৮৮ হাজার শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা গোপন রেখেছে ডাচবাংলা ব্যাংক।
ডাচবাংলা ব্যাংকের বিরুদ্ধে গত তিন বছর ধরে ৮৮ হাজার শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির ১২ কোটি টাকা বিতরণ না করে গোপন রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ডাচবাংলার মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস রকেটের মাধ্যমে এই টাকা প্রায় তিন বছর আগে ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করার কথা ছিল। কিন্তু ডাচবাংলার কয়েকজন কর্মকর্তা ও মাধ্যমিক শিক্ষা উপবৃত্তি প্রকল্পের দুইজন কর্মকর্তার একটি সিন্ডিকেট এই ১২ কোটি টাকার তথ্য গোপন রেখেছে। দৈনিকশিক্ষার অনুসন্ধানে এ তথ্য জানা যায়। উপবৃত্তি না পেয়ে এই শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে মনে করেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, ১৮৩ উপজেলার ৮৮ হাজার ৫৮৩ জন শিক্ষার্থীর ২০১৪ খ্রিস্টাব্দের জুলাই-ডিসেম্বর কিস্তি থেকে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি-জুন কিস্তির টাকা বিতরণ করা হয়নি। টাকাটা রকেটের মাধ্যমে বিতরণ করার কথা ছিল। বিধান অনুযায়ী উপবৃত্তির টাকা কোনো কারণে বিতরণ না হলে সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হয়। প্রকল্প পরিচালককে জানাতে হয়।
৮৮ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে গাজীপুর সদর উপজেলায় রয়েছে এক হাজার ৯২৯ জনের উপবৃত্তির ৩৯ লাখ টাকা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একজন কর্মকর্তা দৈনিকশিক্ষাকে জানান, উপবৃত্তির তালিকাভুক্ত কয়েকজন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা অফিসে যোগাযোগ করেছিল। কিন্তু আমরা কোনো সদুত্তর দিতে পারিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একজন পরিচালক বলেন, এটা একটা সিন্ডিকেট।মাধ্যমিক উপবৃত্তি প্রকল্পে বছরের পর বছর কর্মরত ফরিদ উদ্দিন ও তৌফিক এরফানকে ঢাকার বাইরে বদলি না করলে সিন্ডিকেট ভাঙবে না। আর সিন্ডিকেট না ভাঙলে সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাট হতেই থাকবে। আর্থিক অসচ্ছল, মেধাবী ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর পড়াশোনা অব্যাহত রাখা, বাল্যবিয়েরোধসহ বিভিন্ন ভালো উদ্দেশ্যে সরকার উপবৃত্তি চালু করেছে।
১২ কোটি টাকা গোপন রাখার অভিযোগের বিষয়ে ফরিদ উদ্দিন ও তৌফিক এরফানের মতামত জানার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
ডাচবাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক মো: মাহাবুবুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমারা জানা ছিল না। ১২ কোটি টাকা কেন ও কিভাবে এতবছর গোপন রেখেছে ডাচবাংলা কর্তৃপক্ষ তা খুঁজে বের করা হবে। জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
সরকারের ১২ কোটি টাকার তিন বছরের সুদ কে খেয়েছে তা খুঁজে বের করা ও উপবৃত্তিবঞ্চিত ৮৮ হাজার শিক্ষার্থীকে অবিলম্বে উপবৃত্তি প্রদানের দাবী জানিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট নেতা মো: নজরুল ইসলাম রনি।
0 responses on "ডাচবাংলা ব্যাংকের বিরুদ্ধে ৮৮ হাজার শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা গোপন রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে"