নেশার টাকার খোঁজে চার যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসায়

নেশার টাকার খোঁজে চার যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসায়

নেশার টাকার খোঁজে চার যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসায়।

কোটা সংস্কার কী আমরা বুঝি না। যখন দেখলাম টিএসসি এলাকায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে বেশ কিছু পোলাপান ভিসির বাড়ি ভাঙচুরের জন্য এগিয়ে যাচ্ছে, তখন আমরা ভেবেছিলাম এটাই মোক্ষম সুযোগ। এ সুযোগে ভিসির বাড়ি গেলে টাকা-পয়সা বা মালামাল লুট করা যাবে। আর এ টাকা দিয়ে আয়েশ করে সেবন করা যাবে ইয়াবা। তবে আমরা পৌঁছার আগেই ভাঙচুর শুরু হয়ে যায়। ভাঙচুরের মধ্যে আমরা খুব একটা সুবিধা করতে পারিনি। শেষটায় ভিসির বাড়ির দুই দারোয়ানে কাছে থাকা দুইটি মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। পরবর্তীতে ওই মোবাইল ফোনের সিম পরিবর্তন করে নতুন সিম ঢুকিয়ে তা ব্যবহার করতে থাকি। আমরা ধরে নিয়েছিলাম পুলিশ আমাদের খুঁজে পাবে না। কারণ সব দায় পড়বে ছাত্রদের ওপর। শেষটায় এই মোবাইল ফোনই আমাদের জন্য কাল হলো। গোয়েন্দা পুলিশ ওই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই আমাদের গ্রেফতার করে।

মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য দিয়েছে গ্রেফতারকৃত চারজন। তারা হচ্ছে রাকিবুল হাসান ওরফে রাকিব, মাসুদ আলম ওরফে মাসুম ও আলী হোসেন শেখ ওরফে আলী ও ফজলে রাব্বী ওরফে সিয়াম । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের (ভিসি) বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও মালামাল চুরির ঘটনায় গত ২৯ এপ্রিল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (দক্ষিণ) একটি টিম তাদেরকে রাজধানীর চাঁনখার পুল এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। তারা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানায়। রিমান্ড শেষে তাদের আদালতের নির্দেশে কারাগার পাঠানো হয়েছে।

মামলার তদন্ত সূত্র জানায়, ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাদের কাছ থেকে হামলাসংশ্লিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। গ্রেফতারকৃতরা বারবার জানিয়েছে, তারা মালামাল লুটে করার উদ্দ্যেশেই ভিসির বাসভবনে গিয়েছিল।

তবে গ্রেফতারকৃতরা হামলা ভাঙচুরের কিছু বর্ণনা দিয়েছে। তারা বলেছে, হামলাকারীদের মধ্যে কে ছাত্র কে অছাত্র তা তারা জানে না। এদের কারো সাথেই তাদের কোনো পরিচয় নেই। হামলাকারীদের কেউ ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে খেয়েছে, কেউ ঠান্ডা বোতল থেকে আয়েশ করে পানি খেয়েছে, কেউ খেয়েছে রান্না করা খাবার। এ অবস্থায় তারা ভিসি বাড়ির বিভিন্ন কক্ষে মূল্যবান মালামাল এবং টাকা পয়সা খুঁজতে থাকে। কিন্তু তাদের আগেই কে বা কারা তা হাতিয়ে নেয়। এরপরও যেসব মালামাল ছিল সেগুলো বহনযোগ্য ছিল না। কিছু না পেয়ে শেষটায় বাড়ির এক কোনে ভয়ে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা দুই দারোয়ানের কাছ থেকে দুইটি মোবাইল ফোন কেড়ে নেই।

তবে মামলার তদন্ত সূত্র জানিয়েছে, তারা দুই দারোয়ানের একজনের কাছ থেকে ১০ হাজার এবং অন্যজনের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। যদিও গ্রেফতারকৃতরা এ টাকার কথা অস্বীকার করেছে। সূত্র জানায়, ওই সময় আরো একটি মোবাইল লুট হয়েছে। যে নিয়েছে সেও গ্রেফতারকৃতদের মতো বহিরাগত। তাকে গ্রেফতার করা গেলে অন্যান্য মালামাল লুটকারীদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে।

ইয়াবা সেবন করতে গিয়ে বন্ধুত্ব : পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত রাকিবুল, মাসুদ ও আলী হোসেন জানিয়েছে, তারা তিনজনই ইয়াবা সেবী। টিএসটি এলাকায় ইয়াবা সেবনের মধ্যে দিয়ে তাদের পরিচয় ও বন্ধুত্ব। আর টিএসসি এলাকায় আড্ডা দিতে দেবার সময়ই পরিচয় শরবত বিক্রেতা আবু সাইদের সঙ্গে।

প্রসঙ্গত, ছাত্রদের কোটা সংস্কারের পক্ষে বিক্ষোভ চলাকালে গত ৯ এপ্রিল রাতে অজ্ঞাতনামা অনেক মুখোশধারী ব্যক্তি হাতে লোহার রড, পাইপ, হ্যামার, লাঠি ইত্যাদি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের দেয়াল টপকে এবং ভবনের ফটকের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে বাসভবনের মূল্যবান জিনিসপত্র, আসবাবপত্র, ফ্রিজ, টিভি, লাইট, কমোড ও বেসিনসহ অনেক মালামাল ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধন করে। এ ঘটনায় গত ১০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র সিকিউরিটি অফিসার এস এম কামরুল আহসান শাহবাগ থানায় মামলা করেন।

 

 

আরো পড়ুন:

আইনের আওতায় আনা হবে উপাচার্যের বাড়িতে হামলাকারীদের বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline