MANGO DIPLOMACY (আম্র কূটনীতি )
1997 সালের আগস্ট মাসে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ভারতের পঞ্চাশতম স্বাধীনতা বার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের রাষ্ট্রপতি কে আর নারায়ণ, উপরাষ্ট্রপতি কৃষাণ কান্ত এবং প্রধানমন্ত্রী ইন্দ্রকুমার গুজরালসহ বিভিন্ন ভারতীয় নেতার কাছে পাকিস্থানি আমের উপহার পাঠান । এটাকেই কূটনৈতিক মহলে mango Diplomacy বা আম্র কূটনীতি বলে অভিহিত করা হয় ।
______________
Gunboat Diplomacy
যখন অপেক্ষাকৃত কোন দুর্বল রাষ্ট্র শক্তিশালী রাষ্ট্রের কথা শোনে না কিংবা শক্তিশালী রাষ্ট্রের স্বার্থ উদ্ধারে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তখন শক্তিশালী রাষ্ট্রটি শক্তি প্রয়োগের ভয় দেখিয়ে বৈরী দেশ বা শক্তিকে হটে যেতে বা দমে যেতে বাধ্য করার কৌশলকেই বলে Gunboat Diplomacy.
________________
Ping Pong Diplomacy
1943 থেকে 1949 পর্যন্ত চীনের প্রেসিডেন্ট ছিলেন চিয়াং কাইশেক । তখন চীনে পুঁজিবাদতন্ত্র চালু ছিল । এসময় চীনে পুঁজিবাদতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্রের মধ্যে যুদ্ধ চলছিল। যুদ্ধে চিয়াং কাইশেক পরাজিত হয় এবং মাও সে তুং(Mao-Tse-Tung) এর নেতৃত্বে 1oct,1949 সালে চীনে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়।চিয়াং কাইশেক তখন চীন থেক পালিয়ে ফরমোজা নামক জায়গায় চলে যান এবং পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের সহায়তায় (বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের )ফরমোজার অধিবাসীদের সংঘটিত করে এবং সেখানকার অধিবাসীরা তাকে প্রেসিডেন্ট বানান তখন চিয়াং কাইশেক ফরমোজার নাম পরিবর্তন করে রাখেন তাইওয়ান । 1950 সালে পাশ্চাত্য বিশ্ব ঘোষণা করে চীন তাইওয়ানের অংশ তাই এখন থেকে জাতিসংঘে প্রতিনিধিত্ব করবেন তাইওয়ান সরকার প্রধান। আর তখনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন হয় চীনের। এ অবস্থা চলতে থাকে 1971 সাল পর্যন্ত। 1971 সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেবিল টেনিস দল খেলতে আসে জাপানে।চীন তখন আমেরিকার ঐ টেবিল টেনিস দলকে চীনের টেবিল টেনিস দলের সাথে খেলার জন্য চীনে আমন্ত্রণ জানান এবং আমেরিকার ঐ টেবিল টেনিস দলটি খেলতে আসে চীনে।দীর্ঘ বিরতির পর আমেরিকার সাথে চীনের সম্পর্ক আবার শুরু হলো টেবিল টেনিস খেলার মধ্য দিয়ে, আর টেবিল টেনিস যে বল দিয়ে খেলা হয় ঐ বলের নাম Ping Pong. এ জন্যই কূটনৈতিক অঙ্গনে এটি Ping Pong Diplomacy নামে পরিচিত ।
_________
ডি ডে
—————
১৯৪৪ সালের ৬ই জুন, নাৎসী বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে প্রায় ১ লক্ষ ৫৬ হাজার যৌথ বাহিনীর সদস্য ফ্রান্সে অবতরণ করেন। দিনশেষে প্রায় সাড়ে চার হাজার সৈন্য মারা যান, যেটি বিশ্বের সেনা ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সামরিক অভিযান।
ফ্রান্সের নরম্যান্ডির উপকূলে ডি-ডে নামে খ্যাত ওই অভিযানের মধ্যে দিয়ে নাৎসী জার্মানির বিরুদ্ধে মিত্রবাহিনীর বিজয়ের সূচনা হয়
—–
ভি জে ডে
২সেপ্টেম্বর ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় জাপানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের জয়লাভ ।
_____________
Glasnost (খোলামেলা আলোচনা /খোলানীতি)
সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট মিখাইল গর্বাচেভ এই নীতির প্রবর্তক ।1917 সালে রুশ বিপ্লবের পর সোভিয়েত ইউনিয়নে communist একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয় তখন থেকেই communist ব্যবস্থার বা পার্টি ও রাষ্ট্রের ক্ষমতাসীন নেতাদের কাজের বিরোধিতা বা সমালোচনা করার কোনো অধিকার থাকে না ।কিন্তু গর্বাচেভ ক্ষমতায় এসে অভ্যন্তরীণ ও পররাষ্ট্রীয় উভয় ক্ষেত্রেই নাটকীয় ভূমিকা গ্রহণ করেন। তিনি 1987 সালে ঘোষণা করেন যে, সোভিয়েত জনগন এখন থেকে নির্ভয়ে খোলাখুলিভাবে তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারবেন , পারবেন পার্টি ও নেতাদের কর্মকান্ডেরও সমালোচনা করতে । গর্বাচেভ নিজেই তার এই নীতিকে Glasnost বলে অভিহিত করেন এবং এই নীতি অনুসরণ করার জন্য পূর্ব ইউরোপীয় সমাজতান্ত্রিক দেশসমূহের প্রতিও আহবান জানান । অনেকটা এই Glasnost নীতির জন্যই সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায় এবং সমাজতন্ত্রের অবসান ঘটে ।
_______
Perestroika/পেরেস্ত্রইকা(অর্থনৈতিক সংস্কার)
1917 সালের 7 নভেম্বর লেনিনের নেতৃত্বে সংঘটিত হয় বিশ্বের অন্যতম আলোচিত রুশ বিপ্লব, যার স্থায়িত্ব ছিল দশ দিন। রুশ বিপ্লবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন লেনিনের বলশেভিক দল এ জন্য রুশ বিপ্লবের আর এক নাম বলশেভিক বিপ্লব।তাছাড়া তৎকালীন সময়ে ইংরেজী ক্যালেন্ডারের পাশাপাশি রাশিয়াতে প্রচলিত ছিল রুশ ক্যালেন্ডার ,1917 সালের 7 নভেম্বর রুশ ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ছিল 25 অক্টোবর এ জন্য রুশ বিপ্লবের আরেক নাম অক্টোবর বিপ্লব। 1922 সালে রাশিয়ার নামকরণ হয় USSR বা Union of Socialist Soviet Republic বা সোভিয়েত ইউনিয়ন । সোভিয়েত ইউনিয়নের সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট ছিলেন মিখাইল গর্বাচেভ । মিখাইল গর্বাচেভ কতৃক 1987 সালে ঘোষিত অর্থনৈতিক সংস্কার নীতিই perestroika নামে পরিচিত । তিনি সমাজতান্ত্রিক ঘরনা থেকে বেরিয়ে এসে তার গ্লাসনস্ত নীতির সংগে সঙ্গতি রেখে সোভিয়েত ইউনিয়নের উদারনৈতিক অর্থনীতি প্রবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন । যার ফলে 1987 সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও পূর্ব ইউরোপীয় কমিউনিস্ট দেশ সমূহে নয়া অর্থনৈতিক হাওয়া বইতে শুরু করে। এরই সূত্র ধরে মার্কসবাদ আনুষ্ঠানিক ভাবে বর্জিত হয়, স্ট্যালিন কঠোরভাবে সমালোচিত হন, খোদ লেনিনের রচনাবলী পুড়িয়ে দেয়া হয়, বহুদলীয় গনতন্ত্র প্রবর্তন করা হয়, ধর্ম, ব্যক্তিমালিকানা ইত্যাদির পুন:প্রচলন শুরু করা হয় এবং পুঁজিবাদী সংস্কৃতি কে আহবান জানানো হয় । এরই ফলশ্রুতিতে সমাজতান্ত্রিক পূর্ব জার্মানি স্বীয় অস্তিত্ব বিলুপ্ত করে পশ্চিম জার্মানির সাথে একীভূত হয়ে যায় 3 অক্টোবর, 1990 সালে এবং 1991 সালে Union of Socialist Soviet Republic নাম পরিবর্তন করে রাশিয়ার নাম রাখা হয় Union of Sovereign Soviet Republic. কিন্তু এটাও ছিল ক্ষণস্থায়ী। অচিরেই অর্থাৎ 21 ডিসেম্বর , 1991 সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যায় এবং জন্ম নেয় পনের টি রাষ্ট্র।আর তখন থেকেই বিশ্বে পুজিবাদ তাদের স্থান পাকাপোক্ত করে ফেলেন যে পুজিবাদ আজ নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে গোটা বিশ্বকে।
________
স্নায়ুযুদ্ধ/ঠান্ডা লড়াই (Cold War)
সরাসরি অস্ত্র প্রয়োগের বদলে দুই প্রতিপক্ষ যখন পরস্পরকে অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক, প্রচার, গোয়েন্দা তৎপরতা ও সামরিক হুমকি সহ বিভিন্নভাবে পরোক্ষ কায়দায় ঘায়েল বা মানসিকভাবে দুর্বল করার চেষ্টা করে, তখন এরূপ তৎপরতাকে বলে ঠান্ডা লড়াই বা স্নায়ুযুদ্ধ(Cold War ) কেননা এরূপ তৎপরতা প্রতিপক্ষের স্নায়ুর উপর দারুণ চাপ সৃষ্টি করে ।
_________
পঞ্চশীলা নীতি :
পঞ্চশীলা কথাটি এসেছে গৌতম বুদ্ধের পঞ্চ আচরণবিধি থেকে, যেটি সংঘভুক্ত বৌদ্ধ ভিক্ষুদের অবশ্য পালনীয় ছিল।কিন্তু এখন এটি ব্যবহৃত হয় একটি রাজনৈতিক অর্থে। 1955 সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু, চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই এবং ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট ড. আহমেদ সুকর্নর নেতৃত্বে ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং -এ এশিয়া ও আফ্রিকা মহাদেশের 29 টি দেশের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । এই সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রসমূহ যে পাঁচটি নীতি মেনে চলার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়, তাই পঞ্চশীলা নীতি নামে প্রসিদ্ধ । নীতি গুলো হলো
1. পরস্পরের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা।
2. পারস্পরিক অনাগ্রসন।
3. পরস্পরের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করা।
4. সমতা ও পারস্পরিক কল্যাণ ।
5. শান্তিপূর্ণ সহবস্থান।
_______
সিমলা চুক্তি(Simla Agreement)
1971 সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে পাকিস্তান বারবার অপমানিত করে এই বলে যে 1971 সালের যুদ্ধ ছিল ভারত ও পাকিস্তানের যুদ্ধ। সে হিসেবে 1971 সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সমাপ্তির পর 1972 সালের 3 জুলাই ভারতের হিমাচল প্রদেশের রাজধানী সিমলা তে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় । চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী অন্যদিকে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলী ভুট্টো । চুক্তির মূল বিষয়বস্তু ছিল:
1) পরস্পর পরস্পরের জাতীয় সংহতি, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে মর্যাদা দিবে।
2) জাতিসংঘের সনদ অনুযায়ী পারস্পরিক আঞ্চলিক অখণ্ডতা বা রাজনৈতিক স্বাধীনতার বিরুদ্ধে হুমকি প্রদর্শন বা বল প্রয়োগ করবে না ।
3) প্রত্যেক দেশই তাদের স্ব স্ব সৈন্যদের স্ব স্ব দেশের আন্তর্জাতিক সীমানার মধ্যে সরিয়ে নিবে এবং 1971 এর 17 ডিসেম্বর যুদ্ধ বিরতির ফলে জম্মু কাশ্মীরে সৃষ্ট রেখা মেনে নিবে।
4) পারস্পরিক বিরোধ সমূহের শান্তিপূর্ণ সমাধান করা হবে দ্বিপক্ষীয় আলাপ আলোচনার মাধ্যমে ।
5) দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে তোলার জন্য ধাপে ধাপে ডাক, তার, স্থল ও আকাশপথে উভয় দেশের মধ্যে পূনরায় যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে।
6) প্রত্যেকেই প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বৈরী প্রচার বন্ধ করবে।
7) দুই দেশের মধ্যে বানিজ্যিক ও অন্যান্য সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে । বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিনিময় কে উৎসাহ দেয়া হবে।
8) দুটি রাষ্ট্রের সমস্যাদি আলোচনার জন্য মাঝে মাঝে দুই দেশের প্রতিনিধিগন বৈঠকে মিলিত হবেন ।
9) এই চুক্তি কোন দেশই একতরফাভাবে পরিবর্তন করতে পারবে না ।
___________
African National Congress(ANC)
অনেকেই মনে করেন African National Congress (ANC) প্রতিষ্ঠা করেন নেলসন ম্যান্ডেলা ।তাদের ধারণা ভুল । john dube নামে এক ব্যক্তি 1912 সালে গড়ে তোলেন South African Native National Congress(SANNC). SANNC থেকে 1923 সালে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ANC বা African National Congress. John Dube 1912 থেকে 1917 পর্যন্ত ANC র প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন । আর নেলসন ম্যান্ডেলা জন্মগ্রহণ করেন 18 july 1918 সালে। এবার আপনিই বলেন কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল ।
____________
Earth Summit(ধরিত্রী সম্মেলন)
জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলন বা United Nations Conference on Environment and Development (UNCED)যা বিশ্বব্যাপী ধরিত্রী সম্মেলন নামে পরিচিত।1989 সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের 44 তম অধিবেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী 1992 সালের 3-14 জুন ব্রাজিলের রিওডিজেনেরিও শহরে জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন এর প্রথম সম্মেলন হয়।জাতিসংঘের ইতিহাসে ধরিত্রী সম্মেলন ছিল অংশগ্রহণের দিক থেকে সবচেয়ে ব্যাপক ভিত্তিক সম্মেলন।উক্ত সম্মেলনে 172 টি দেশ অংশগ্রহণ করেন ।যার মধ্যে রাষ্ট্র/ সরকার প্রধান ছিলেন 116 জন, যেটি উল্লেখ করার মতো ।ধরিত্রী সম্মেলন প্রচলিত উন্নয়নের ধারনার বিপরীতে টেকসই উন্নয়নের(Sustainable development ) ধারনাকে প্রতিষ্ঠিত করে। সম্মেলনে পরিবেশ ও উন্নয়ন বিষয়ক রিও ঘোষণা, agenda -21 এবং বন নীতিমালা সংক্রান্ত বিবৃতি গৃহীত হয় । এ ছাড়া সম্মেলন কে সামনে রেখে জীববৈচিত্র সংক্রান্ত কনভেনশন ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত দুটো কনভেনশন ও চুড়ান্ত করা হয় এবং সম্মেলনে সেগুলো বিভিন্ন দেশের স্বাক্ষরের জন্য উপস্থাপন করা হয় । এই পাচটি দলিল ধরিত্রী সম্মেলনের সাথে সম্পর্কিত । উক্ত সম্মেলনে অবশ্য দারিদ্র্য বা অসমতা দূরীকরনের লক্ষ্যে কোন চুক্তি হয়নি যার প্রয়োজন ছিল বলে অনেকেই মনে করেন ।জীব বৈচিত্র্য চুক্তি সম্পর্কে কেউ কেউ বলেন এ চুক্তির তাৎপর্য হলো ধনীদেশ কর্তৃক দরিদ্র দেশগুলোর জীব বৈচিত্র্য নিয়ন্ত্রণ এবং এর মাধ্যমে তারা চেয়েছে প্যাটেন্ট পদ্ধতির প্রবর্তন যার অর্থ হল আন্তর্জাতিক জিন ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া যেটি 1972 সালের স্টকহোম পরিবেশ সম্মেলনের ফলশ্রুতিতে প্রতিষ্ঠা করা হয় ।
__________
Non – state – actors ( অ-রাষ্ট্রীয় কর্মক )
বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতি এবং রাজনীতিতে ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে non state actors এর তৎপরতা এটি এমন একটি স্বত্বা বা গোষ্ঠী যারা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বা রাষ্ট্রসমূহের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করতে পারে । এ ধরনের কর্মক হতে পারে কোন আন্তর্জাতিক সংগঠন, এন জি ও, কোন বহুজাতিক কোম্পানি, দেশকে বিদেশী শাসন থেকে মুক্ত করার জন্য নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনী অথবা কোন সন্ত্রাসী গ্রুপ । সিয়াটলে WTO এর মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন বানচাল হওয়ার পিছনে প্রতিবাদী মানুষের আন্দোলন ছিল অ-রাষ্টীয় কর্মক এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ । কোন কোন ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তিও অ-রাষ্টীয় কর্মক হিসেবে বিশ্ব রাজনীতিকে প্রভাবিত করতে পারেন । যেমন বিল গেটস, ওসামা বিন লাদেন, জুলিয়ান এসাঞ্জ, ড. মুহম্মদ ইউনুস পোপ ফ্রান্সিস প্রভৃতি। পোল্যান্ডের লেচ ওয়েলেসার সলিডারিটি মুভমেন্ট কে নির্ধিদ্বায় অ-রাষ্ট্রীয় কর্মকের দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরা যায় যেটি পূর্ব ইউরোপে সমাজতন্ত্রের পতনের সূচনা করে ।
_________
Micro State(ক্ষুদ্র রাষ্ট্র)
আয়তনে বিশ্বের বড় রাষ্ট্র রাশিয়া এবং জনসংখ্যায় বিশ্বের বড় রাষ্ট্র চীন। Micro State বলা হয় মূলত জনসংখ্যার ভিত্তিতে। যে রাষ্ট্রের জনসংখ্যা দশ লক্ষের নিচে তাকে Micro State বলা হয়।যেমন : মালদ্বীপ, মোনাকো।
________
Buffer State(সংঘর্ষ নিবারক রাষ্ট্র)
দুটি শক্তিশালী বিবাদমান/সাংঘর্ষিক রাষ্ট্রের মধ্যবর্তী ক্ষুদ্র নিরপেক্ষ রাষ্ট্র যে রাষ্ট্রটি নিরপেক্ষ থাকা সত্ত্বেও উক্ত দুই সাংঘর্ষিক রাষ্ট্রের যুদ্ধের কারনে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এমন রাষ্ট্রকে বলা হয় Buffer state. যেমন : বেলজিয়াম । কারন বেলজিয়াম ভৌগোলিকভাবে ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যে অবস্থিত। যতবার ফ্রান্স এবং জার্মানির মধ্যে যুদ্ধ হয়েছে ততবারই বেলজিয়াম নিরপেক্ষ থাকার পরও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
________
Secular state (ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র )
1846 সালে ইংল্যান্ডের G. J. Holyoake সর্বপ্রথম secularism মতবাদটি প্রচার করেন। তবে এই মতবাদের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রবক্তা ছিলেন Charles Bradlaugh. এই মতবাদ প্রচারের জন্য ইংল্যান্ডে একটি National Secular Society রয়েছে, Secularism এর শাব্দিক অর্থ হলো ‘ইহজগৎ সম্বন্ধীয়’ বা ধর্ম সম্বন্ধীয় প্রশ্ন বহির্ভূত।সাধারণভাবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র দ্বারা বুঝায় এমন একটি রাষ্ট্র বা সমাজব্যবস্থা,যে রাষ্ট্র বা সমাজ কোন ধর্ম বিশেষের বা একটিই মাত্র ধর্মের ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় না ।এই মতবাদীরা মনে করেন যে মানবজীবনের পক্ষে যেটি কিছুই মঙ্গলজনক তাহাই সৎনীতি এবং সৎনীতি ঈশ্বর ও ধর্মনিরপেক্ষ। তাই বলা যেতে পারে যে সকল রাষ্ট্র সকল ধর্ম পালনের ব্যাপারে সমানভাবে রাষ্ট্রীয় সুবিধা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম সে রাষ্ট্রই ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। বাংলাদেশের সংবিধানে সকল ধর্মের মর্যাদা দিয়েছে যেটি আমরা সংবিধান বিশ্লেষণ করলেই বুঝতে পারি, যেমন
article 2(a)তে বলা হয়েছে “” the state religion of the Republic is islam, but other religions may be practiced in peace and harmony in the Republic””
article 12 তে বলা হয়েছে “”secularism and freedom of religion “”
article 41 এ বলা হয়েছে freedom of religion (every citizen has the right to profess , practice or propagate any religion) তাই বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র।
________
মহীসোপান (Continental Shelf)
সমূদ্রতীরবর্তী একটি দেশের ভূমির কিছুটা অংশ থাকে সমূদ্রের পানির মধ্যে। এখানে সমূদ্রের গভীরতা সাধারণত থাকে 180 মিটারের কাছাকাছি। সমূদ্রের পানির মধ্যে ডুবে থাকা একটি দেশের এই অংশকে বলে মহীসোপান বা Continental Shelf. মহীসোপান ঢালুভাবে নেমে যায় সমূদ্রের মধ্যে। এই ঢালু অংশকে বলা হয় মহীঢাল বা Continental Slope.
মহীসোপান সৃষ্টি হতে পারে দুই ভাবে।
এক, মহীসোপান সৃষ্টি হতে পারে সমূদ্রের ঢেউয়ের ধাক্কায়। বিশেষ করে ঝড়ের সময় সমূদ্রের ঢেউ ভাঙ্গার যে অংশ এসে আছড়ে পড়ে সেই অংশে। কারন, সমূদ্রের ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙ্গার এই অংশ ক্ষয় হয়। এখানে এসে জমতে পারে সমূদ্রের পানি অগভীরভাবে।
দুই, মহীসোপান সৃষ্টি হতে পারে নদীবাহিত পলিমাটি সমূদ্রে এসে জমার ফলে। পলিমাটি দিয়ে ভরাট হচ্ছে সমূদ্র। ফলে বাড়ছে বাংলাদেশের ভূমির পরিমান।বাংলাদেশ সমূদ্রের যে অংশ পেল, নদীবাহিত পলিমাটি জমে সমূদ্র ভরাট হয়ে একদিন সেখানে জেগে উঠবে মানুষের বসবাসযোগ্য ভূমি। আর সেটা হবে বাংলাদেশেরই অংশ।আপাতত সমূদ্রের যে এলাকা আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালের রায়ে বাংলাদেশ পেতে পারলো সেখানে বাংলাদেশের জেলেরা যেয়ে অবাধে মাছ ধরতে পারবে, যেটি অনেক পরিমাণে পূরণ করবে বাংলাদেশের মৎস্য চাহিদা। সমূদ্রের পানির নিচে এখন যে অংশ আছে সেখানে পাওয়া যেতে পারে প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেল, যেটি উঠাতে পারলে বাংলাদেশের অর্থনীতি হতে পারবে যথেষ্ট সমৃদ্ধ। তাই মহীসোপান বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন ।
_________
Yellow Journalism(হলুদ সাংবাদিকতা)
একটি দেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলকে বলে first state. প্রধান বিরোধীদলকে বলে second state. সুশীল সমাজ কে বলে third state এবং গনমাধ্যমকে বলে fourth state. তাই রাষ্ট্র এগিয়ে যাবে কী পিছিয়ে পড়বে তার অনেক কিছুই নির্ভর করবে উপরিউক্ত চারটি কর্মকের যথাযথ ভূমিকার উপর। খুবই স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশ্ববাসীর নজর কাড়তে সবচেয়ে বেশি পারদর্শী গন মাধ্যম ।আর এই গনমাধ্যমের অন্যতম অংশ সাংবাদিকতা। তবে ইদানিং এক ধরনের সাংবাদিকতা উঠে এসেছে আলোচনার মধ্যমনিতে। আর তা হলো হলুদ সাংবাদিকতা । হলুদ সাংবাদিকতা বলতে বুঝায় উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ভিত্তিহীন রোমাঞ্চকর সংবাদ পরিবেশন। আসলে হলুদ সাংবাদিকতার সঙ্গে হলুদ রঙের একটা সম্পর্ক আছে এবং এই সম্পর্কটা ঐতিহাসিক। যৌনতা, সহিংসতা, অপরাধ ইত্যাদি বিষয়কে চাঞ্চল্যকরভাবে সংবাদ পরিবেশন করে পাঠকের পঠন মানসকে উস্কে দেয়াই আজ হলুদ সাংবাদিকতা হয়ে থাকলেও আদিতে হলুদ রঙটি এসেছিল অন্যভাবে।
হলুদ সাংবাদিকতার জন্ম হয়েছিল সাংবাদিকতা জগতের দুই বিখ্যাত পুরোধা আমেরিকার সাংবাদিক পুলিৎজার এবং রুডলফ হার্স্টের মধ্যে পেশাগত প্রতিযোগিতার ফল হিসেবে। এই দুই ব্যক্তি স্ব স্ব পত্রিকার ব্যবসায়িক স্বার্থে একে অপরের অপেক্ষাকৃত যোগ্য সাংবাদিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত কর্মচারিদেরকে অধিক টাকার বিনিময়ে নিজের প্রতিষ্ঠানে নিয়ে আসার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছিলেন । এক পর্যায়ে স্ক্যান্ডাল কাহিনীর চাঞ্চল্যকর খবর ছেপে তারা পাঠকদেরকেও ভাগিয়ে আনার চেষ্টা করেন। পুলিৎজারের New York World এবং হার্স্টের New York Journal এর মধ্যে পরস্পর প্রতিযোগিতা এমন এক অরুচিকর স্তরে পৌঁছে যায় যে, সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতার পরিবর্তে পত্রিকার বাহ্যিক সৌন্দর্য ও পাঠকদের উত্তেজনা দানই মালিকদ্বয়ের নিকট মূখ্য হয়ে দাঁড়ায় । New York World পত্রিকা সে সময় আট পৃষ্ঠার একটি ক্রমিক সংখ্যা বের করতো। যার চার পৃষ্ঠাই ছিল রঙিন । পুলিৎজারের দেখাদেখি হার্স্টও তার জার্নালে একই পথ অনুসরণ করেন। এক সময় তিনি পুরো চার পৃষ্ঠাই রঙিন করে প্রকাশ করা শুরু করলেন । পুলিৎজারের পত্রিকায় Yellow Kid নামে একটি কমিক সিরিজ প্রকাশিত হতো। সে সিরিজের কার্টুনে অনেকগুলো শিশুর ছবি থাকতো। সবার মাঝখানের শিশুটির ছবি সম্পূর্ণ হলুদ রঙে ছাপা হতো।তাই তাকে ডাকা হতো Yellow Kid. হার্স্ট যখন New York World পত্রিকার অনেককে তার Journal এ ভাগিয়ে আনেন, তাদের সাথে সেই কমিক কার্টুন শিল্পীও চলে আসেন।তিনি যথারীতি New York Journal এ Yellow Kid এর ছবি আঁকা শুরু করেন । New York Journal পত্রিকায় তখন Yellow Kid এর ছবি আঁকার দায়িত্ব পান অন্য এক কার্টুনিস্ট। শুরু হয়ে যায় প্রতিযোগিতা। দুটি পত্রিকারই প্রচার সংখ্যা বেড়ে যায় হু হু করে আর সাংবাদিকতার পরিভাষায় ঢুকে যায় নতুন শব্দ “”হলুদ সাংবাদিকতা বা Yellow Journalism.
__________
Fifth column (পঞ্চম বাহিনী )
ফিফথ কলাম অর্থ বিশ্বাসঘাতক। যখন একটি রাষ্ট্রের নাগরিকদের মধ্যে বিশেষ অংশ রাষ্ট্রীয় স্বার্থ রক্ষা করার পরিবর্তে ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বিদেশী কোন রাষ্ট্রকে নিজ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে গোপনে তথ্য সরবরাহ করে থাকে কিংবা অন্যভাবে সহায়তা করে তখন সেই নাগরিকদের বলা হয় ফিফথ কলাম বা পঞ্চম বাহিনী ।