
কাজপাগল” বলে একটি কথা সমাজে প্রচলিত আছে। এর অর্থ হল যিনি সারাক্ষণ কাজের মধ্যে থাকেন, কাজের কথা চিন্তা করেন, অধিকাংশ সময় কাজের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে পিছপা হন না, ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করেও ক্লান্ত হন না। এইরকম মানুষদেরকে ওয়ার্কোহলিক বা কাজ পাগল বলা হয়। সময়ের চাহিদায় সবাইকে অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। আপনি যদি আপনার কাজের স্থানে শতভাগ সময়, পরিশ্রম না দেন তবে সাফল্য আপনার কাছ অধরা থেকে যাবে। আবার সাফাল্য ধরতে গিয়ে অতিরিক্ত পরিশ্রম করে ফেলাও ঠিক নয়। সাফল্যের পিছনে ছুটতে ছুটতে একসময় দেখবেন কাজ ছাড়া আপনার জীবনে আর কিছু নেই। কাজপাগল বা ওয়ার্কোহলিক হওয়ার শারীরিক ও মানসিক কিছু নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। এমন কিছু নেতিবাচক প্রভাবের কথা জানতে পাওয়া যায় boldsky, lifestyle থেকে।
১। অবসাদ
এক জরিপে দেখা গিয়েছে, যারা অতিরিক্ত কাজ করেন তারা এক সময়ে গিয়ে সাফল্যের প্রতিযোগিতায় অন্য সবার থেকে পিছিয়ে যান। অনেক ক্ষেত্রে তারা একটা সময় গিয়ে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তারা উপলব্ধি করেন কাজ ছাড়া তাদের জীবনে আর কিছু নেই, আর এটি তাদেরকে হতাশার দিকে ঠেলে দেয়।
২। দীর্ঘসময় কাজ
বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ কাজ অফিস কেন্দ্রিক। সারাক্ষণ অফিসে বসে কাজ করতে হয়। আর এটি আপানর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এক সমীক্ষায় প্রমান পাওয়া গেছে যে বসে কাজ করা ধুমাপানের মত শরীরের ক্ষতি করে থাকে। ঘাড় ব্যথা, পিঠ ব্যথা, শক্ত হয়ে যাওয়া বা রক্ত জমাট হয়ে যাওয়ার মত রোগ দেখা দিতে পারে।
৩। দ্রুত বয়সের ছাপ পড়ে যায়
যারা নিজেদের জীবনের বিভিন্ন মুহুর্ত উপভোগ করেন আনন্দে জীবন কাটান তাদের তুলনায় যারা অত্যধিক কাজ করেন তাদের ত্বকে দ্রুত বয়সের ছাপ পড়ে যায়।
৪। হৃদরোগে আক্রান্ত
কাজপাগল মানুষদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কারণ জীবনযাপন পদ্ধতির ধরণ তার উপর প্রতিযোগিতা, সারাক্ষণ উত্তেজনা, উৎকন্ঠার মধ্যে কাজ করা, খাবারে অনিয়ম বিভিন্ন কারণে তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৫। চোখের ক্ষতি
অতিরিক্ত কাজ করলে, ঘন্টার পর ঘন্টা কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে কাজ করলে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর থেকে চোখের নানা সমস্যা শুরু হয়। চোখে স্থায়ীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে।
৬। সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া
জরিপে দেখা গিয়েছে কাজপাগল পুরুষদের একটি বিশাল অংশই নিজেদের সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে পড়েন। যেটি সম্পর্কের ইতি টানে। কাজের কারণে সময় দেওয়া সম্ভব হয় না। যেটি আপনার সঙ্গী মেনে নিতে নাও পারে। আর এর ফলশ্রুতিতে বিচ্ছেদ ঘটে থাকে।
৭। মস্তিষ্কের ক্ষতি
এটা সত্যি কথা যে আপনি যদি নিয়মিতভাবে আপনার মস্তিষ্ককে কাজে লাগান তাহলে আপনার বুদ্ধি ক্ষুরধার হয়। কিন্তু ঠিকমতো কাজ করার জন্য মস্তিষ্কের বিশ্রামেরও প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু আপনার অত্যধিক কাজের ফলে মস্তিষ্ক বিশ্রামের সময় পাচ্ছে না, তার উপর অত্যধিক চাপ পড়তে পড়তে মস্তিষ্কের কাজের ক্ষমতাও কমে যায়।