উচ্চ মাধ্যমিক এইচএসসি জীববিজ্ঞান উদ্ভিদবিজ্ঞান : জৈব প্রযুক্তি – বায়োটেকনোলজি

 

জৈব প্রযুক্তি – বায়োটেকনোলজি

প্রারম্ভিক আলোচনা:

এই অধ্যায়টা ভালো লাগার মত। কিছু জিনিস বুঝতে পারলে বেসিক কনসেপ্ট থেকেই বহুনির্বাচনী প্রশ্ন উত্তর করা যায়।

অধ্যায় সারবস্তু:
১. দুধ থেকে দই, মাখন, পনির, মদ, এলকোহল, পাউরুটি তৈরিতে অনেক আগে থেকেই বায়োটেকনোলজি ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

২. কার্ল এরেকি ১৯১৯ সালে বায়োটেকনোলজি শব্দটি প্রবর্তন করেন। [ *** বিভিন্ন বায়োলজিকাল টার্মের প্রবর্তন চার্ট দ্রষ্টব্য।]

(অল্প কিছু তথ্য, যাতে কার্ল এরেকি কে একেবারে অচেনা না লাগে: উনি হাঙ্গেরীতে ১৮৭৮ সালে জন্ম নেওয়া একজন বিজ্ঞানী যিনি জার্মানীতে প্রধানত কাজ করতেন। তিনি একটা বই লেখেন যে অনেক বড় ফার্ম থেকে মাংস, চর্বি, দুধ পাওয়ার জন্য কি কি করা যেতে পারে, ওখানেই বায়োটেকনোলজি টার্ম টা ব্যবহার করেন। এই বইটা প্রচুর বিক্রি হয়। উনার ফার্মটা অনেক বড় ছিল। ১৯৫২ সালে উনি মারা যান।)

৩. টিস্যু কালচারের জনক বলা হয় জার্মান বিজ্ঞানী হাবারলান্দৎ কে। উনিই প্রথম টিস্যু কালচারের সম্ভাবনাকে প্রতিষ্ঠিত করেন।

৪. মৌলিক উপাদান সস্পন্ন কালচার মিডিয়ামকে “ব্যাসাল মিডিয়াম” বলে।

৫. অ্যাগার জেল দানা মিডিয়ামের একটা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।

৬. একটা কোষ নির্দিষ্ট ভাবে বিভাজিত না হয়ে অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বিভাজিত হলে একটা কোষপিন্ড তৈরি হয়ে “ক্যালাস” গঠন করে।

৭. টিস্যু কালচারের জন্য উদ্ভিদের যে অংশ পৃথক করে নেওয়া হয়, সেটা এক্সপ্লান্ট, কিন্তু ক্যালাস থেকে অণু চারা তৈরি হয়, সেটা প্ল্যান্টলেট।

(এই ব্যাপারটা একটু কনফিউশনের মত হতে পারে, এক্স “Ex” বোঝায় “out of” বোঝাতে, যেমন exclude, exhaust, ঠিক তেমনই ওই অংশটি out of plant, তাই এক্সপ্ল্যান্ট। আর প্ল্যান্টলেট বলতে প্ল্যান্টের বাচ্চা বোঝানো যায়।)

৮. স্বাভাবিকভাবে ভাবে বীজ উৎপন্ন করে না: থুজা, সাগর কলা।

৯. বীজ দ্বারা গাছ উৎপন্ন হওয়ায় অত সফল না: নীল, কদম, জারুল, সেগুন।

১০. পরাগরেণু ও পরাগধানী কালচার করে উদ্ভিদের হ্যাপ্লয়েড লাইন প্রতিষ্ঠা করে টিস্যু কালচার করা হয়। এটি সম্ভব হয়েছে Gramineae, Solanaceae, Cruciferae গোত্রের ক্ষেত্রে।

১১. সোমাক্লোনাল ভ্যারিয়েশন কাজে লাগিয়ে উন্নত জাতের গম উদ্ভাবন করা হয়েছে।

(এই সোমাক্লোনাল ভ্যারিয়েশনটা হয় ক্যালাস তৈরির সময়। ক্যালাসে যে কোষের একটা স্তুপ তৈরি হয়, কিছু কিছু কোষে একটু মিউটেশন ঘটে, এটাই সোমাক্লোনাল ভ্যারিয়েশন)

১২. বায়োগ্যাস: সবচেয়ে বেশি থাকে মিথেন গ্যাস, ৬০-৭৫%। এই জন্যই এটি জ্বালানী রূপে ব্যবহার করা যায়।

১৩. চীনে ৭০ লক্ষ বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট আছে।

১৪. দু’প্রকার মডেল প্লান্ট, ভাসমান ও স্থিরডোম মডেল। স্থিরডোমটা বাংলাদেশের উপযোগী।

১৫. ডাইজেস্টার-এ ব্যাকটেরিয়া কাজ করে (কাঁচামাল গুলো ডাইজেস্ট করে), ফলে গ্যাস উৎপন্ন হয়।

১৬. কাঁচামালের অনুপাত,

  • গোবর : পানি = ১ : ১
  • হাঁস-মুরগীর মল : পানি = ১ : ৩

(গোবরের চেয়ে হাঁস-মুরগীর মলে পানি বেশি দেওয়া লাগে)

১৮. এনজাইম ব্যবহারের একটা ছক রয়েছে:

অ্যামাইলেজ: পাউরুটি, মদ, সিরাপ তৈরিতে

প্রোটিয়েজ: মদ ও ওয়াশিং পাউডারে

পেকটিনেজ: ফলের নির্যাস তৈরি ও কফির গাঢ় লিকার তৈরিতে

১৯. মাখনের pH ৪.৩ এর কম থাকায় ব্যাকটেরিয়া একে সহজে নষ্ট করতে পারে না।

২০. পনিরে দুধের প্রধান প্রোটিন কেজিন থাকে।

২১. দই-এ দুধের ল্যাকটোজ ব্যবহৃত হয়।

২২. এডওয়ার্ড জেনার গুটি বসন্তের টিকা আবিষ্কার করেন।

(তুরষ্কে নাকে নস্যি নিয়ে রোগ প্রতিরোধ করার একটা ট্রেন্ড চালু ছিল, এক ইংরেজ মহিলা এটা দেখে নিজ দেশে নস্যি নিয়ে শিশুদের বিলান, যেটা জেনারও পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে জেনার গুটিবসন্ত নিয়ে কাজ করছিলেন, তখন এক দুধবিক্রেতা ওনাকে জানায় যে যাদের গোবসন্ত হয়, তাদের আর গুটিবসন্ত হয় না, এই তথ্য জেনেই পরে উনি গুটি বসন্তের টিকা আবিষ্কার করেন।)

২৩. লুই পাস্তুর জলাতঙ্কের টিকা আবিষ্কার করেন।

২৪. টিকা চার প্রকারের।

২৫. জিন ক্লোনিং করে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের টিকা উৎপাদন করা হয়।

২৬. ১৯২৯ সালে আলেকজান্ডার ফ্লেমিং পেনিসিলিন আবিষ্কার করেন।

(এখানেও একটা ছোট্ট মজার গল্প, উনি ব্যাকটেরিয়া নিয়ে কাজ করছিলেন, ওনার ঠাণ্ডা লেগেছিল, হাঁচি দিয়ে ফেলায় একটা ব্যাকটেরিয়াল কালচার আর কাজ না করে একেবারে ফেলে না দিয়ে তিনি কোন কারণে সংরক্ষণ করেন। পরে খেয়াল করে দেখেন যে যেখানে সর্দি পড়েছিল, ওখানে ব্যাকটেরিয়া কোন কারণে মরে যাচ্ছে, এভাবেই পেনিসিলিন আবিষ্কার করেন)

২৭. পেনিসিলিয়াম আবিষ্কার হয়েছিল Penicillium natatum থেকে, কিন্তু এখন উৎপাদন করা হয় Penicillium chrysogenum থেকে।

২৮. নিম্নতর জীবকোষে মুল ক্রোমোসোমাল ডিএনএ ছাড়াও আলাদা করে একটা ছোট বৃত্তাকার ডিএনএ অণু থাকে, সেটাকে প্লাজমিড বলে।

২৯. F প্লাজমিড এক ব্যাকটেরিয়া থেকে অন্য ব্যাকটেরিয়া জেনেটিক তথ্য স্থানান্তরিত হয়।

৩০. R প্লাজমিড, অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে Resistance দেখায়।

৩১. ডিএনএ কাটার জন্য ব্যবহৃত হয় “রেস্ট্রিকশন এনজাইম”।

(রেস্ট্রিকশন কথাটা এজন্য এসেছিল যে কিছু ব্যাকটেরিওফাজ কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়াকে আক্রান্ত করতে পারতো না। দেখা যায়, কিছু এনজাইম থাকে ওই সব ব্যাকটেরিয়ায়, যার জন্য তারা ওই ব্যাকটেরিওফাজ কে রেস্ট্রিক্ট করতে পারে। মূলত এই এনজাইম ভাইরাসের ডিএনএ পেলে কেটে ফেলে, পরে ওই এনজাইম অন্যান্য ডিএনএ কাটার কাজেও ব্যবহার করা শুরু হয়। )

৩২. ডিএনএ কে জোড়া লাগানো হয় DNA লাইগেজ এনজাইম দ্বারা। লাইগেজ কথাটা দিয়েই জোড়া লাগানো বোঝায়।

৩৩. সূর্যমুখীর একটি জিনকে ঘাসে ঢোকানো হয় Agrobacterium tumifaciens ব্যাকটেরিয়ার প্লাজমিড ব্যবহার করে। ( এই ব্যাকটেরিয়াটি প্ল্যান্ট জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এ বহুল ব্যবহৃত, তাই ভর্তি পরীক্ষায় দিয়ে দেওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা থাকে, তেমনি আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাকটেরিয়া হল Bacillus thuringiensis, যাতে পতঙ্গরোধী bt টক্সিন থাকে, এই জিনটা উদ্ভিদে ঢুকিয়ে কীটপতঙ্গের আক্রমণ থেকে বাঁচানো যায়। এই প্রযুক্তি তে উদপাদিত সয়াবিন-এর তেল আমাদের দেশে আমদানী হয়)

উদ্ভিদবিজ্ঞান সকল অধ্যায় দেখতে এখানে যান

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline