৩৭ তম লিখিত প্রস্তুতিঃ যুদ্ধাপরাধের বিচার।

যুদ্ধাপরাধের বিচার:

::আন্তর্জাতিক আইনঃ ১৯৪৯ সালে জেনেভা কনভেনশনে যুদ্ধ অপরাধের বিচার সম্পর্কে সাধারণ যে নীতিমালা গৃহিত হয় তাতে ১৯৭২-৮৪ সালে বেশ কিছু বিষয় সংযোজনের মাধ্যমে এই এটি স্পষ্টতর হয়ে ওঠে যে, কোন দেশের অভ্যন্তরেও যদি কোন জনগোষ্ঠীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্যোগ নেয়া হয় সেটিও যুদ্ধ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। যুদ্ধ অপরাধের বিচারের যাবতীয় আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ও চুক্তি চূড়ান্ত হয়েছে ১৯৯৮ সালের ১৭ জুলাই, রোমে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্ট (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) প্রতিষ্ঠার সংবিধি পাশের মাধ্যমে। বাংলাদেশসহ জাতি সংঘের সদস্যভুক্ত ৮৯টি দেশের সমর্থক সূচক স্বাক্ষর ও সম্মতিদানের মাধ্যমে এই সংবিধি পাশ হয়।
::বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীঃ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরে হত্যা, লুট, ধর্ষণ, অগ্নিকান্ড ও বিভিন্ন ধ্বংসযজ্ঞের সাথে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নীতি নির্ধারক বা যারা এসব অপরাধের সাথে জড়িত এবং দেশের স্থানীয় অধিবাসী, যারা পাক বাহিনীর সহযোগী হিসেবে এসব কর্মকান্ডে অংশ নিয়েছে তারা উল্লেখিত আইনে যুদ্ধাপরাধী।
::যুদ্ধাপরাধ ও আমাদের সংবিধানঃ আমাদের সংবিধানে ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিল আকারে উত্থাপনের সময় তৎকালীন আইনমন্ত্রী মনোরঞ্জন ধর বলেছিলেন, “জেনেভা কনভেনশনের এমন কোন ধারা নেই, যেটা পাকিস্তানী সৈন্যরা ভঙ্গ করেনি: জেনেভা কনভেনশনের আইনগুলো বিশ্বের সমগ্র রাষ্ট্র, এমনকি পাকিস্তানও গ্রহণ করেছে। বিশ্বে গৃহিত এই যে নীতি, সমগ্র বিশ্বে এই যে নীতি, এই নীতিমালা ভঙ্গ করা যে অপরাধ সেই অপরাধে তারা অপরাধী। সংবিধানের এই এ্যাক্ট বা আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন ১৯৭৩ অবিক্রিত ও কার্যকর থাকলেও এর পরিপ্রেক্ষিতে কোন ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়নি। এ কারণেই যুদ্ধাপরাধ ও গণহত্যার অপরাধে অভিযুক্তদের বিচার করা সম্ভব হয়নি। বরং পুনর্বাসনের চেষ্টা হয়েছে। এদেশের গণহত্যা ও যুদ্ধ অপরাধ প্রসংগে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন ১৯৭৩ সালে জেনেভায় ২৯তম অধিবেশনে কিছু নীতিমালা প্রস্তাবনা ঘোষনা করেছিল। তাতে উল্লেখ করা হয়, “ যে হাজার হাজার বাঙ্গালী নির্যাতন কক্ষে যন্ত্রনা ভোগ করেছেন, নির্যাতনে যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের লাখ লাখ বিধবা ও এতিম সন্তান এবং যারা বেঁচে গেছেন তাদের এটা আশা করা অধিকার রয়েছে যে, ভিন্ন অপরাধের জন্য যারা দায়ি, তারা যেন বিচার থেকে রেহাই না পায়” অধিবেশনে গৃহিত প্রস্তাবনা তৃতীয় অনুচ্ছেদ একটি ন্যায় সঙ্গত দায়িত্ব ও কর্তব্যকে সুস্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে অপরাধীদের বিচার করার অধিকার এবং কর্তব্য বাংলাদেশের রয়েছে।
::যুদ্ধাপরাধ আইনঃ বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য প্রথম আইন পাস হয় ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতির ঘোষণা দ্বারা প্রবর্তিত দালাল আইনটির প্রয়োগ শুরু হয় ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করার মাধ্যমে। একই বছরে আইনটি তিন দফা সংশোধনী হয়। এই আইনের অধীনে ৩৭ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয় এবং বিভিন্ন আদালতে তাদের আইনে আটক যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ নেই, তাদের জন্য সাধারণ ক্ষমা ঘোষণায় আটক ৩৭ হাজারের অধিক ব্যক্তির ভেতর প্রায় ২৬ হাজার ছাড়া পেয়ে যায়। কিন্তু সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার ৫নং ধারার (ক) অনুচ্ছেদে যে বিধান রাখা হয় তাতে কোন অভিযুক্ত যুদ্ধাপরাধী ক্ষমা পেতে পারে না। কারণ, এতে বলা হয়েছে- ‘যারা বর্ণিত আদেশের নিচের বর্ণিত ধারা সমূহে শাস্তিযোগ্য অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত অথবা যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে অথবা যাদের বিরুদ্ধে নিম্নোক্ত ধারা মোতাবেক কোনটি অথবা সব কয়টি অভিযোগ থাকবে।
১. বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর চেষ্টা।
২. বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানোর ষড়যন্ত্র।
৩. রাষ্ট্রদ্রোহিতা।
৪. হত্যা।
৫. হত্যার চেষ্টা।
৬. অপহরণ।
৭. হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণ।
৮. আটক রাখার উদ্দেশ্যে অপহরণ।
৯. অপহৃত ব্যক্তিকে গুম ও আটক রাখা।
১০.ধর্ষণ।
১১. দস্যুবৃত্তি।
১২. দস্যুবৃত্তিকালে আঘাত।
১৩. ডাকাতি।
১৪. খুনসহ ডাকাতি।
১৫. হত্যা অথবা মারাত্মক আঘাতসহ দস্যুবৃত্তি অথবা ডাকাতি।
১৬.আগুন অথবা বিস্ফোরনের দ্রব্যের সাহায্যে ক্ষতিসাধন।
১৭. বাড়ি ধ্বংসের উদ্দেশ্যে আগুন।
এসব অপরাধী কোনভাবেই ক্ষমার যোগ্য নয়। সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার পরও ১১ হাজারেরও বেশি ব্যক্তি এসব অপরাধের দায়ে কারাগারে আটক ছিল এবং তাদের বিচার কার্যক্রম চলছিল। কিন্তু পরে ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর দালাল আইন বাতিল করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়।
উৎসঃ বাংলাদেশনিউজ২৪x৭.কম।
::আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, বাংলাদেশ/International Crimes Tribunal, Bangladesh: বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত একটি অপরাধ ট্রাইবুনাল যার উদ্দেশ্য হচ্ছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধসমূহের বিচার করা। এর আওতায় পড়ে যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ এবং শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ।বাংলাদেশে ২০০৮ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ নামক রাজনৈতিক দলটির অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক ইশতেহার ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করা। সে নির্বাচনে তারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে বিজয়ী হয়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আওয়ামী লীগের একজন সাংসদ ২০০৯ সালের ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রস্তাব পেশ করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। অবশেষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভের ৩৯ বছর পর যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের জন্য ২০১০ সালের ২৫শে মার্চ ট্রাইবুনাল, আইনজীবী প্যানেল এবং তদন্ত সংগঠন গঠন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেফতার এবং তাদের অপরাধের বিষয়ে তদন্তের উদ্যোগ নেয় ট্রাইব্যুনাল। নাগরিক সমাজের দাবি এবং তাদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পুরাতন হাইকোর্ট ভবনকে আদালত হিসেবে প্রস্তুত করা হয়। উৎসঃ BBC, ২০ শে নভেম্বর, ২০১১। প্রথম আলো, ৩০শে জানুয়ারি, ২০০৯।
::ট্রাইব্যুনাল – ১ : ২০১০ সালের ২৫শে মার্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইবুনাল) আইন ১৯৭৩-এর ৬ ধারার বলে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয় । সেই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয় বিচারপতি মো. নিজামুল হক এবং অন্য দুজন বিচারক ছিলেন বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ এ কে এম জহির আহমেদ । পরবর্তীতে ২০১২ সালের ২২ মার্চ ট্রাইব্যুনাল-২ গঠিত হওয়ার পর এটিএম ফজলে কবীর প্রথম ট্রাইব্যুনাল থেকে সরে গিয়ে দ্বিতীয়টির চেয়ারম্যানের পদ গ্রহণ করেন । তার স্থলাভিষিক্ত হন হাইকোর্টের বিচারপতি আনোয়ারুল হক । বিচারপতি আনোয়ারুল হক কে চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ শাহিনুর ইসলাম ও হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি মোঃ সোহরাওয়ার্দী কে সদস্য করে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে ট্রাইব্যুনাল-১ পূূর্নগঠন করা হয় ।
::ট্রাইব্যুনাল – ২: বিচার প্রক্রিয়া আরও গতিশীল করতে তিন সদস্যবিশিষ্ট নতুন আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয় ২০১২ সালের ২২ মার্চ । এর নাম হয় ICT-2 বা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। দ্বিতীয় এই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিযুুক্ত হন প্রথম ট্রাইব্যুনালের সদস্য বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীর । অন্য দুজন সদস্য হলেন হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও প্রথম ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার বিচারপতি মোহাম্মদ শাহিনুর ইসলাম । পরবর্তীতে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে ট্রাইব্যুনাল-১ পূূর্নগঠন করা হয় ও ট্রাইব্যুনাল-২ কে নিস্ক্রিয় করা হয়।
::বিচারালযঃ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত পুরাতন হাইকোর্ট ভবনকে আদালত হিসেবে প্রস্তুত করে একে ট্রাইব্যুনালের বিচারালয় হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
::অভিযুক্ত ব্যক্তিঃ
১। আবুল কালাম আযাদ – জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা। (রুকন সদস্য)
২। আব্দুল কাদের মোল্লা – জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা (সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল)
৩।দেলোয়ার হোসেন সাঈদী – জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা (নায়েবে আমীর)
৪। মুহাম্মদ কামারুজ্জামান – জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা (সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল)
৫। গোলাম আযম – জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা। (আমীর)
৬ । আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ – জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা (সেক্রেটারী জেনারেল) ও সাবেক মন্ত্রী।
৭। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী – বিএনপির শীর্ষ নেতা (স্হায়ী কমিটির সদস্য) ও সাবেক সাংসদ।
৮। আব্দুল আলীম – বিএনপির শীর্ষ নেতা ও সাবেক সাংসদ।
৯। আশরাফুজ্জামান খান – নিউ ইয়র্কে পলাতক।
১০। চৌধুরী মুঈনুদ্দীন – যুক্তরাজ্যে পলাতক। ১১।মতিউর রহমান নিজামী – জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা (আমীর), সাবেক সাংসদ ও মন্ত্রী।
১২। মীর কাসেম আলী – জামায়াতে ইসলামীর (নির্বাহী পরিষদের সদস্য) শীর্ষ নেতা ও অর্থ যোগানদাতা।
১৩। এম,এ,জাহিদ হোসেন খোকন – বিএনপির নেতা ও পৌর মেয়র।
১৪। মোঃ মোবারক হোসেন – আওয়ামী লীগর বহিষ্কৃত নেতা।
১৫। সৈয়দ মোঃ কায়সার – জাতীয় পার্টির নেতা ও মন্ত্রী।
১৬। এ. টি.এম আজহারুল ইসলাম – জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা (সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল)।
১৭। মুহাম্মদ আবদুস সুবহান – জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা (নায়েবে আমীর) ও সাবেক সাংসদ।
১৮। আবদুল জব্বার – জাতীয় পার্টির নেতা ও সাবেক সাংসদ।
১৯। মাহিদুর রহমান ।
২০। আফসার রহমান।
২১। সৈয়দ মোঃ হাসান আলী ।
২২। ফোরকান মল্লিক।
২৩ । শেখ সিরাজুল হক ওরফে সিরাজ মাস্টার।
২৪। খান মোঃ আকরাম হোসেন।
২৫।ওবায়দুল হক তাহের।
২৬। আতাউর রহমান ননি।
::মামলার রায় ও দন্ড কার্যকরঃ দুটি ট্রাইব্যুনাল ১ ডিসেম্বর, ২০১৫ পর্যন্ত মোট ২১ টি রায় প্রদান করে, যার মাঝে ৫ জনের মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে।তারা হলেনঃ
নাম

————–কার্যকরের তারিখ
কাদের মোল্লা———— ১২ ডিসেম্বর, ২০১৩
কামারুজ্জামান———– ১১ এপ্রিল, ২০১৫
সাকা চৌধুরি ————-২২ নভেম্বর, ২০১৫
আ আ মু মুজাহিদ—– ২২ নভেম্বর, ২০১৫
ম র নিজামী ————- ১০ মে, ২০১৬

 

::দেশের ভেতর প্রতিক্রিয়াঃ বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিটি) নিয়ে বাইরে বেশকিছু সমালোচনা হচ্ছে। কিন্তু দেশের ভিতরে যুদ্ধাপরাধের এই বিচার ব্যাপক জনসমর্থন পেয়েছে। এ আদালত যে রায় দিয়েছেন তাকে জাতীয় ছুটির মতো উদযাপন করা হয়েছে। দেশাত্মবোধক গান গাওয়া হয়েছে। রাজপথে তাৎক্ষণিক পার্টি হয়েছে। শিশুদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধী ওবায়দুল হক তাহের ও আতাউর রহমান ননির বিরুদ্ধে এই আদালত মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেছেন সম্প্রতি। বাংলাদেশীরা এর পক্ষে তাদের মত দিয়েছেন। এ দুজন ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৫ জন মানুষকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যা করেছিল। তারা লুট করেছিল ৪৫০টি বাড়ি। বাংলাদেশে তাদের বিচারের এমন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া আদর্শিক। ২০১৫ সালের এপ্রিলে যুদ্ধাপরাধী মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় কার্যকরের পর দুদিন পর্যন্ত ঢাকার রাজপথে ও অন্যান্য শহরে হাজার হাজার মানুষ নেমে আসেন। গত নভেম্বরে যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকরের পর একই রকম সমর্থন প্রকাশ পায়। জনগণের এই সমর্থন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে তার কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে ও অন্য অপরাধীদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণাকে সাহস যুগিয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল তারা। ওই সময় ৩০ লাখ বাংলাদেশীকে হত্যা করা হয়েছে। গত বছর ঢাকা ট্রিবিউন দেশজুড়ে একটি জরিপ পরিচালনা করে। তাতে দেখা যায় জরিপে অংশগ্রহণকারীদের শতকরা ৭৯ ভাগ চান বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার অব্যাহত থাকুক। ক্ষমতাসীন দলের বিরোধী পক্ষের সবচেয়ে শক্ত ঘাঁটি হলো খুলনা বিভাগ। সেখানে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের শতকরা ৬৪ ভাগ এ বিচারের পক্ষে রায় দিয়েছেন। বাস্তবে, যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়া পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতিতে ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বড় জয় পান। ওই নির্বাচনে তিনি তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে শতকরা ১৬ পয়েন্টের বেশি অর্জন করেন।
উৎসঃ দৈনিক মানবজমিন। ৯ মার্চ, ২০১৬। কলাম লেখক, সজীব ওয়াজেদ জয়।
::বাংলাদেশের ভিতরে ও বাইরের লোকদের মধ্যে বিচারের বিরোধীতার কারণঃ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে কিভাবে দেশটি টিকে আছে এবং গণহত্যা করা হয়েছে তা কখনো বাইরের মানুষ পূর্ণাঙ্গরূপে বুঝতে পারেনি। তারা বুঝতে পারেনি যে, নির্যাতন করে বা হত্যা করে মারা হয়েছে এমন একজন মানুষের ছেলে বা মেয়ে হয়ে বেঁচে থাকা ও ষড়যন্ত্রকারীরা দশকের পর দশক বিচার থেকে পালিয়ে বেড়াবে তা দেখা কতটা কষ্টের, তা তারা বুঝতে পারে না। বিচারের গভীর আকাঙ্ক্ষা রয়েছে বাংলাদেশীদের। যুদ্ধে সাধারণ অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ধর্ষণ ও নির্যাতনকে। যখন যুদ্ধে পরাজয় হচ্ছে এটা পরিষ্কার হলো পাকিস্তানের কাছে, তখন তারা ডাক্তার, আর্টিস্ট, শিক্ষক ও লেখকসহ বাংলাদেশের অনেক বোদ্ধাকে হত্যার ভয়াবহ ও সিস্টেমেটিক কর্মকাণ্ড শুরু করে। কিন্তু ভয়াবহ নৃশংসতা সংঘটনকারী এসব ষড়যন্ত্রকারী ৪০ বছরেরও বেশি সময় বিচারের হাত থেকে পালিয়ে ছিল। ধারাবাহিক অভ্যুত্থান, হত্যাকাণ্ড ও সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সবচেয়ে জঘন্য যুদ্ধাপরাধীদের বাংলাদেশ সরকারের নেতৃস্থানীয় পদে যোগ দেয়ার পথকে উন্মুক্ত করে দেয়। নির্বাচনের অল্প পরেই শেখ হাসিনা সেই পথ বন্ধ করে দেন। ১৯৭০-এর দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পিতা শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তা পুনর্গঠন করেন তিনি। শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালে তার রাজনৈতিক শত্রুরা হত্যা করার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ওই উদ্যোগ ভেস্তে গিয়েছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের উত্তম মানদণ্ড হলো রোম স্ট্যাটিউট। সে অনুযায়ী শেখ হাসিনা গঠন করেছেন দু’টি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। এখানে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয় তা উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ। যে কেউ বিচার প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। উপরন্তু বাংলাদেশ আইসিটি হলো বিশ্বে একমাত্র যুদ্ধ অপরাধ আদালত যেখানে বিবাদীরা তাদের বিরুদ্ধে দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারেন উচ্চ আদালতে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশে তারা আপিল করতে পারেন সুপ্রিম কোর্টে। এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট একটি আপিলে আইসিটির দেয়া মৃত্যুদণ্ডকে পরিবর্তন করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। সংক্ষেপে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত সুষ্ঠু ও ন্যায়সঙ্গত। এ কথা জানেন বাংলাদেশীরা। বিদেশীরা আইসিটি নিয়ে সমালোচনা করেন। কারণ, তারা বলেন, অসামঞ্জস্যপূর্ণ সংখ্যক বিবাদী বিরোধী দলের। বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর। এই আপত্তির দুটি সমস্যা আছে। এক. এই আদালতে অন্য দলের সদস্যদেরও বিচার করা হচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের সাবেক একজন সদস্য। দুই. যদি অপরাধে জড়িত এসব জামায়াত সদস্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে কি শুধু বিরোধীদলীয় সদস্য এই অজুহাতে তাদেরকে বিচার থেকে বাদ রাখা উচিত? ১৯৭১ সালের যুদ্ধের শিকার ও গণহত্যার যারা শিকার তাদের বিচার পাওয়ার পথ কি বিলম্বিত বা পরিত্যক্ত রাখা উচিত? তাদের পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘদিন এই ক্ষত বহন করে নিয়ে বেড়াচ্ছেন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে জামায়াত স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল এবং তা রহিত করতে পাকিস্তানি জান্তাদের সহযোগিতা করেছিল। তাই জামায়াত নেতাদের বিচার হওয়া একটি স্বাভাবিক বিষয়। যখন বাংলাদেশের মানুষ এসব জানতে পারেন তখন তারা এ এটি স্বীকার করেন। তারা জানেন যে, এই যুদ্ধাপরাধীরা কি করেছে। বাংলাদেশের মানুষ নিবিড়ভাবে দেখেছেন ট্রাইব্যুনাল কত স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে কাজ করছে। বাংলাদেশের মানুষ এই ন্যায়বিচারের পক্ষে। এজন্যই এ বিচার বাংলাদেশে এত জনপ্রিয়। তাই এ বিচার অব্যাহত থাকা উচিত।
