বাংলা বানান সতর্কতা ও কিছু মজার গল্প!
===
প্রিলিতে বাংলা বানান নিয়ে প্রশ্ন আসবে। তাছাড়া লিখিত পরীক্ষায় আপনাকে বানানের দিকে সর্বোচ্চ সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। শুধু তাই নয় বাংলা বানানের নিয়ম ও বাক্যশুদ্ধিকরন জাতীয় কিছু প্রশ্ন ও লিখিত পরীক্ষায় থাকবে। আপনি খুব চমৎকার ভাষায় একটা লেখা লিখলেন কিন্তু তার প্রতিটি স্তরে বানানের ভুল থাকলে মার্কস কিন্তু অবশিষ্ট কিছুই থাকবেনা।
:
একদিন এক মেয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করে
-ভাইয়া বিসিএস এর জন্য কী “”পরতে “” হবে?
-শুনে আমি তো লজ্জায় পড়ে গেলাম। তিনি কী পোশাক পরবেন সেটাও কি আমাকে বলে দিতে হবে? কী আজব দুনিয়া! আমি বললাম, আপনার যে পোশাক ভালো লাগে আপনি পরতে পারেন।
-তিনি আমাকে বললেন-ভাইয়া এসব কী বলছেন? আমি জানতে চাইলাম কী বই “”পরতে “” হবে?
– ওহ! এতক্ষনে বুঝলাম, তিনি আসলে জানতে চেয়েছেন কী বই “”পড়তে “”হবে। কী করে বুঝায় “”পরা “” আর “”পড়া “” এই ২টা এক না। “”পরা “” মানে পরিধান করা। আর “”পড়া “” মানে পড়াশুনা করা।
:
আরেকদিন একটা ছেলে জিজ্ঞেস করল, -দাদা “”নারি “” উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন কী খুব গুরুত্বপুর্ন? আমি বললাম এই প্রশ্ন জীবনে ও আসবেনা। বেচারা তো এবার একটু রেগে আমাকে বলছে, তাহলে কি সত্যজিৎ দা আপনি সবার সাথে “”ছাপা “” মেরেছেন?
-আমি বললাম, কেন ভাই কী হল?
-কী হল মানে? আপনি বলেছেন “”নারি “” উন্নয়ন বিষয়ে একটি প্রশ্ন থাকবেই। আর এখন বলছেন এই বিষয়ে কোন প্রশ্নই আসবেনা??
-ভাই, আমি “”নারি “”উন্নয়ন নিয়ে কিছুই বলিনি। বলেছি “”নারী “” উন্নয়ন নিয়ে।
কিভাবে বুঝায় “”নারি “” মানে পারিনা, আর “”নারী “” মানে মহিলা। আবার বলেছেন আমি নাকি “”ছাপা “” মারি, ভাই আমি তো ছাপাখানায় কাজ করিনা।
:
সকালে ঘুম থেকে উঠে ইনবক্সে ঢুকতেই একজন লিখল
-ভাইয়া, আমি “”কী “” কোচিং করব।
-আপনার যে কোচিং ভাল লাগে।
-মানে?
-মানে গানের কোচিং,নাচের কোচিং যেটি ভাল লাগে?
-দাদা মজা করছেন কেন? আমি জানতে চাইলাম কোচিং করব কি না?
-এতক্ষনে বুঝলাম তিনি আসলে জানতে চেয়েছেন, আমি “”কি “” কোচিং করব?
দেখুন “”কি “” আর “”কী “” কিন্তু একনা। যখন প্রশ্নের উত্তরে হ্যা বা না শুধু এটুকুই জানতে চাওয়া হয় তখন হয় ‘কি “”। আবার যখন ব্যখ্যা চাওয়া হয় তখন হবে “”কী””।
যেমন আমি কি কোচিং করব?
হ্যা /না।।
আবার আমি কী কোচিং করব?
-বিসিএস এর কোচিং
:
আসুন কিছু বানানের নিয়ম জেনে নিইঃ
=>দেশ, ভাষা, জাতি, অপ্রানী ও ইতরপ্রানীর ইত্যাদির ক্ষেত্রে “”ই “”কার হয়। যেমন বাঙালি, হিন্দি, তুর্কি।
=>সংস্কৃত শব্দে “”ঈ “” কার হয়। যেমন জননী, নারী।
=>বিদেশী শব্দে “”ষ “” হয় না, যেমন ফটোস্ট্যাট, স্টেশন।
=> তৎসম শব্দে “”ন “” হয়। যেমন কর্নার, বামুন
=>রেফ থাকলে বর্ণে দ্বিত্ব হয়না কার্য্যালয় নয়, হবে কার্যালয়। ধর্ম্মসভা হবেনা, হবে ধর্মসভা।
=> বিস্ময়সূচক শব্দ (যেমন বাঃ,ছিঃ, উঃ) ছাড়া অন্য কোথাও বিসর্গ হবে না।