উচ্চ মাধ্যমিক এইচএসসি রসায়ন ১মপত্র : তড়িৎ রাসায়নিক কোষ

তড়িৎ রাসায়নিক কোষ

বাহ্যিক বর্তনীর মধ্য দিয়ে ইলেক্ট্রন প্রবাহ যে দিকে যাবে, তড়িৎপ্রবাহ তার বিপরীত দিকে যাবে

গ্যালভানিক সেলে যে তড়িৎদ্বারে জারণ হয়, তা ঋণাত্মক তড়িৎদ্বার এবং একে অ্যানোড বলে

যে তড়িৎদ্বারে বিজারণ হয় তা ধনাত্মক তড়িৎদ্বার এবং একে ক্যাথোড বলে

প্রাথমিক কোষ ২ প্রকার-

১. এক তরল কোষ, যেমন- লেকল্যান্স কোষ

২. দুই তরল কোষ, যেমন- ডেনিয়েল কোষ

গ্যালভানিক সেলের প্রকৃষ্ট উদাহরণ- ডেনিয়েল সেল

কোষের প্রতিটি তড়িৎদ্বার ও তড়িৎ বিশ্লেষ্য যুগলকে অর্ধকোষ বলে

প্রমাণ তড়িৎদ্বার বিভবকে প্রমাণ তড়িৎদ্বার বিজারণ বিভবও বলে

সামগ্রিক কোষের বিভব বা পটেনশিয়াল ধনাত্মক হয়, তবে বিক্রিয়াটি স্বতঃস্ফূর্ত হবে

কোন দ্রবণের অম্লত্ব বা pH মাপার সহজতম পদ্ধতি হচ্ছে pH মিটার ব্যবহার করা

শুষ্ক কোষে বিদ্যুৎ উত্তেজক হিসেবে NH4Cl এর পেস্ট এবং ছদন নিবারক হিসেবে কঠিন MnO2 ব্যবহৃত হয়

তড়িৎদ্বারে বিভবের মান নির্ণয়ের সময় কোষে ব্যবহৃত সকল তড়িৎদ্বারের শর্তসমূহ সমান হতে হয়। যেমন-

১. রাসায়নিক কোষে 1 molar দ্রবণ নিতে হয়

২. তড়িৎদ্বারের সাতে যদি কোন গ্যাস সংশ্লিষ্ট থাকে তবে গ্যাসের চাপ 1 atm হতে হয়

৩. তাপমাত্রা 25ᵒC (298K) এ স্থির রাখতে হয়

৪. যে সব তড়িৎদ্বারে কোন ধাতব বস্তুর সংযোগ থাকে না, সে সব ক্ষেত্রে প্লাটিনাম ধাতু ব্যবহার করা হয়

উভমুখী কোষের শর্ত : একটি কোষকে উভমুখী হতে হলে নিম্নোক্ত শর্তাদি অবশ্যই পালন করতে হবে-

১. যদি কোষটির নিজস্ব তড়িচ্চালক বলের সমান তড়িচ্চালক বল বিশিষ্ট একটি বাহ্যিক উৎসের সাথে বিপরীত দিকে সংযুক্ত করা হয়, কোষটির ভিতর কোন রাসায়নিক বিক্রিয়া বা অন্য কোন পরিবর্তন ঘটবে না; কোন দিকে কোন বিদ্যুৎও প্রবাহিত হবে না

২. বাহ্যিক উৎসের তড়িচ্চালক বলের মান অতি সামান্য কমানো হলে কোষ বাহ্যিক উৎসের দিকে বিদ্যুৎ প্রবাহিত করবে

৩. বাহ্যিক উৎসের তড়িচ্চালক বলের মান অতি সামান্য বাড়ালে উৎস থেকে কোষের দিকে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হবে

৪. শর্ত ২-র ক্ষেত্রে যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটবে, শর্ত ৩-র ক্ষেত্রে তার বিপরীত রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটবে

ECell = Eox(anode) – Eox(cathode)

ECell = কোষের তড়িচ্চালক বল

Eox(anode) = অ্যানোডের জারণ বিভব

Eox(cathode) = ক্যাথোডের জারণ বিভব

প্রমাণ হাইড্রোজেন তড়িৎদ্বার বিভবের মান শূণ্য

ধাতুর বা ধাতব আয়ন অথবা ইলেক্ট্রোড এবং ইলেক্ট্রোলাইটের মধ্যে অবস্থিত তড়িচ্চালক বলকে উপস্থাপনের জন্য একটি তির্যক রেখা ব্যবহার করা হয়। যেমন- Ag/Ag+ বা Pt, H2(g)/H(aq)

Eᵒ কোষ = +, কোষ বিক্রিয়া স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ঘটে

অর্ধকোষের শ্রেণীবিভাগ :

১. ধাতু-ধাতব আয়ন অর্ধকোষ

২. ধাতুর অ্যামালগাম-ধাতব আয়ন অর্ধকোষ

৩. ধাতু ও তার অদ্রবণীয় লবণ সম্বলিত অর্ধকোষ

৪. গ্যাস অর্ধকোষ

৫. জারণ-বিজারণ অর্ধকোষ

অ্যানোড অর্ধকোষ : যে অর্ধকোষে জারণ ঘটে

ক্যাথোড অর্ধকোষ : যে অর্ধকোষে বিজারণ ঘটে

ক্ষয় বিক্রিয়া সাধারণত অ্যানোডে সংঘটিত হয়

একটি পূর্ণাঙ্গ তড়িৎ কোষের অর্ধকোষ ২টির মধ্যে সরাসরি সংযোগকে মধ্যবর্তীস্থানে দুটি খাড়া লাইন দিয়ে উপস্থাপন করা হয়

Zn/ZnSO4 ‖ CuSO4/Cu

লবণ সেতু ব্যবহার করলে ২টি অর্ধকোষের মধ্যে পরোক্ষ সংযোগ স্থাপনের জন্য ২টি খাড়া লাইন () ব্যবহার করা হয়

Zn/ZnSO4 ‖ CuSO4/Cu

বিজ্ঞানী নার্নস্ট তড়িৎ রাসায়নিক কোষের তড়িৎচালক বলের জন্য একটি সাধারণ সমীকরণ প্রকাশ করেন-

ECell = EOCell In

এখানে,

ECell = সেল পটেনশিয়াল

T = পরম তাপমাত্রা

n = বিক্রিয়ায় স্থানান্তরিত ইলেক্ট্রনের মৌল সংখ্যা

[ ] = ঘনমাত্রা

F = প্রবাহিত বিদ্যুৎ (ফ্যারাডে)

EOCell = সেলের প্রমাণ পটেনশিয়াল

নার্নস্টের প্রস্তাবিত তত্ত্বানুসারে, প্রত্যেকটি ধাতু এবং হাইড্রোজেনের ধনাত্মক (+) আয়ন হিসেবে দ্রবণে যাওয়ার একটি সহজাত প্রবণতা আছে। এ প্রবণতার কারণে ধাতুকে তার আয়নের দ্রবণে স্থাপন করলে ধাতু থেকে দ্রবণের দিকে একটি চাপের সৃষ্টি হয়। এ চাপকে ধাতুর দ্রবণ চাপ বলে।

শুষ্ক কোষ

১. এক্ষেত্রে তরল দ্রবণের পরিবর্তে ইলেক্ট্রোলাইটের পেস্ট ব্যবহার করা হয়

২. অ্যানোড হিসেবে একটি জিংকের পাত্র এবং পাত্রের মাঝখানে অবস্থিত কার্বন দণ্ডটি ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহৃত হয়

৩. কার্বন দণ্ডের চারদিকে MnO3, গ্রাফাইট চূর্ণ, সামান্য ZnCl2 এবং অতিরিক্ত NH4Cl এর একটি পেস্ট দিয়ে জিংক পাত্র পূর্ণ করা হয়

৪. কার্বনদণ্ডের চারপাশে কার্বন এবং MnO2 এর গুঁড়া ব্যবহার করে ক্যাথোডের পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল বাড়ানো হয়

৫. MnO2 উৎপাদিত H2(g) কে জারিত করে কোষকে পোলারণের ক্রিয়া থেকে মুক্ত রাখে

৬. লেকল্যান্স শুষ্ক কোষের তড়িচ্চালক বল 1.5 Volt

শুষ্ক কোষে সংঘটিত বিক্রিয়াসমূহ :

অ্যানোড বিক্রিয়া- Zn-2e → Zn++

ক্যাথোড বিক্রিয়া- 2NH+4+2MnO2+4H­­2O+2e → 2NH4OH+2Mn(OH)3

কোষের তড়িচ্চালক বল (E.m.f)- 1.5 Volt

সঞ্চয়ী কোষ

১. ১৮৫৯ সালে বিজ্ঞানী প্ল্যান্ট লেড এসিড সঞ্চয়ী কোষ আবিষ্কার করেন

২. এ কোষে পুরু কাঁচ পাতের মধ্যে 1.15 আপেক্ষিক গুরুত্বের H2SO4 এর মধ্যে কয়েকটি লেডের পাত সমান্তরালভাবে ডুবানো থাকে

৩. ধনাত্মক পাত্রের ঝাঁঝরার ফাঁকগুলো রেড Pb3O4(PbO2+PbO) ও H2SO4 মিশ্রণে তৈরি পেস্ট দ্বারা এবং ঋণাত্মক পাতের ঝাঁঝরার ফাঁকগুলো লেড মনোক্সাইড PbO ও H2SO4 এর মিশ্রণে তৈরি পেস্ট দিয়ে বন্ধ থাকে

৪. কোষটি উভমুখী এবং যখন H2SO4 এর আপেক্ষিক গুরুত্ব 1.15 থাকে তখন এর E.m.f 2.03 Volt

৫. ব্যবহারের ফলে E.m.f এর মান 1.7 Volt এ নেমে আসলে একে পুনরায় চার্জ করতে হয়

৬. মোটরগাড়িতে ব্যবহৃত 12 Volt এর ব্যাটারিতে ৬টি কোষ সারিবদ্ধভাবে সংযোজন করা হয়

৭. লেড সঞ্চয়ী কোষকে এসিড সঞ্চয়ী কোষও বলে

৮. বিজ্ঞানী এডিসন নিকেল অক্সাইড সঞ্চয়ী কোষ আবিষ্কার করেন বলে একে এডিসন সঞ্চয়ী কোষ বা ক্ষারীয় কোষ বলে

৯. এতে আয়রন অ্যানোড এবং নিকেল সেস্কুই অক্সাইড (Ni2O3) গুড়ো যুক্ত নিকেল পাত ক্যাথোড হিসেবে ব্যবহৃত হয়

১০. এ কোষের E.m.f মান 1.35 Volt

25ᵒC তাপমাত্রায় প্রমাণ বিজারণ বিভব :

তড়িৎদ্বার

25ᵒC তাপমাত্রায় বিজারণ বিভব

সক্রিয়তার ক্রম (যেটি যত নিচে, সেটি তত সক্রিয়)

Li+/Li

-3.05

K+/K

-2.93

Ca++/Ca

-2.87

Na+/Na

-2.71

Mg2+/Mg

-2.37

Al3+/Al

-1.66

Mn++/Mn

-1.18

Zn++/Zn

-0.76

Cr++/Cr

-0.74

Fe2+/Fe

-0.44

Cd++/Cd

-0.40

Co++/Co

-0.28

Ni++/Ni

-0.25

Sn2+/Sn

-0.14

Pb2+/Pb

-0.13

H+/H2(g), Pt

0.00

Sn4+/Sn, Pt

+0.15

Cl/AgCl(s), Ag

+0.22

Cl/Hg2Cl2(s), Hg

+0.28

Cu2-/Cu

+0.34

I/I2, Pt

+0.54

Ag+/Ag

+0.80

Br/Br2, Pt

+1.08

Cl/Cl2, Pt

+1.36

Au3+/Au

+1.36

Ce4+, Ce3+ /Pt

+1.61

Co3+, Co2+ /Pt

+1.82

Pt/ F2(g), 2F

+2.87

HF, F2(g)/ Pt

+3.06

মন্তব্য করুন

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline