সাহিত্যমানঃ
চর্যাপদের প্রথম পদ __” কা আ তরুবর পঞ্চ বি ডাল”
শবরপার একটি পদে দেখা যায় নরনারীর প্রেমের এক অপূর্ব চিত্রণ-
উঁচা উঁচা পাবত তঁহি বসই সবরী বালী।
মোরঙ্গি পীচ্ছ পরহিণ সবরী গীবত গুঞ্জরী মালী।।
উমত সবরো পাগল শবরো মা কর গুলী গুহাডা তোহৌরি।
ণিঅ ঘরণী ণামে সহজ সুন্দারী।।
ণাণা তরুবর মৌলিল রে গঅণত লাগেলি ডালী।
একেলী সবরী এ বণ হিণ্ডই কর্ণ কুণ্ডলবজ্রধারী।।
(পদ ২৮, অর্থাৎ- উঁচু পর্বতে শবরী বালিকা বাস করে। তার মাথায় ময়ূরপুচ্ছ, গলায় গুঞ্জামালিকা। নানা তরু মুকুলিত হলো। তাদের শাখা-প্রশাখা আকাশে বিস্তৃত হলো। শবর-শবরীর প্রেমে পাগল হলো। কামনার রঙে তাদের হৃদয় রঙিন ও উদ্দাম। শয্যা পাতা হলো। শবর-শবরী প্রেমাবেশে রাত্রিযাপন করলো।)
আবার সমাজ ও মানুষের প্রতি অকৃত্রিম দরদও আধুনিক পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ঢেণ্ঢণের পদে দেখা যায়– “টালত মোর ঘর নাহি পরবেষী। / হাড়ীত ভাত নাঁহি নিতি আবেশী।” (পদ ৩৩, অর্থাৎ- টিলার উপর আমার ঘর, কোনও প্রতিবেশী নেই। হাঁড়িতেও ভাত নেই, তবু নিত্য অতিথি আসে।)
কোনও কোনও পদে নিছক দর্শনকথা অসামান্য চিত্ররূপের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে।
চাটিল লিখছেন– “ভবণই গহণগম্ভীরা বেগেঁ বাহী। দুআন্তে চিখিল মাঝেঁ ন ঠাহী।” (পদ ৫, অর্থাৎ- ভবনদী গহন ও গম্ভীর অর্থাৎ প্রবল বেগে প্রবহমান। তার দুইতীর কর্দমাক্ত ও পিচ্ছিল।)
আবার কখনও বা তত্ত্বের ব্যাখ্যায় যে প্রহেলিকার অবতারণা করা হয়েছে, সেগুলিও অসামান্য সাহিত্যগুণমণ্ডিত হয়ে উঠেছে। যেমন: কুক্কুরীপাদ লিখেছেন– “দুলি দুহি পিটা ধরণ ন জাই। / রুখের তেন্তুলি কুম্ভীরে খাঅ।।” (পদ ২, অর্থাৎ- মাদী কাছিম দোহন করে দুধ পাত্রে রাখা যাচ্ছে
না। গাছের তেঁতুল কুমিরে খাচ্ছে।)
আবার চর্যায় মোট ৬টি প্রবাদ বাক্য পাওয়া যায়। যেমন___ “ আপনা মাংসে হরিণা বৈরি”
এই লেকচারের পরের পেইজে যেতে নিচের …. তে ক্লিক কর।