আর্কিমিডিসের সূত্র
Archemedes’ Law
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে দেখতে পাই যে কোনো কঠিন বস্তুকে পানিতে ডুবালে হাল্কা বলে মনে হয়। এর কারণ ডুবন্ত বস্তুর উপর একটা ঊর্ধ্বমুখী বল বা প্লবতা কাজ করে। খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে গ্রিক দার্শনিক আর্কিমিডিস আবিষ্কার করেন যে, কোনো বস্তুকে স্থির তরল অথবা বায়বীয় পদার্থে আংশিক বা সম্পূর্ণ ডুবালে বস্তুটি কিছু ওজন হারায় বলে মনে হয়। এই হারানো ওজন বস্তুটির দ্বারা অপসারিত তরল বা বায়বীয় পদার্থের ওজনের সমান।
বাংলাদেশে নৌপথে দূর্ঘটনার কারণ:
আমাদের দেশে প্রায়ই নৌ-দূর্ঘটনা ঘটে। একটা নৌযান যখন তৈরি করা হয় তখন তার আকৃতি ও আকার এমন হয় যে পানিতে ভাসালে ডুবন্ত অংশটুকু কর্তৃক অপসারিত পানির ওজন নৌযানের ওজনের সমান। এখন যত যাত্রী উঠবে তত নৌযানটি ভারী হবে এবং পানির মধ্যে ডুবতে থাকবে। ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী উঠলে সেটা ডুবে যাবে। যেহেতু নদীতে স্রোত থাকে, ঢেউ থাকে তাই ধারণক্ষমতার চেয়ে বরং কিছু কম যাত্রী নিয়ে বা আবহাওয়ার সতর্ক সংকেত অনুসরণ করে সতর্ককতার সাথে নৌযান চালানো উচিত। নৌযানের ত্র“টিপূর্ণ নক্সার জন্যও অনেকসময় ভরকেন্দ্র পরিবর্তিত হয়ে দূর্ঘটনা ঘটায়। কখনও অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে নৌযানে উঠা ঠিক নয়।
উচ্চতা ও বায়ুমণ্ডলীয় চাপ
Altitude and atmospheric pressure
বায়ুমণ্ডলীয় চাপ নির্ভর করে বায়ুমণ্ডলের উচ্চতা এবং বায়ুর ঘনত্বের উপর। ভূপৃষ্ঠে অর্থাৎ সমুদ্র সমতলে বায়ুর সাধারণ চাপ হলো 76cm পারদস্তম্ভের চাপের সমান। ভূপৃষ্ঠের সমুদ্র সমতল থেকে যত উপরে উঠা যায় তত বায়ুস্তম্ভের ওজন এবং ঘনত্ব উভয়ই হ্রাস পায়। এজন্য উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বায়ুমন্ডলীয় চাপ কম হয়। এভারেষ্ট পর্বতশৃঙ্গের উপরে বায়ুমণ্ডলীয় চাপ সমুদ্র সমতলের চাপের প্রায় 30%।সেজন্য বেশি উচ্চতায় উঠলে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া কষ্টকর হয়। আবার বেশি উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলীয় চাপের চেয়ে মানুষের রক্তচাপ বেশি থাকে বলে নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে। আজকাল বিমান যখন বেশি উচ্চতার নিম্নচাপ অঞ্চল দিয়ে উড়ে যায় তখন এর অভ্যন্তরে যাত্রীদের সুবিধার্থে স্বাভাবিক চাপ বজায় রাখার ব্যবস্থা করা হয়। ভূপৃষ্ঠ থেকে যত উপরে উঠা যায় তত বায়ুমণ্ডলীতে চাপ কম।
ঘনত্ব
Density
কোনো বস্তু যে জায়গা জুড়ে থাকে তাকে এর আয়তন বলে। সমান আয়তনের এক টুকরা কর্ক আর এক টুকরা লোহা পানিতে ছেড়ে দিলে দেখা যাবে কর্কের টুকরা ভেসে আছে আর লোহার টুকরা ডুবে গেছে।সাধারণভাবে বলা যায় কর্কের চেয়ে লোহার ঘনত্ব বেশি তাই ডুবে গেছে। আসলে আয়তন সমান হলেও যার ঘনত্ব বেশি সেটি ভারী আর যার ঘনত্ব কম সেটি হালকা। কোনো বস্তুর একক আয়তনের ভরকে তার উপাদানের ঘনত্ব বলে। ঘনত্ব পদার্থের একটি সাধারণ ধর্ম। ঘনত্ব বস্তুর উপাদান ও তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল। ঘনত্বকে ρ দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
বায়ু 1.29 kgm-3 পানি(4°Cএ) 1000 kgm-3
কর্ক 250 kgm-3লোহা 7,800 kgm-3
গ্লিসারিন 1260 kgm-3 রূপা 10,500 kgm-3
বরফ 920 kgm-3 সোনা 19,500 kgm-3
মৃত সাগর (Dead sea) এটা জর্ডানে অবস্থিত। লবণ ও অন্যান্য অপদ্রব্য মিশ্রিত থাকার জন্য এই সাগরের পানির ঘনত্ব এত বেশি যে মানুষ সেখানে ডুবে না।
দৈনন্দিন জীবনে ঘনত্বের ব্যবহার:
বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে বেলুন উড়ানো হয়। এই বেলুনের মধ্যে হাইড্রোজেন গ্যাস থাকে। হাইড্রোজেন গ্যাসের ঘনত্ব বায়ুর ঘনত্বের চেয়ে বেশকম। তাই এই গ্যাসভর্তি হালকা বেলুন সহজে উপরের দিকে উঠে যায়। বিদ্যুৎ চলে গেলে আমরা অনেকেই আই.পি.এস ব্যাবহার করে থাকি। এতে বড় ব্যাটারি থাকে। গাড়িতে বা মাইকেও অনুরূপ ব্যাটারি থাকে যাদেরকে সঞ্চয়ী কোষ বলে। এই সকল কোষে ব্যবহৃত সালফিউরিক এসিডের ঘনত্ব 1.5 x 103 kg kgm-3থেকে 1.3 x 103 kg kgm-3 হাইড্রোমিটার দিয়ে মাঝে মাঝে ঘনত্ব
মেপে দেখতে হয়। ঘনত্ব বেশি হলে কোষটা নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য মাঝে মধ্যে প্রয়োজনীয় পানি দিয়ে ঘনত্ব ঠিক রাখতে হয়। ভালো ডিম পানিতে ডুবে যায় কিন্তু পচা ডিম পানিতে ভাসে। পচা ডিমের ঘনত্ব পানির চেয়ে কম বলে তা ভাসে।
এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।