উৎসঃ দৈনিক মানবজমিন। ৯ মার্চ, ২০১৬। কলাম লেখক, সজীব ওয়াজেদ জয়।
::বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়াঃ ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে পাকিস্তান ও তুরস্ক অবস্থান নিলেও এই বিচারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে প্রভাবশালী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত। সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধের বিচারের পক্ষে বরাবরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত একই অবস্থান নিয়েছে। এদিকে ঢাকা থেকে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রক্রিয়া শুরুর পর থেকেই এই বিচারের পক্ষে বিশ্বের প্রভাবশালী প্রায় প্রতিটি দেশেরই সমর্থন রয়েছে। বিশেষ করে প্রভাবশালী দেশ হিসেবে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ বিচারের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলে আসছে, এই বিচারের প্রতি তাদের সমর্থন রয়েছে। তবে এই বিচার নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হওয়াটাকে প্রত্যাশা করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিশা দেশাই ঢাকা সফর করেন। আর নিজামীর ফাঁসির পরদিনই ঢাকা সফরে আসেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ড. এস জয়শঙ্কর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের এই শীর্ষ পর্যায়ের দুই কূটনীতিক ঢাকা সফরের সময় নিজামীর ফাঁসির এটিও পর্যবেক্ষণ করেছেন। নিজামীর ফাঁসি নিয়ে এই দুই কূটনীতিকের সঙ্গে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনাও হয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে তাদের সমর্থনও ব্যক্ত করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের দুই কূটনীতিকের ঢাকা সফরের সময় সন্ত্রাস ও জঙ্গী প্রতিরোধের এটিই ছিল মুখ্য। দুই দেশই জঙ্গীবাদ প্রতিরোধে বাংলাদেশের পাশে থাকবে। দুই দেশই এ বিষয়ে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে বলে জানিয়েছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত যুদ্ধাপরাধের বিচারেও সমর্থন দিয়ে আসছে। সে কারণে তুরস্ক ও পাকিস্তান যুদ্ধাপরাধ বিচার নিয়ে সরকারকে চাপে ফেলতে চাইলেও সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না। তুরস্ক ও পাকিস্তান যখন একই সুরে বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ বিচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তখন প্রকাশ্যেই যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়ে সমর্থন প্রকাশ করেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ বলেছেন, ‘যুদ্ধাপরাধের বিচার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। এতে ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের ঝুলে থাকা বিচার প্রক্রিয়ায় ভারতেরও সমর্থন আছে।’ নিজামীর ফাঁসির পর যখন যুদ্ধাপরাধ বিচার নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা চলছে, ঠিক তখনই ভারত এ বিষয়ে প্রকাশ্যে তাদের অবস্থান প্রকাশ করলো। ঢাকা থেকে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকার তুরস্ক দূতাবাসের ওয়েবসাইটে এখনও ডেভরিম ওসতুর্ককে রাষ্ট্রদূত হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। ঢাকার তুরস্ক দূতাবাসের ওয়েবসাইটে ডেভরিম ওসতুর্ককে ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, তুরস্ক রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করলে প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিত। ওয়েবসাইট থেকে তার নামও সরিয়ে নিত। তবে সেটা করেনি। তাছাড়া তুরস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে বাংলাদেশকে এখনও কিছু জানায়নি। যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে বর্তমান অবস্থা আরও ভালভাবে বোঝার জন্য ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছে আঙ্কারা। তিনি বাংলাদেশের পরিস্থিতি সেখানে আলোচনা করবেন। তাকে ডেকে পাঠালেও প্রত্যাহারের এটি এখনও স্পষ্ট নয়। কেননা কোনও দেশের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহার করে নিলে সে দেশকে জানিয়েই প্রত্যাহার করা হয়। তবে রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারের বিষয়ে তুরস্ক এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারকে জানায়নি। এদিকে নিজামীর ফাঁসি নিয়ে তুরস্ক সরকারের দেয়া বিবৃতি ঢাকার তুরস্ক দূতবাসের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে নিজামীর ফাঁসির খবরে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে উল্লেখ করা হয়, তার এ ধরনের শাস্তি প্রাপ্য ছিল বলে তুরস্ক মনে করে না। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে দন্ডিতদের ফাঁসি কার্যকর ঠেকাতে গত তিন বছরে বার বার বাংলাদেশের প্রতি আহ্বান জানানোর এটি তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, তুরস্ক মনে করে, এ ধরনের পদ্ধতিতে অতীতের ক্ষত নিরাময় সম্ভব নয়, বরং তা আমাদের বাংলাদেশী ভাইদের মধ্যে ঘৃণা ও শত্রুতা আরও বাড়িয়ে দেবে। যুদ্ধাপরাধ বিচারের শুরু থেকেই পাকিস্তান ও তুরস্ক এই বিচারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। বিশেষ করে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে তুরস্কের ক্ষমতাসীন জাস্টিস ও ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একে) গভীর সম্পর্কের কারণেই দেশটি এই অবস্থান নেয়। তবে তুরস্ক সরকারের এই অবস্থানের সঙ্গে দেশটির সাধারণ জনগণের কোন সম্পর্ক নেই। তুরস্কের সাধারণ জনগণ বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষেই রয়েছেন। তুরস্কের সংবিধান ধর্মনিরেপক্ষ হলেও ক্ষমতাসীন একে পার্টি তা লঙ্ঘন করেছে। এই পার্টিকে নিষিদ্ধ করার জন্য আদালতে ইতোমধ্যে মামলাও হয়েছে। একে পার্টি তুরস্কে প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত। আর এই রাজনৈতিক দলটির সঙ্গে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর গভীর সম্পর্ক রয়েছে। এর আগে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ বিচার শুরু হলে তুরস্ক থেকে একটি আইনজীবী প্রতিনিধি দলও ঢাকায় এসেছিল। তবে অন এ্যারাইভাল ভিসা নীতি লঙ্ঘন করায় তাদের ঢাকা থেকে তুরস্কে ফেরত পাঠানো হয়। যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতা গোলাম আযমের বিচার প্রক্রিয়া শুরু হলে এই বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে তুরস্ক আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়েছিল। তাছাড়া ২০১১ সালে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এক বৈঠকেও যুদ্ধাপরাধ বিচার বন্ধ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছিল দেশটি। তবে বাংলাদেশ তার অবস্থান থেকে সরে আসবে না বলেও তুরস্ককে জানানো হয়েছিল।
উৎসঃ দৈনিক জনকন্ঠ। ১৩ মে, ২০১৬।

আরো পড়ুন:

মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা

মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যসমুহ

বাংলাদেশের ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধ

Leave a Reply

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline