NTRCA শিক্ষক নিবন্ধন – গণিত – রেখা, কোণ ও ত্রিভুজ
সমতলীয় জ্যামিতির ভাষায় তিন বাহু দ্বারা সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রকে “ত্রিভুজ” বলা হয়। ত্রিভুজের তিনটি কোণের সমষ্টি ১৮০ ° বা দুই সমকোণ।
ত্রিভুজ গঠনের প্রথম শর্ত হল এর যে কোন দুই বাহুর সমষ্টি তৃতীয় বহু অপেক্ষা বৃহত্তর হবে। যেমন: ২ সেমি ,৩ সেমি এবং ৪ সেমি দিয়ে একটি ত্রিভুজ গঠিত হবে কিন্তু ২ সেমি ,৩ সেমি এবং ৫ সেমি দিয়ে একটি ত্রিভুজ গঠিত হবে না।
বাহুর দৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে ত্রিভুজ তিন প্রকারের হতে পারে। যথা:–
সমবাহু ত্রিভুজ – যার তিনটি বাহুরই দৈর্ঘ্য সমান। সমবাহু ত্রিভুজের ক্ষেত্রে প্রতিটি কোণের মান 60° হয়।
সমদ্বিবাহু ত্রিভুজ – যার যে-কোন দুইটি বাহুর দৈর্ঘ্য সমান। সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের শীর্ষকোণ 90° হলে অন্য সমান দুইটি বিপরীত কোণ 45° করে হবে।
বিষমবাহু ত্রিভুজ – যার তিনটি বাহুর দৈর্ঘ্য তিন রকম। বিষমবাহু ত্রিভুজের তিনটি কোণ-ই পরস্পরের সঙ্গে অসমান হয়।
কোণের ভিত্তিতে ত্রিভুজ তিন প্রকার হতে পারে –
সমকোণী ত্রিভুজ – যার যেকোন একটি কোণ ১ সমকোণ বা ৯০° এর সমান।
সূক্ষ্ণকোণী ত্রিভুজ – যার তিনটি কোণই সূক্ষ্ণকোণ।
স্থূলকোণী ত্রিভুজ – যার যেকোন একটি কোণ স্থূলকোণ।
ত্রিভুজটির পরিসীমা = ত্রিভুজের তিন বাহুর দৈর্ঘ্যের যোগফল = a + b + c
ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল পরিমাপের সূত্র হল:
A = ½bh, যেখানে b হল ত্রিভুজের যে কোন একটি বাহুর দৈর্ঘ্য (ভূমি), h হল উচ্চতা
কিন্তু সব সময় উচ্চতা নাও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল বের করার জন্য সূত্র হল:
A = sqrt {s(s-a)(s-b)(s-c)}
যেখানে s = ½ (a + b + c) হচ্ছে অর্ধ-পরিসীমা।
এই সূত্র অনুযায়ী-
সমবাহু ত্রিভূজের ক্ষেত্রফল =√3/4 a² যেখানে, a = যে কোন বাহুর দৈর্ঘ্য
সমদ্বিবাহু ত্রিভূজের ক্ষেত্রফল = a/4√(4b² -a²) যেখানে, a= ভূমি; b= অন্য বাহু
পীথাগোরাসের উপপাদ্য শুধুমাত্র সমকোণী ত্রিভুজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পীথাগোরাসের উপপাদ্য হল,
(অতিভুজ)২ = (ভূমি)২ + (লম্ব)২
এই সূত্র অনুযায়ী সমকোণী ত্রিভুজের বাহুর কয়েকটি combination পাওয়া যায়। যেমন:
i )৩,৪,৫ এবং এর গুনিতক -> ৬,৮,১০এবং ১২, ১৬, ২০
ii) ৫, ১২ , ১৩
ত্রিভূজের ক্ষেত্রফল–
সাধারণ ত্রিভূজের ক্ষেত্রফল =১/২(ভূমি×উচ্চতা)
সমকোণী ত্রিভূজের ক্ষেত্রফল =১/২(সমকোণ সংলগ্ন বাহুদ্বয়ের গুণফল)
সমদ্বিবাহু ত্রিভূজের ক্ষেত্রফল = a/4√(4b² -a²) যেখানে, a= ভূমি; b= অন্য বাহু
সমবাহু ত্রিভূজের ক্ষেত্রফল =√3/4 a² যেখানে, a = যে কোন বাহুর দৈর্ঘ্য
উদাহরণ-১ঃ
একটি সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল কত হবে, যেখানে উহার সমান সমান বাহুদ্বয়ের দৈর্ঘ্য ৫০ সে মি ও ভূমি ৬০ সে মি?
সমাধানঃ
এখানে, a = ভূমি (৬০); b সমান বাহু (৫০)
সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল = a/4 √(4b2-a2)
= 60/40 √{4(50)2 – (60)2}
=15 √(4×2500 – 3600)
= 15×√(10000 – 3600)
= 15×√6400
= 15×80 =1200
ক্ষেত্রফল = 1200 বর্গ সে মি
উদাহরণ-২ঃ
একটি সমবাহু ত্রিভুজের এক বাহুর দৈর্ঘ্য ১০ সে. মি. হলে, তার ক্ষেত্রফল কত বর্গ সে. মি.?
সমাধানঃ
সমবাহু ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল = (√3/4)a2
এখানে, a= 10 সেঃ মিঃ
ক্ষেত্রফল = √3/4(10)2 = √3/4×100
=25√3 বঃ সেঃ মিঃ
উদাহরণ-৩ঃ
সমকোণী ত্রিভুজের একটি কোণ 60° হলে অন্য কোণটি কত?
সমাধানঃ
ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি = 180০
সমকোণী ত্রিভুজের অন্য কোণ = 180০-(সমকোণ + 600)
= 1800-(900+600)
= 300
উদাহরণ-৪ঃ
একটি ত্রিভুজের তিনটি কোণের অনুপাত ২:৩:৪ হলে, বৃহত্তম । কোণের পরিমাণ কত?
সমাধানঃ
আমরা জানি, ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি ১৮০°
ধরি, ত্রিভুজের তিনটি কোণ ২ ৩ক এবং ৪ক
২ক+৩ক+৪ক=১৮০°
বা, ৯ক=১৮০°
ক=২০°
বৃহত্তম কোণের পরিমাণ=৪ক =৪×২০°=৮০°
উদাহরণ-৫ঃ
একটি সমকোণী ত্রিভুজের ভূমি ৮ ফুট এবং লম্ব ৬ ফুট হলে অতিভুজের দৈর্ঘ্য কত?
সমাধানঃ
সমকোণী ত্রিভুজের ক্ষেত্রে , (ভূমি)২+(লম্ব)২= (অতিভুজ)২
(অতিভুজ)২=(৮)২+(৬)২
(অতিভুজ)২ = (১০)২
সুতরাং , অতিভুজ =১০
উদাহরণ-৬ঃ
একটি সমদ্বিবাহু ত্রিভুজের ভূমি ১৬ মিঃ এবং অন্য দুটি বাহুর প্রতিটি ১০ মিঃ হলে ত্রিভুজটির ক্ষেত্রফল কত?
সমাধানঃ
ত্রিভুজের বাহু তিনটির সমষ্টি = ১০+১০+১৬ =৩৬
সুতরাং , s= ৩৬/২ = ১৮
ক্ষেত্রফল = √s(s-a)(s-b)(s-c)= √১৮ (১৮-১০)(১৮-১০)(১৮-১৬)=√২০৩৪ =৪৮
প্রতিটি লেকচারে নতুন নতুন লিখা যুক্ত হচ্ছে, তাই কাঙ্খিত কোন লিখা না পেলে দয়া করে কিছুদিন পর আবার ভিজিট করে দেখবেন।
লিখাতে কিংবা লেকচারে কোন ভুলত্রুটি থাকলে অথবা আপনার কাঙ্খিত লিখা খুঁজে না পেলেইশিখন.কম এর ফ্যানপেইজ অথবা নিচে কমেন্ট কর