লোকসাহিত্য
বাংলা সাহিত্যের শেকড় সন্ধানী সাহিত্য লোকসাহিত্য
লোক সাহিত্যের প্রাচীনতম সৃস্টি ছড়া ও ধাঁ ধাঁ. ‘মহুয়া পালা’ বেদের এক অপূর্ব সুন্দরী কন্যা মহুয়ার সাথে বামনকান্দার জমিদার ব্রাহ্মন যুবক নদের চাঁদের প্রনয় কাহিনী নিয়ে রচিত।
মৈয়মনসিংহ গীতিকা
বাংলাদেশ থেকে সংগৃহিত লোক গীতিকা ৩ ভাগে বিভক্ত -নাথ-গীতিকা, মৈয়মনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা
মৈয়মনসিংহ গীতিকার অর্ন্তগত উল্লেখযোগ্য গীতিকাগুলো মহুয়া, চন্দ্রাবতী, কাজল রেখা, দেওয়ানা মদিনা প্রভৃতি।
‘দেওয়ানা মদিনা’ পালাটির রচয়িতা মনসুর বয়াতি।
মৈয়মনসিংহ গীতিকা বিশ্বের ২৩ টি ভাষায় অনুদিত হয়েছে
গীতিকার রচয়িতা ড. দীনেশ চন্দ্র সেন
মৈয়সনসিংহ গীতিকা ১৯২৩ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়
আরো জেনে রাখুন
মধ্যযুগে বাংলা সাহিত্যের মুসলমান কবিগণের সর্বাপেক্ষা উল্লেখ্যযোগ্য অবদান রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান।
মধ্যযুগে ফারসি ভাষা থেকে অনুদিত প্রণয়োপাখ্যানগুলো হল ইউসুফ-জুলেখা, লাইলী-মজনু, গুলে বকাওয়ালী, সয়-ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল, সপ্তপয়কর ইত্যাদি।
মধ্যযুগে হিন্দী ভাষা থেকে অনুদিত প্রণয়োপাখ্যানগুলো হল পদ্মাবতী, সতী ময়না লোরচন্দ্রনী, মধুমালতী, মৃগাবতী ইত্যাদি।
‘গুলে বকাওয়ালী’ রচনা করেন নওয়াজিশ আলী খান।
সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল কাব্যের কাহিনী আরবিয় উপন্যাস বা আলেফ লায়লা।
সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল’ রচনা করেন আলাওল।
সপ্তপয়কর পারস্যর কবি নিজামী গঞ্জভীর সপ্তপয়কর রচনার ভাবানুবাদ।
লাইলী মজনু বাহরাম খান রচনা করেন।
ইউসুফ-জুলেখা শাহ মুহম্মদ সগীর রচনা করেন।
‘ইউসুফ-জুলেখা’ আরো রচনা করেন – আব্দুল হাকিম, গরীবুল্লাহ, গোলাম সাফাতউল্লাহ, সাদেক আলী ও ফকির মুহাম্মদ।
মর্সিয়া সাহিত্য এক ধরনের শোককাব্য। বাংলা সাহিত্যে মর্সিয়া সাহিত্য ধারার প্রথম কবি শেখ ফয়জুল্লাহ এবং তাঁর কাব্যের নাম জয়নবের চৌতিশা।
আধুনিক যুগ
বাংলা সাহিত্যে আঠার শ সাল থেকে আধুনিক যুগের সূত্রপাত। স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের স্বতন্ত্র গৌরব নিয়ে এ যুগের সূত্রপাত। ইংরেজ আগমণের ফলপ্রসূ প্রভাবের সঙ্গে এ যুগের সম্পর্ক জড়িত। ইংরেজী শিক্ষা ও সাহিত্যের সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে এদেশের বুদ্ধিজীবীরা চিন্তায় , কাজে ও
সৃষ্টিতে এক নতুনত্ব অনুভব করেন, তার নাম দেয়া হয় নবজাগৃতি বা রেঁনেসা। আর এই নব জাগৃতিই আধুনিক যুগকে সামাজিক -সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে মধ্যযুগ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে আধুনিক যুগ ধরা হলেও এই যুগের বিশেষ লক্ষণ পূর্ব থেকে কিছুটা পরিস্ফুট
হতে দেখা যায়। ১৭৬০ সালে পরলোকগত মধ্যযুগের শেষ কবি ‘ রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র’ -এর ‘অন্নদামঙ্গল ‘ কাব্য মানবিকতার সুরটি ঝংকৃত হয়ে উঠেছিল।আঠার শতকের দ্বিতীয়ার্ধে রচিত কবিগান, যাত্রা , পাঁচালী প্রভৃতি ক্ষেত্রে মধ্যযুগীয় আলৌকিকতা পরিহার করে অনেকাংশে
বাস্তবধর্মী হয়ে দেখা দিয়েছিল। সাহিত্যেকে জীবন্মূখী করার এই ইঙ্গিতময় মুহূর্তে ইউরোপীয় ভাবধারার প্রত্যক্ষ প্রভাবে বাংলা সাহিত্যে আধুনিক যুগের সূত্রপাত ও গৌরবময় যত্রা। মানবিকতা, ব্যক্তিচেতনা, সমাজচেতনা, জাতীয়তাবোধ, রোমান্টিকতা, মৌলিকতা,মুক্তবুদ্ধি, নাগরিকতা
প্রভৃতি আধুনিকতার বিশেষ কিছু লক্ষণ। বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগের পূর্বে গদ্যরীতির প্রচলন ছিলনা। গদ্যের লিখিত রূপ চিঠিপত্র, দলিল-দস্তাবেজ, বৈষ্ণবকড়চা ও বিদেশি খ্রিস্টান কতৃক লিখিত ধর্ম বিষয়ক গ্রন্থের সঙ্কীর্ণ সীমায় আবদ্ধ ছিল। ১৫৫৫ সালে আসাম রাজাকে লেখা
কোচবিহারের রাজারএকটি পত্রকে বাংলা গদ্যের প্রাচীনতম নিদর্শন বলে মনে করা হয়। বাংলা গদ্যের বিকাশ -এ ‘ শ্রীরামপুর মিশন’ ও ‘ ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ’ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। ব্যক্তিপর্যায়ে ‘উইলিয়াম কেরী’ , ‘মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার’ , ‘রামরাম বসু’, ‘গোলকনাথ
শর্মা’, ‘তারিণীচরণ মিত্র’, ‘ চন্ডীচরণ মুন্সী’, ‘রাজীবলোচন মূখোপাধ্যায়’ প্রথম পর্যায়ে বাংলা গদ্যের চর্চা করে বাংলা গদ্যাএকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এরপর ‘রামমোহন রায়’, ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর’, ‘দেবেন্দ্র নাথ ঠাকুর’, ‘অক্ষয়কুমার দত্ত’, ‘প্যারিচঁদ মিত্র’, ‘কালীপ্রসন্ন সিংহ’ -এর হাত
ধরে ‘ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়’ -এর হাতে এসে বাংলা গদ্য পরিণত রূপ পায়।
রাজা রামমোহন রায় (১৭৭৪-১৮৩৩)
সতীদাহ প্রথা রহিতকরণে তার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। রাজা রামমোহন রায়ের ছদ্মনাম ছিল শিবপ্রসাদ রায়।রামমোহন রায় কর্তৃক ব্রাহ্ম সমাজ প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮২৮ সালে।তার রচিত বাংলা ব্যাকরণের নাম ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’।এটি ইংরেজী ভাষায় লেখা হয়েছিল ১৮২৬ সালে। পরে
১৮৩৩ সালে এর বাংলা অনুবাদ হয়। তিনি ফারসি ভাষার পত্রিকা ‘মিরাতুল আখবার’ সম্পাদনা করেন।রামমোহনের রচিত গ্রন্থগুলো হল- বেদান্ত গ্রন্থ (১৮১৫), বেদান্ত সার (১৮১৫), ভট্টাচার্যের সচিত বিচার (১৮১৭), গোস্বামীর সহিত বিচার (১৮১৮), উপনিষদের অনুবাদ (১৮১৫-১৯),
সহমরণ বিষয়ক ‘প্রবর্তক নিবর্তক সম্বাদ (১৮১৮-১৯)পথ্য প্রদান (১৯২৩)
দীনবন্ধু মিত্র (১৮৩০-১৮৭৩)
দীনবন্ধু মিত্র নাট্যকার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। দীনবন্ধুর উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হল- নীলদর্পণ (১৮৬০)- এটি ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রথম গ্রন্থ, নবীন তপস্বিনী, কমলে কামিনী, লীলাবতী। দীনবন্ধু মিত্রের উল্লেখযোগ্য প্রহসনগুলো হল- সধবার একাদশী, জামাই বারিক, বিয়ে পাগলা বুড়ো।
ভাই গিরিশচন্দ্র সেন (১৮৩৫-১৯১০)
ভাই গিরিশচন্দ্র সেন সর্বপ্রথম কুরআন শরীফের পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ করেন (১৮৮১-৮৬)৯৬ জন সূফীর জীবন কাহিনী নিয়ে ফারসী ভাষার ফরিদুদ্দিন আত্তারের ‘তাজকেরাতুল আওলিয়া’ অবলম্বনে রচনা করেন তাপসমালাভাই গিরিশচন্দ্র সেনের মেৌলিকগ্রন্থ হচ্ছে মহাপুরুষচরিত।
প্রতিটি লেকচারে নতুন নতুন লিখা যুক্ত হচ্ছে, তাই কাঙ্খিত কোন লিখা না পেলে দয়া করে কিছুদিন পর আবার ভিজিট করে দেখবেন।
লিখাতে কিংবা লেকচারে কোন ভুলত্রুটি থাকলে অথবা আপনার কাঙ্খিত লিখা খুঁজে না পেলেইশিখন.কম এর ফ্যানপেইজ অথবা নিচে কমেন্ট কর