তৈরির জন্য এ জরিপ প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ইতোমধ্যে অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়েছে।
জরিপের উপর ভিত্তি করে যেসব বিষয় প্রশিক্ষণে যুক্ত হতে পারে তার মধ্যে অন্যতম সোস্যাল, মোবাইল, অ্যানালাইটিকস অ্যান্ড ক্লাউড (এসএমএস(SMS)ি), নেটওয়ার্কিং এবং সিকিউরিটি, বিগ ডাটা অ্যানালাইটিকস, এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্লানিং (ইআরপি), কাস্টমার রিলেশনশিপ ম্যানেজমেন্ট (সিআরএম), রোবোটিকস, আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স (এআই), ইন্টারনেট অব থিংস (আইওটি), প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, কাস্টমার ম্যানেজমেন্ট, পিপল ম্যানেজমেন্ট স্কিলস।
এলআইসিটি প্রকল্পের কম্পোনেন্ট টীম লিডার সামি আহমেদ বলেন, নীতিমালা প্রণয়নসহ সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে আগামীতে আইটি খাতে বড় ধরনের ইতিবাচক ধারার পরবির্তন ঘটতে যাচ্ছে। এ খাতে বিনিয়োগকারিদের যেমন আবির্ভাব ঘটবে, তেমনি দেশে নতুন নতুন সফটওয়্যার, বিপিও ও হার্ডওয়্যার ইন্ডাষ্ট্রি গড়ে উঠবে। এসব পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে দেশীয় আইটি প্রতিষ্ঠানের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। আর আইটি প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে মধ্যম স্তরের কর্মকর্তারা। এজন্য মধ্যম স্তরের কর্মকর্তাদের দক্ষতা উন্নয়নে এসিএমপি কার্যক্রমের আওতায় প্রশিক্ষণের জন্য একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছে এলআইসিটি প্রকল্প।
আরো পড়ুন: