বিসিএস প্রিলিমিনারি সাধারণ বিজ্ঞান কাজ, ক্ষমতা ও শক্তি

1 অশ্ব ক্ষমতা = 746 ওয়াট।

শক্তি
Energy
শক্তি ছাড়া কোনো কিছু চলতে বা কাজ করতে পারে না। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য শক্তির প্রয়োজন হয়। প্রতিদিন আমরা যে কাজ করি তা নির্ভর করে আমাদের কতটুকু শক্তি আছে তার উপর। আমরা যে খাবার খাই তা থেকে এ শক্তি পাই। উদ্ভিদের বৃদ্ধির জন্য শক্তি লাগে। কোনো যন্ত্রের কাজ করার জন্য শক্তির প্রয়োজন হয়। কোনো কোনো যন্ত্র বিদ্যুৎ ব্যবহার করে আবার কোনোটা জ্বালানি পুড়িয়ে শক্তি পায়। জ্বালানির মধ্যে শক্তি সঞ্চিত থাকে। শক্তি বলতে আমরা কী বুঝি? শক্তি বলতে কোনো বস্তুর কাজ করার সামর্থ্যকে বুঝে থাকি। যে বস্তু কাজ করতে সমর্থ তার মধ্যেই শক্তি থাকে, যে বস্তু কাজ করতে সমর্থ না তার মধ্যে কোনো শক্তি থাকে না। আমরা যখন বলি কোনো বস্তুর মধ্যে শক্তি নিহিত আছে, তখন আমরা বুঝি বস্তুটি অন্য কিছুর উপর বল প্রয়োগ করতে পারে এবং তার উপর কাজ সম্পাদন করতে পারে। আবার আমরা যখন কোনো বস্তুর উপর কাজ করে থাকি, তখন আমরা তার উপর কাজের সমপরিমাণ শক্তি যোগ করে থাকি।

কোনো বস্তুর কাজ করার সামর্থ্যই হচ্ছে শক্তি। কাজ করা মানে শক্তিকে এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তরিত করা। এর অর্থ হচ্ছে বস্তুটি সর্বমোট যে পরিমাণ কাজ করতে পারে তাই হচ্ছে শক্তি। যেহেতু কোনো বস্তুর শক্তির পরিমাপ করা হয় তার দ্বারা সম্পন্ন কাজের পরিমাণ থেকে, সুতরাং শক্তি ও কাজের পরিমাণ অভিন্ন।
অতএব, কৃত কাজ = ব্যয়িত শক্তি
শক্তির কোনো দিক নেই। কাজেই শক্তি স্কেলার রাশি।
শক্তির একক ও কাজের একক একই এবং তা হলো জুল (J)।

শক্তির বিভিন্ন রূপ : বিভিন্ন প্রকার কাজ করার জন্য আমাদের বিভিন্ন ধরনের শক্তির প্রয়োজন হয়। যেমন পানি গরম করতে হলে তাপ শক্তির প্রয়োজন হয়। একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব থেকে আমরা আলো শক্তি পাই। আমরা যে সংগীত শুনি তার মধ্যে শব্দ শক্তি নিহিত আছে। কোনো বস্তুকে আমাদের সরাতে বা উপরে উঠাতে পেশি শক্তির প্রয়োজন হয়। কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রকে চালাতে হলে বিদ্যুৎ শক্তির প্রয়োজন হয়। তড়িৎ কোষে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে আমরা রাসায়নিক শক্তি পাই। এক টুকরা কাগজ বায়ু শক্তির কারণে উড়ে যায়। যখন পরমাণুসমূহ জোড়া লাগে বা ভাঙে তখন নিউক্লীয় শক্তি নির্গত হয়। শক্তি আছে বলেই জগৎ গতিশীল। শক্তি না থাকলে জগৎ অচল হয়ে পড়বে। আলো শক্তি আছে বলেই আমরা দেখতে পাই, শব্দ শক্তি আছে বলেই আমরা শুনতে পাই। যান্ত্রিক শক্তির বদৌলতে আমরা চলাফেরা করতে পারি। বিদ্যুৎ শক্তির সাহায্যে পাখা ঘুরছে, কলকারখানা চলছে। এ মহাবিশ্বে শক্তি নানারূপে বিরাজ করছে। মোটামুটিভাবে আমরা শক্তির নিন্মোক্ত রূপগুলো পর্যবেক্ষণ করি। যথাঃ যান্ত্রিক শক্তি, তাপ শক্তি, শব্দ শক্তি, আলোক শক্তি, চৌম্বক শক্তি, বিদ্যুৎ শক্তি, রাসায়নিক শক্তি, নিউক্লীয় শক্তি এবং সৌর শক্তি। শক্তির সবচেয়ে সাধারণ রূপ হচ্ছে যান্ত্রিক শক্তি। কোনো বস্তুর অবস্থান বা গতির কারণে তার মধ্যে যে শক্তি নিহিত থাকে তাকে যান্ত্রিক শক্তি বলে। এই অনুচ্ছেদে আমরা যান্ত্রিক শক্তির দুটি ভাগ- গতির কারণে যে শক্তি গতিশক্তি এবং অবস্থানের কারণে যে শক্তি বিভব শক্তি তা নিয়ে আলোচনা করব।

গতিশক্তি : আমরা ক্রিকেট খেলায় দেখতে পাই অনেক সময় ক্রিকেট বল স্টাম্পকে আঘাত করে তাকে উড়িয়ে নিয়ে যায়। কোনো কাচের জানালায় শক্ত কিছু আঘাত করলে কাচ ভেঙে যায়। ঢিল ছুঁড়ে আম বা বরই পাড়া যায়। এ উদাহরণগুলো থেকে দেখা যায় যে, গতিশীল বস্তুর মধ্যে শক্তি থাকে। কোনো গতিশীল বস্তু তার গতির জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য লাভ করে তাকে গতিশক্তি বলে। বস্তুটি জায়গা থেকে সরে গেল কেন? টোকার ফলে কলমটি গতিশীল হলো। এতে তার মধ্যে কাজ করার সামর্থ্য তথা গতিশক্তি জন্মাল। সে জন্য বস্তুকে সরাতে পারল। কোনো স্থির বস্তুতে বেগের সঞ্চার করা আর গতিশীল বস্তুর বেগ বৃদ্ধি করার অর্থ হচ্ছে বস্তুটিতে ত্বরণ সৃষ্টি করা। আর এ জন্য বল প্রয়োগ করতে হবে। ফলে বস্তুর উপর কাজ করা হবে। এতে বস্তুটি কাজ করার সামর্থ্য লাভ করবে এবং এ কাজ বস্তুতে গতিশক্তি হিসেবে জমা থাকবে। সে কারণে সকল সচল বস্তুই গতিশক্তির অধিকারী। বস্তু
স্থিতিতে আসার পূর্বে এ পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করতে পারবে। ধরা যাক, m ভরের একটি স্থির বস্তুর উপর F বল প্রয়োগ করায় বস্তুটি v বেগ প্রাপ্ত হলো। ধরা যাক, এ সময় বস্তুটি বলের দিকে s দূরত্ব অতিক্রম করে। বস্তুটিকে এই বেগ দিতে কৃত কাজই বস্তুর গতিশক্তি।

গতিশক্তি বস্তুর ভরের উপর নির্ভর করে। বস্তুর ভর যত বেশি হয় তার গতিশক্তিও তত বেশি হয়। একই বেগে তোমার দিকে একটি হালকা টেনিস বল আর একটি ভারী ক্রিকেট বল নিক্ষেপ করা হলে ক্রিকেট বল কর্তৃক আঘাত বেশি হবে। গতিশক্তি বেগের উপরও নির্ভর করে। বস্তুর বেগ বেশি হলে তার গতিশক্তিও বেশি হবে। একটি ট্রাক কম বেগে কোনো দেয়ালকে আঘাত করলে যে ক্ষতি হবে তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হবে ঐ ট্রাকটি যদি বেশি বেগে ঐ দেওয়ালকে আঘাত করে।

বিভব শক্তি : ছাদের উপর থেকে এক খণ্ড পাথর বা ইট কোনো বস্তুর উপর পড়লে তাকে চ্যাপ্টা করে ফেলতে পারে বা ভেঙে ফেলতে পারে। পাথর বা ইট যখন ছাদের উপর স্থির ছিল তখন তার মধ্যে শক্তি জমা ছিল। পাথরটি যখন নিচে পড়ে তখন ঐ শক্তি কাজ করে। পাথরটির মধ্যে শক্তি নিহিত ছিল কেননা এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরে ছিল। একটি স্প্রিংকে টান টান করে এর দুই মাথা দুটি বস্তুর সাথে আটকে ছেড়ে দিলে কী হবে? বস্তুদ্বয় ছুটে এসে পরস্পরের সাথে ধাক্কা খাবে। টান টান স্প্রিং যদিও স্থির অবস্থায় ছিল তথাপি তার মধ্যে শক্তি সঞ্চিত ছিল। স্প্রিংটি ছেড়ে দিলে এটি কাজ করতে পারে।
টান টান স্প্রিং -এ শক্তি নিহিত ছিল কেননা এটি বিকৃত অবস্থায় ছিল। স্বাভাবিক অবস্থান থেকে পরিবর্তন করে কোনো বস্তুকে অন্য অবস্থানে বা স্বাভাবিক অবস্থা পরিবর্তন করে অন্য কোনো অবস্থায় আনলে বস্তু কাজ করার যে সামর্থ্য অর্জন করে তাকে বিভব শক্তি বলে।

 

প্রতিটি লেকচারে নতুন নতুন লিখা যুক্ত হচ্ছে, তাই কাঙ্খিত কোন লিখা না পেলে দয়া করে কিছুদিন পর আবার ভিজিট করে দেখবেন।

লিখাতে কিংবা লেকচারে কোন ভুলত্রুটি থাকলে অথবা আপনার কাঙ্খিত লিখা খুঁজে না পেলেইশিখন.কম এর ফ্যানপেইজ অথবা নিচে কমেন্ট কর

মন্তব্য করুন

স্যার, কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি?

Click one of our representatives below

Customer Support
Customer Support

Syeda Nusrat

I am online

I am offline

Technical Support
Technical Support

Ariful Islam Aquib

I am online

I am offline