
কাল থেকে ১১ দফা দাবি আদায়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট, জেলায় জেলায় মিছিল, সমাবেশ শুরু।
জাতীয়করণসহ ১১ দফা দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটির ডাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবিরাম ধর্মঘট শুরু কাল রোববার (১১ মার্চ)। একই দাবিতে ১২ মার্চ সব জেলায় শিক্ষক-কর্মচারিরা সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করবেন। ১৪ মার্চ জাতীয় শহীদ মিনারে শিক্ষক মহাসমাবেশ করবেন তারা। এ সময়ের মধ্যে সরকারের তরফ থেকে কোনও ইতিবাচক আশ্বাস বা ঘোষণা না আসলে ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন তারা। শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটির সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আসাদুল হক শনিবার (১০ মার্চ) দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘কোনও ঘোষণা দিলে তা মহাসমাবেশেই দিতে হবে, যে কোনও মূল্যে মহাসমাবেশ হবেই’।
আওয়ামীলীগ ও বাম রাজনৈতিক ঘেঁষা হিসেবে পরিচিত শিক্ষক-কর্মচারীদের প্লাটফর্ম ‘শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটি’র সমন্বয়কারী আসাদুল হক আরও বলেন, জাতীয়করণের দাবিতে ১৪ই মার্চের শিক্ষক মহাসমাবেশ সফল করতে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতার সঙ্গে আমাদের দাবির বিষয়ে মতবিনিময় অব্যাহত রেখেছি। শুক্রবার (৯ মার্চ) একাধিক বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ এম এ আউয়াল সিদ্দিকী, মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দীক, প্রফেসর ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার,মো. আজিজুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক অধ্যক্ষ মো: ফয়েজ হোসেন, মো: আবুল কাশেম, মো: মহসিন রেজা, বিলকিস জামান,মো: শহীদ মোল্লাসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে জাতীয়করণসহ ১১ দফা দাবিতে গত ২৭ জানুয়ারি টানা তিন দিনের ক্লাস বর্জন কর্মসূচির পাশাপাশি শিক্ষক নেতারা দাবি আদায়ের পক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবেৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
অধ্যক্ষ আসাদুল হক বলেন, আমরা আশা করেছিলাম বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার আমাদের ১১ দফা দাবির যৌক্তিকতা উপলদ্ধি করে শিক্ষক সংগ্রাম কমিটির সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেবে। আমাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি পূরণে পদক্ষেপ নেবে সরকার। কিন্তু পরিতাপের বিষয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
১১ দফা দাবি :
১। শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করতে হবে।
২। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ন্যায় বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫% বার্ষিক প্রবৃদ্ধি, পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, বাংলা নববর্ষ ভাতা, বাড়ী ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান করতে হবে।
৩। অনুপাত প্রথা বিলুপ্ত করে সহকারি অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিতে হবে।
৪। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারি প্রধান শিক্ষকের বেতন স্কেল সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহকারি প্রধান শিক্ষকের অনুরূপ প্রদান করতে হবে। শিক্ষক-কমূচারীদের পূর্বের ন্যায় টাইম স্কেল দিতে হবে।
৫। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থিক সুবিধা প্রদানের পরিবর্তে অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ পেনশন চালু করতে হবে।
৬। নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে পাঠদানকারী শিক্ষকসহ বিধিমোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করতে হবে।
৭। ইউনেস্কোর সুপারিশ অনুযায়ী শিক্ষাখাতে জিডিপি’র ৬% এবং জাতীয় বাজেটের ২০% বরাদ্দ রাখতে হবে।
৮। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জনবল কাঠামো যুগোপযোগীকরণ ও সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের চাকরি বিধিমালা অবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে।
৯। শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে বেসরকারি শিক্ষকদের ৩৫% প্রেষণে নিয়োগ দিতে হবে।
১০। কারিগরি শিক্ষা উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি কারিগরি ও ভোকেশনাল বিশ^বিদ্যালয় স্থাপন করতে হবে।
১১। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে হবে।
আরো পড়ুন: