
ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমান বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না, যদিও সমান মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমান স্কেলে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকরা। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত স্কেলে বেতন-ভাতা পাবেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) চূড়ান্ত হওয়া নীতিমালায় এমনটাই বলা হয়েছে। যদিও খসড়া নীতিমালায় ইবতেদায়ি শিক্ষকদের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সমান মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল।
নীতিমালা চূড়ান্তকরণ কমিটি কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এমন প্রশ্নের জবাবে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির মহাসচিব মো: শামসুল আলম বলেন, “নীতিমালাটি অনুমোদনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। যেহেতু ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণ হচ্ছে না, সেহেতু প্রাথমিকের সমমানের স্কেল ধরা হলে প্রশ্ন উঠতে পারে। আর সেই প্রশ্ন এড়াতে “সরকার কর্তৃক নির্ধারিত” শব্দবন্ধ ব্যবহার করা হয়েছে।”
সূত্রমতে, ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দের একই পরিপত্রে নিবন্ধিত হয় বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সমমানের স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা। শুরু থেকেই ৫০০ টাকা করে ভাতা পেতেন এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা। তবে পরে প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি হলেও ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকরা বঞ্চিত থেকে যান। শুধু তা-ই নয়, একই শিক্ষাব্যবস্থায় দাখিল মাদ্রাসার সঙ্গে সংযুক্ত ইবতেদায়ির শিক্ষকরা ৯ হাজার ৯১৮ টাকা বেতন পেলেও স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক পাচ্ছেন আড়াই হাজার টাকা এবং সহকারী শিক্ষকরা পাচ্ছেন মাত্র দুই হাজার ৩০০ টাকা।
নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) অনুমোদিত পাঠ্যবই ও সিলেবাসে পাঠদান করাতে হবে। সহশিক্ষা হিসেবে কেরাত, হামদ, নাত প্রতিযোগিতা, বার্ষিক ক্রীড়া, খেলাধুলা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা, বৃক্ষরোপণ, কাব দল (স্কাউটিং) ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম থাকবে।
মাদ্রাসা নিয়ন্ত্রণ করতে পাঁচ সদস্যের একটি উপজেলা ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক কমিটি গঠিত হবে। এই কমিটির সভাপতি হবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা; মেট্রোপলিটন এলাকায় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। সদস্য সচিব হবেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। কমিটির অন্য সদস্যরা হবেন উপজেলা বা থানা সদরের এমপিওভুক্ত একটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার প্রধান, স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের একজন প্রতিনিধি।
মাদ্রাসা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ইবতেদায়ি মাদ্রাসা আছে ৬ হাজার ৯৯৮টি। তবে ২০১৬ সালের ব্যানবেইসের তথ্য অনুযায়ী ইবতেদায়ি মাদ্রাসার ৩ হাজার ৪৩৩টি। এরমধ্যে অনুদান পাওয়া মাদ্রাসা এক হাজার ৫১৯টি। এসব মাদ্রাসায় ১৫ হাজার ২৪৩ জন শিক্ষক এবং ৫১ হাজার ৯৯৭ জন ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে। তবে এর বাইরেও আরও অনেক মাদ্রাসা রয়েছে বলে দাবি শিক্ষক নেতাদের।
আরো পড়ুন:
সচিবের আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা
দুবেলা ভাতের জন্য ক্লাস ছেড়ে রাস্তায় এসেছি বলেছেন ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষক
One comment
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.
কর্তৃপক্ষ হয়তোবা এবতেদায়ী মাদ্রাসাকে প্রাইমারি স্কুলের সমান মর্যাদা দিতে চায়না। এটা পূরোটাই নির্ভর করছে কর্তৃপক্ষের উপর। তারা ইচ্ছা করলে ১-২ মাসের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করতে পারেন। বিষয়টা কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাব।