চর্যার কবিঃ
আবিষ্কৃত পুঁথিটিতে ৫১টি চর্যায় মোট ২৪ জন সিদ্ধাচার্যের নাম পাওয়া যায়।
এঁরা হলেন: লুই, কুক্কুরী, বিরুআ, গুণ্ডরী, চাটিল, ভুসুকু, কাহ্ন, কাম্বলাম্বর, ডোম্বী, শান্তি, মহিত্তা, বীণা, সরহ, শবর, আজদেব, ঢেণ্ঢণ, দারিক, ভাদে, তাড়ক, কঙ্কণ, জঅনন্দি, ধাম, তান্তী পা, লাড়ীডোম্বী। চর্যার পদকর্তাগণের নামের শেষে সন্মানসূচক পা যোগ করা হয়
যেমনঃলুইপা,শবরপা ইত্যাদি।
চর্যাপদের আদি কবি বা সিদ্ধাচার্য হিসেবে ধরা হয় লুইপাকে।কিন্তু ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন শবরপা ছিলেন লুইপার গুরু তাই চর্যার প্রাচীন কবি শবরপা-ই হবেন। এই পুঁথিতে লাড়ী ডোম্বীপার কোন পদ পাওয়া যায় নি তাই তাকে চর্যাপদের নামে মাত্র কবি বলা হয়।
একমাত্র অনুমিত মহিলা কবি বলা হয় কুক্কুরীপাকে।
চর্যাপদে কবির সংখ্যাঃ
চর্যাপদে মোট ২৪জন কবি পাওয়া যায়
১ জন কবির পদ পাওয়া যায়নি তার নাম – তন্ত্রীপা / তেনতরীপা
সেই হিসেবে পদ প্রাপ্ত কবির মোট সংখ্যা ২৩ জন
উল্লেখযোগ্য কবিঃ
১. লুইপা ২. কাহ্নপা ৩. ভুসুকপা ৪. সরহপা ৫. শবরীপা ৬. লাড়ীডোম্বীপা ৭. বিরূপা
৮. কুম্বলাম্বরপা ৯. ঢেন্ডনপা ১০. কুক্কুরীপা ১১. কঙ্ককপা
কবিদের নাম শেষে পা দেওয়ার কারণঃ
পদ > পাদ > পা
পাদ > পদ > পা
পদ রচনা করেন যিনি তাদেরকে পদকর্তা বলা হত যার অর্থ সিদ্ধাচার্য / সাধক [এরা বৌদ্ধ সহজিয়া ধর্মের সাধক ছিলেন]
২ টি কারণে নাম শেষে পা দেওয়া হতঃ
১. পদ রচনা করতেন
২. সম্মান / গৌরবসূচক কারনে
লুইপাঃ
১. চর্যাপদের আদিকবি
২. রচিত পদের সংখ্যা ২ টি
কাহ্নপাঃ
১. কাহ্নপার রচিত মোট পদের সংখ্যা ১৩ টি –তিনি সবচেয়ে বেশী পদ রচয়ীতা
২. উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে ১২ টি
৩. তার রচিত ২৪ নং পদটি পাওয়া যায়নি
ভুসুকপাঃ
১. পদসংখ্যার রচনার দিক দিয়ে ২য়
২. রচিত পদের সংখ্যা ৮টি
৩. তিনি নিজেকে বাঙ্গালী কবি বলে দাবী করেছেন
৪. তার বিখ্যাত কাব্যঃ অপনা মাংসে হরিণা বৈরী অর্থ – হরিণ নিজেই নিজের শত্রু
সরহপাঃ
১. রচিত পদের সংখ্যা ৪ টি
শবরীপাঃ
১. রচিত পদের সংখ্যা ২ টি
২. গবেষকগণ তাকে বাঙ্গালী কবি হিসেবে চিহ্নিত করেছেন
৩. বাংলার অঞ্চলে ভাগীরথী নদীর তীরে বসবাস করতেন বলে ধারণা করা হয়। যদি তিনি ভাগীরথী নদীর তীরে বসবাস না করতেন তাহলে বাঙ্গালী কবি হবেন না।
কুক্কুরীপাঃ
১. রচিত পদের সংখ্যা ২ টি
২. তার রচনায় মেয়েলী ভাব থাকার কারণে গবেষকগণ তাকে মহিলা কবি হিসেবে সনাক্ত করেন।
তন্ত্রীপাঃ
১. উনার রচিত পদটি পাওয়া যায় নি।
২. উনার রচিত পদটি ২৫ নং পদ।
ঢেন্ডনপাঃ
চর্যাপদে আছে যে বেদে দলের কথা, ঘাঁটের কথা, মাদল বাজিয়ে বিয়ে করতে যাবার উৎসব, নব বধুর নাকের নথ ও কানের দুল চোরের চুরি করার কথা সর্বোপরি ভাতের অভাবের কথা
ঢেন্ডনপা রচিত পদে তৎকালীন সমাজপদ রচিত হয়েছে। তিনি পেশায় তাঁতি
টালত মোর ঘর নাই পড়বেশী
হাঁড়িতে ভাত নাই নিতি আবেশী
[আবেশী কথাটার ২টি অর্থ রয়েছে
ক্ল্যাসিক অর্থে – উপোস এবং রোমান্টিক অর্থে – বন্ধু]
এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।