গ্রাফিক ডিজাইন কি?
মুলত গ্রাফ শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। গ্রাফ শব্দের অর্থ রেখা বা ছক। গ্রাফ শব্দ থেকে গ্রাফিক শব্দটি এসেছে। তাই গ্রাফিক শব্দের অর্থ অঙ্কন। আর ডিজাইন আমরা সবাই জানি নকশা। সুতরাং গ্রাফিক ডিজাইন শব্দের অর্থ নকশা অঙ্কন।
কোন নকশাকে গ্রাফ বা রেখা দ্বারা পরিক্লপিতভাবে অঙ্কন করাকেই গ্রাফিক ডিয়াজাইন বলে।গ্রাফিক ডিজাইনকে আর্টও বলা যায়।গ্রাফিক ডিজাইনের পরিসর অনেক বিশাল।যদিও মানুষ গ্রাফিক ডিজাইন বলতে বিসনেস কার্ড ডিজাইন,ফটোশপ,ইলাস্ট্রেটর,লগো ডিজাইন মনে করে।কিন্তু এইসব কাজের মধ্যেই গ্রাফিক ডিজাইন সীমাবদ্ধ নয়।এর পরিসর বিশাল বিধায় গ্রাফিক ডিজাইনের চাহিদাও অনেক বেশি।
আরো দেখুন:গ্রাফিক ডিজাইন করে কিভাবে আয় করবেন?
গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখার পরে কাজের ক্ষেত্র-
ইন্টার্যাক্টিভ মিডিয়া:কয়জন গ্রাফিক্স ডিজাইনার তার কাজের সঠিক মূল্যায়ন ও ভাগ্যকে পরিবর্তন করার যে ক্ষেত্রটি পান সেটি হলো ইন্টার্যাক্টিভ মিডিয়া। এখানে বিশেষত টেক্সট, গ্রাফিক্স, ভিডিও, অ্যানিমেশন, অডিওসহ যেকেনো কিছু এবং এ সম্পর্কিত সব কিছুই নিয়ে কাজ হয়। আমার মতে ইন্টার্যাক্টিভ মিডিয়া হলো তেমনই একটি ভালো নিশ যেখানে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার তার কাজকে প্রস্ফুটিত করতে পারেন।
প্রমোশনাল ডিসপ্লে:সাধারণত যারা বড় ধরনের বা বড় আকারের কাজ করতে চান বা কঠোর পরিশ্রম করতে পারবেন তাদের জন্য এটি একটি ভালো মাধ্যম। এ কাজগুলো মূলত বিভিণœ অ্যাডমিডিয়াতে পাওয়া যায়। এখানে একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারকে বিভিন্ন ধরণের বিলবোর্ড ডিজাইন এবং একই ধরণের প্রোমোশনার ডিসপ্লে ডিজাইন নিয়ে কাজ করতে হয়।
আরো দেখুন:পেশা হিসেবে গ্রাফিক ডিজাইন
জার্নাল:বিভিন্ন ধরণের জার্নালগুলো (বিষয়ভিত্তিক বা ব্যাঙ্গাত্বক) ক্রিয়েটিভ গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এখানে সাধারণত পাঠককে আকৃষ্ট করার কাজটি করতে হয়। এখানে আপনাকে ছোটখাটো লোগো, ইমোটিকন থেকে শুরু করে কমপ্লিট কাভার ডিজাইন করতে হতে পারে।
কর্পোরেট রিপোর্টস:এটি রেগুলার জব না হলেও কম নয়! একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার বিভিন্ন কোম্পানির কর্পোরেট রিপোর্ট তৈরি করে ভালোমানের আয় করতে পারেন। এটা অনেকটাই প্রফেশনাল কিন্তু মোটেই বোরিং কাজ নয়। কাজের মধ্যে অনেক স্বাচ্ছদ্য বোধ করা যায়।
মার্কেটিং ব্রোশিউর:এটিও অনেকটাই প্রোমোশনাল ডিসপ্লের কাজের মতো। এখানে আপনাকে বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য বা সেবা নিয়ে ডিজাইনের কাজটি করতে হবে। একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার ছাড়া যেহেতু কাজটি সম্ভব নয়, তাই এখানেও আপনার কাজের ক্ষেত্রটি হতে পারে।
সংবাদপত্র:গ্রাফিক ডিজাইনার ছাড়া সংবাদপত্র! মোটেই সম্ভব নয়। একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার একটি সংবাদপত্রকে ঠিকই সংবাদপত্রেরই মতো করে তোলেন। ফাইনাল লেআউট দেওয়ার জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনার অবশ্যই জরুরী। এখানে আপনার পেশার সন্মানটাও বেশি। তাই সংবাদপত্র একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের জন্য একটি সাফল্যজনক কাজের ক্ষেত্র।
ম্যাগাজিন: এটাও মূলত সংবাদপত্র ও জার্নালের মতো। তবে ম্যাগাজিনে গ্রাফিক্স ডিজাইনারের কাজের পরিমান অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি। কারণ ম্যাগাজিনে ভিজ্যুয়াল লেআউট বেশি থাকে। তাই ম্যাগাজিনের প্রত্যেকটা প্রকাশনার জন্য গ্রাফিক্স ডিজাইনার, অবশ্যই আবশ্যক। এটাও আপনার যথোপযুক্ত কাজের ক্ষেত্র হতে পারে।
লোগো ডিজাইন: একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ হলো লোগো ডিজাইন। এক্ষেত্রে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করতে বেশি সময় লাগে না। আপনার ক্রিয়েটিভিই হলো লোগো ডিজাইনের মূল কথা। প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই তার প্রতিষ্ঠানের লোগো তৈরির জন্য একজন ফ্রিল্যান্স লোগো ডিজাইনার অর্থাৎ গ্রাফিক্স ডিজাইনারে খোঁজ করেন। তাই আপনি সহজেই কাজ পাবেন এবং ভালো করতে পারলে তাদেরকেই আপনার রেগুলার বায়ার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট ডিজাইন:সবশেষে বললেও একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের জন্য সবচেয়ে বেশি কাজের ক্ষেত্র ওয়েবসাইট ডিজাইন। লোকাল মার্কেট বা অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেটাই বলি না কেনো প্রতিনিয়ত ওয়েব ডিজাইনের কাজের পরিমাণ বাড়ছে। তাই ওয়েবসাইট ডিজাইন করেও আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনার পেশাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন নিদ্দিষ্ট লক্ষ্যে।
আরো দেখুন:গ্রাফিক ডিজাইন কি?
গ্রাফিক ডিজাইন এর শুরুতে যা জানতে হবে –
গ্রাফিক ডিজাইন এর মাধ্যমে বর্তমানে যেসব চিত্রকর্ম তৈরি হয় সেগুলো মুলত ছাপার জন্য হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে প্রযুক্তির প্রয়োজনে গ্রাফিক ডিজাইন শুধুমাত্র ছাপার গন্ডি পেরিয়ে বহুদূর চলে যাচ্ছে। গ্রাফিক ডিজাইন এর একান্তই অন্তর্ভুক্ত বিষয় গুলি হচ্ছে – ডিজিটাল সাইন, ক্যালেন্ডার, টাইপোগ্রাফি, ব্রোশিয়োর, ওয়েব সাইট ডিজাইন ইত্যাদি ।
আরেকটি শব্দের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া দরকার আর সেটা হলো ডেস্কটপ পাবলিশিং।
একটি কথা মাথায় রাখতে হবে ডেস্কটপ পাবলিশিং এবং গ্রাফিক ডিজাইন হাতে হাত রেখে চলে। সংক্ষেপে যদি বলা হয়, ডেস্কটপ পাবলিশিং হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে কম্পিউটার এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করে মুদ্রণ, ওয়েব, পুস্তিকা, বই, বিসনেস কার্ড, ওয়েব পেজ হিসাবে মোবাইল ডিভাইসের জন্য ফরম্যাট,নথি উত্পাদন, গ্রিটিং কার্ড, ইত্যাদি তৈরি করা হয়।
পেশা হিসেবে গ্রাফিক ডিজাইনের চাহিদা-
বর্তমানে সারা বিশ্বে গ্রাফিক ডিজাইনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যারা গ্রাফিক কাজ পারে, তারা এটাকে পেশা হিসাবে নিতে পারেন। কারণ এ কাজে পারদর্শীদের জন্য রয়েছে বহুমুখী প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ।এছারাও বাসায় বসেই আপনার ইচ্ছামত কাজ করতে পারেন। এডভারটাইজিং এজেন্সি, টিভি চ্যানেল, প্রি-প্রেস, প্রেস ও কর্পোরেট হাউজেও কাজ পেতে পারেন। জুনিয়র ভিজুয়ালাইজার/ডিজাইনার, সিনিয়র ভিজুয়ালাইজার/ডিজাইনার, আর্ট ডাইরেকটর, ক্রিয়েটিভ ডিরেকটর ইত্যাদি পেশায় কাজ করতে পারে।
এছাড়া বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজসহ প্রায় সকল ধরনের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেই এখন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের চাহিদা ব্যাপক। আর অনলাইন মার্কেট প্লেসে সবচেয়ে চাহিদাসম্পন্ন কাজের মধ্যে গ্রাফিক্স ডিজাইন অন্যতম। সুতরাং একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও সম্ভাবনাময় পেশা।
আরো দেখুন:গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখার পরে আপনার কাজের ক্ষেত্র
কোর্স শেষে আয়ের ক্ষেত্রসমূহ-
- এনভাটো মার্কেকে ডিজাইন বিক্রি।
- গ্রাফিক ডিজাইন হিসেবে যেকোন আইটি কম্পানিতে চাকরি
- আপওয়ার্ক ও ফাইবারে গ্রাফিক ডিজাইন সর্ম্পকিত কাজ
কোথা থেকে শিখবেন গ্রাফিক্স ডিজাইন-
গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখানোর জন্য আজকাল অনেক ধরণের প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো ইশিখন.কম। ইশিখনে দীর্ঘদিন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও অনলাইন মার্কেটপ্লেসে কাজ করা দক্ষ ও প্রফেশনাল টিচারদের রাখা হয়েছে, ইশিখনে কোর্স করলে যারা হবে আপনার শিক্ষক। এর বাইরে ইশিখন অনলাইন লাইভ কোর্সের অন্যান্য সুবিধা দিয়ে থাকে।
আরো দেখুন:গ্রাফিক্স ডিজাইন পূর্ণাঙ্গ গাইডলাইন
ইশিখনে গ্রাফিক ডিজাইন শিখার বিশেষ সুবিধা-
- লাইভ ক্লাস মিস করলে পরের দিন কোর্সের ভেতর উক্ত ক্লাসের ভিডিও রেকর্ডিং ও আলোচিত ফাইল সমুহ পাবেন।
- লাইভ ক্লাসের সম্পূর্ণ ফ্রি ভিডিও কোর্স, ( শুধুমাত্র এই ভিডিও কোর্সই অনেক প্রতিষ্ঠান হাজার হাজার টাকায় বিক্রি করে।)
- প্রতিটি ক্লাস শেষে এসাইনমেন্ট জমা দেওয়া। (প্রতিটি এসাইনমেন্ট এর জন্য ১০ মার্ক)
- প্রতিটি ক্লাসের লাইভ ক্লাসের পাশাপাশি প্রাকটিজ ফাইল পাবেন এবং কনটেন্ট পাবেন।
- প্রতিটি ক্লাসের প্রথম ১৫ মিনিট আগের ক্লাসের সমস্যাগুলো সমাধান হবে, পরের ১ ঘন্টা মুল ক্লাস শেষ ১৫ মিনিট প্রশ্নোত্তর পর্ব
- প্রতিটি ক্লাসের শেষে ১০ নাম্বারের মডেল টেস্ট। এই মডেল টেস্ট মার্ক এবং এসাইমেন্ট মার্ক ও নিয়মিত উপস্থিতির উপর ভিত্তি করেই পরবর্তীতে আপনার সার্টিফিকেট এর মান নির্ধারণ হবে।
- কোর্স শেষে সার্টিফিকেট
- লাইভ ক্লাস সমুহের ডিভিডি ।
0 responses on "গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখার পরে আপনার কাজের ক্ষেত্র"